নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ২৪ মে, ২০২৪। ভারতরত্ন সত্যজিৎ রায় কে বিষয় স্থির করে ‘শুধুই সত্যজিৎ’ শিরোনামে কলকাতার রাশিয়ান সংস্কৃতিক কেন্দ্র গোর্কি সদনে, গত বৃহস্পতিবার ১৬ থেকে ১৮ ই মে শনিবার ২০২৪ পর্যন্ত বিকেল ৪ থেকে ৭টা পর্যন্ত একটি অনন্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। ২০১৬ সাল থেকে ‘কলকাতা কথকতা’ নামের একটি হোয়াটসঅ্যাপ দল নিয়মিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করে চলেছে। এই দলে কলকাতার বিশিষ্ট সংগ্রাহক, গবেষক, লেখকরা বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে নিরন্তর চর্চা করে চলেছেন। আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাব ও কলকাতা কথকতা -র যৌথ উদ্যোগে এবারের সত্যজিৎ রায় সংক্রান্ত এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হল।বিশেষ সহযোগিতায় ছিল ‘সোসাইটি ফর দি প্রিসারভেশন অফ সত্যজিৎ রায় আর্কাইভস’ গত ১৬ ই মে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক সন্দীপ রায় এই প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন করেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অলকনন্দা ব্যানার্জী, পৌলমী বসু, মানসী রায় চৌধুরী, দেবাশীষ দেব, ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, সুধাংশুশেখর দে, মানসী রায়চৌধুরী, অরুণ চক্রবর্তী, অসিত পোদ্দার, সাত্যকি ঘোষ , কৌশিক মৈত্র, সৌম্য দাশগুপ্ত, পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন আরও বিশিষ্ট জনেরা।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন কলকাতার বিশিষ্ট সংগ্রাহক অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়, ঋদ্ধি গোস্বামী, অনিন্দ্য কর, ফাল্গুনী দত্ত রায়, উৎপল সান্যাল, জয়ন্ত ঘোষ, মলয় সরকার, সৌভিক মুখোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, উজ্জ্বল সরদার প্রমুখ। লেখক চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের আর এক পরিচয় তিনি শ্রদ্ধেয় অভিনেতা বিমল চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র, সেই সূত্রে সত্যজিৎ রায় সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহ তিনি প্রদর্শন করছেন এই প্রদর্শনীতে। ওনার সংগ্রহ থেকে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবিতে ব্যবহৃত গোল তাস, সত্যজিৎ রায়ের স্বহস্তে লিখিত শংসাপত্র, ‘ঘরে বাইরে’, ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ী’ চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন স্মারক, সোনার কেল্লা ও জন অরণ্য সিনেমার সত্যজিৎ রায়ের স্বহস্তে লিখিত স্ক্রিপটের অংশ, এই প্রদর্শনীতে দেখা গেল।
দেবযানী রায়কে লেখা সত্যজিৎ রায়ের একাধিক চিঠি এই প্রদর্শনীতে ছিল। আলোকচিত্রী নিমাই ঘোষের তোলা সত্যজিৎ রায়ের ছবি দেখা গেল পুত্র সাত্যকি ঘোষের সংগ্রহ থেকে। শিল্পী অসিত পোদ্দারের তোলা ছবিও ছিল। সংগ্রাহক ফাল্গুনী দত্ত রায়ের সংগ্রহ থেকে ‘সোনার কেল্লা’, ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ী’ চলচ্চিত্রের লবি কার্ড, সত্যজিৎ রায়ের বিভিন্ন চলচ্চিত্রের বিজ্ঞাপন ছিল। অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগ্রহ থেকে পথের পাঁচালী, অপুর সংসার, অপরাজিত, তিন কন্যা, জন অরণ্যে, চিড়িয়াখানা, জলসাঘর চলচ্চিত্রের পোস্টার। লেখক ঋদ্ধি গোস্বামীর সংগ্রহ থেকে সত্যজিৎ রায় সংক্রান্ত দুষ্প্রাপ্য স্মারক সংগ্রহ এই প্রদর্শনীতে ছিল। জয়ন্ত ঘোষের সংগ্রহ থেকে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা একাধিক স্কেচ, সত্যজিৎ রায়ের একাধিক চলচ্চিত্রের দুষ্প্রাপ্য বুকলেট এখানে দেখা গেল। সৌভিক মুখোপাধ্যায়ের সংগ্রহ থেকে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা ছবির ওপেক নেগেটিভ, অঙ্কিত প্রচ্ছদচিত্র এসব কিছু। সংগ্রাহক উজ্জ্বল সরদারের সংগ্রহ থেকে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা ছবি, গ্রন্থ ও পত্র-পত্রিকার প্রচ্ছদচিত্র, পথের পাঁচালী সংক্রান্ত দুষ্প্রাপ্য পুস্তিকা, সত্যজিৎ রায় সংক্রান্ত ক্যালেন্ডার, দেবী ও অপুর সংসার চলচ্চিত্রের লবিকার্ড এসব দেখা গেল। ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা চরণ দাশ বাউলের দোতারা, একাধিক চলচ্চিত্রের পোস্টার, লবিকার্ড এসব প্রদর্শন করলেন সংগ্রাহক অরিন্দম রাউত। সত্যজিৎ রায়ের একাধিক ছবির পোষ্টার ও লবি কার্ড দিলেন জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। সত্যজিৎ রায় সংক্রান্ত দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ, আঁকা স্কেচ, ১৯৬১ সালে সত্যজিৎ স্বাক্ষরিত ছবি, দুষ্প্রাপ্য বুকলেট- ছবি- নথিপত্র, সত্যজিৎ রায় লিখিত বাংলা ও ইংরাজি চিঠি প্রভৃতি প্রদর্শন করলেন বিশিষ্ট সংগ্রাহক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাহক তাপস বসু, উৎপল সান্ন্যাল, সুধীন্দ্রকুমার চক্রবর্তী, সোহান চক্রবর্তী ও স্পন্দন দাস তাদের সংগ্রহ নিয়ে। প্রর্দশনীতে বিশেষ ভাবে প্রর্দশিত হল বিশিষ্ট সংগ্রাহক পরিমল রায়ের সংগ্রহ থেকে সত্যজিৎ রায় ও তাঁর সিনেমা সংক্রান্ত ছবি সূঁচ সুতোর কাজে।ছিল অরোরা ফিল্মসের পক্ষ থেকে জলসাঘর সিনেমাটি যে ক্যামেরায় তোলা হয়েছিল সেটি।
অন্যান্য দিন প্রদর্শনীতে এসেছিলেন, শ্রীকান্ত আচার্য, সঞ্জীব সরকার, প্রণবরঞ্জন রায়, সৌমিত্র কুন্ডু, দেবজ্যোতি দত্ত প্রমুখ।
Be First to Comment