Press "Enter" to skip to content

ফের আইনী জটে শিক্ষক নিয়োগ,চলতি সপ্তাহে ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি?…..

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন : কলকাতা, ১৪ জুলাই, ২০২১। ফের আইনী জটে পড়লো উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া। সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে গত শুক্রবারের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দাখিল হয়েছে আপিল পিটিশন টি। চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে হতে পারে এই মামলার শুনানি। উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে একাংশ পরীক্ষার্থী সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশিকা কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হয়েছেন।এসএসসির তরফে মেধাতালিকা টি অস্বচ্ছ বলে দাবি মামলাকারীদের।গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সবুজ সংকেত পেয়ে শনিবার দিন উজ্জীবিত হয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রতিবছর শিক্ষক নিয়োগে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তা ফের আটকে গেল আইনী জটে।আর এই জট টানা পাঁচ বছর থমকে রেখেছে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটাকেই।গত শুক্রবার  রাজ্য সরকারের মিলেছিল আইনী স্বস্তি,  দীর্ঘ ৫ বছর থমকে থাকা উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার নির্দেশিকা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ। ওইদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছিল এই মামলা।সেখানে আগেকার অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল।প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার এসএসসির তরফে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকা প্রকাশিত করা হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের নাম্বার সহ।তা গত শুক্রবার আদালতে জমা দেয় রাজ্য।এই মেধাতালিকা দেখে সন্তুষ্ট হয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। মার্কশীট নিয়ে অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিল হয়েছিল। তবে তা বিচারপতি গ্রহণ করেননি।মামলায় তিনি জানিয়েছিলেন – ‘  ৫ বছর ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। আমি চাইনা নিয়োগে আরও দেরি হোক’। পাশাপাশি বিচারপতি রাজ্যের কাছে অনুরোধ রেখেছিলেন যে – ‘২০১৬ সালে যারা পরীক্ষায় আবেদন করেছিল, তাদের অনেকেরই বয়স পেরিয়ে গেছে। তাই তাদের বয়সে ৫ বছর ছাড় দেওয়া হোক’। গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আদেশনামায় উল্লেখ রয়েছে যে – ‘ তালিকায় ভূল থাকলে তা পরীক্ষার্থীরা এসএসসি কে দু সপ্তাহের মধ্যে জানাতে পারে।সেই অভিযোগ এসএসসি খতিয়ে দেখবে আট সপ্তাহের মধ্যে। এরপর আবেদনকারী পরীক্ষার্থীদের চিঠি/ ইমেল করবে এসএসসি। পুরো প্রক্রিয়া টি শেষ করতে হবে বারো সপ্তাহের মধ্যে’। পাশাপাশি এসএসসি অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশেষ আধিকারিক নিয়োগ করতে পারে এবং কোন পরীক্ষার্থী তথ্য ভূল দিয়ে অভিযোগ পাঠালে এসএসসি জরিমানা আদায় করার নির্দেশও দিতে পারবে বলে জানিয়েছিল আদালত। গত সপ্তাহে  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে তীব্র ভৎসনার মুখে পড়েছিল রাজ্য সরকারের এসএসসি দপ্তর। ‘কারা এই কমিশন চালাচ্ছে? অপদার্থদের কমিশন এটি, এসএসসি কে খারিজ করা উচিত’। ঠিক এভাবেই মামলার পর্যবেক্ষণ পর্বে সরব হয়েছিলেন বিচারপতি। ওইদিন এসএসসি তরফে কেউ হাজির না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বিচারপতি। মামলার দ্বিতীয় পর্বে এসএসসির চেয়ারম্যানের জরুরি তলব পড়েছিল আদালতের নির্দেশে। ওইদিন আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছিল – ‘আগামী ৭ দিনের মধ্যে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে এসএসসি কে। সেখানে অবশ্যই প্রাপ্ত নাম্বারের উল্লেখ থাকতে হবে’।২০১৯ সালের ১ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কেন কার্যকর করেনি এসএসসি, তা নিয়েও উঠে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন। গত পাঁচবছরে মামলার বেড়াজালে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে সফল হতে পারেনি রাজ্য সরকার। অভিযোগ, অনিয়মের কারণেই এই আইনী জটিলতা এসেছিল। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে জারি করা হয়েছিল উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ। এরফলে আটকে যায় ১৪ হাজার ৩৩৯ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া। যা নিয়ে ওইদিনই বিকেলে এসএসসির তরফে বসে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। চলতি উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দাখিল হয়েছিল বেশ কয়েকটি মামলা।গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এবং পুজোর আগেই ১৪,৩৩৯ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল।তবে ইন্টারভিউ তালিকায় নুন্যতম কত নাম্বার পেলে ডাক মিলছে তা ছিল অস্পষ্ট। তাই পরীক্ষার্থীদের একাংশ আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের হাত ধরে ইন্টারভিউ তালিকায় স্বচ্ছতা আনতে মামলা দাখিল করেছিলেন। সেখানে পরীক্ষার্থীদের অনেকেই বেশি নাম্বার পেয়েও ডাক পাইনি।সেই তথ্য তুলে ধরা হয় আদালতের কাছে। তখন আদালত উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। গত ২১ জুন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বচ্ছতা রেখে রাজ্যে ২৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে নির্দেশ দেন।সেইসাথে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া পুজোর আগেই শেষ করবার কথা ঘোষণা করে ছিলেন।সেইমতন গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করে থাকে। তবে এই ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশে কিসের ভিক্তিতে হয়েছে তা স্পষ্ট হয়নি । তাই নুন্যতম কত নাম্বার পেলে ইন্টারভিউ তালিকায় নাম উঠবে এবং বেশি নাম্বার পেয়েও কেন ডাক মিলেনি ইন্টারভিউতে তা জানতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দাখিল হয়। এই মামলায় গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্ট উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে এসএসসির অবস্থান নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিল।অপদার্থ এর সাথে তুলনা করেছিলেন খোদ বিচারপতি। ৭ দিনের মধ্যে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে বলে নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। প্রাপ্ত নাম্বার সহ এই মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।গত বৃহস্পতিবার এসএসসির তরফে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকা প্রকাশিত করা হয়। গত শুক্রবার তা আদালতের কাছে জমা পড়ে।এই তালিকা দেখে সন্তুষ্ট হয় হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। অন্তবর্তী স্তগিতাদেশ প্রত্যাহার করে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ।সোমবারই সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশিকা কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে দাখিল হলো আপিল পিটিশন। চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।

 

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *