অশোক দে : নৈহাটি, ২ জুলাই, ২০২২। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৮৪তম জন্মদিন উপলক্ষে নৈহাটি বঙ্কিম ভবনে বসেছিল এক মনোজ্ঞ আলোচনার আসর। আয়োজক : বঙ্কিম-ভবন ও পঃ বঃ তথ্য সংস্কৃতি বিভাগ। ‘বঙ্কিমচন্দ্র ও মুসলমান সমাজ’ এই অভিধায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আগত অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী। অতীত থেকে আজও কারো কারো মতে বঙ্কিমচন্দ্র সাহিত্যে হিন্দুত্ববাদকেই প্রশ্রয় দিয়েছেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্কিম স্বয়ং হিন্দুধর্ম প্রবন্ধের দীর্ঘ আলোচনায় মনুসংহিতায় উল্লেখিত আচারনিষ্ঠ হিন্দু ধর্মের প্রসঙ্গে বলেন ‘এই আচারনিষ্ঠ ধর্ম যদি হিন্দু ধর্ম হয় তাহা হইলে সেই রাজধর্ম আমি চাহিনা।
সীমিত সময়ে আবুল আহসান নিরপেক্ষ ভাবে বঙ্কিম মূল্যায়ন করতে এসে তাঁর ইতিবাচক, নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেন। রেনেসাঁস বা নব জাগরণ আজকের বিচারে খন্ডিত বা অসম্পূর্ণ। পাশাপাশি উল্লেখ করেন লালন শাহ, মীর মোশারফ হোসেন, ড. মহম্মদ শহীদুল্লা, কাজী আব্দুল ওদুদ, রেজাউল করিম, ড. আহম্মদ শরীফ প্রমুখ রচয়িতার অবদান। বিশ্লেষণী ভাবনায় আহসান পাঠ করেন বঙ্কিম বর্জিত সীতারাম উপন্যাসের ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদের অংশও। ‘বঙ্কিম ভাবনায় নারী’—- আধুনিক মননে আলোচনা করেন বেথুন কলেজের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক কৃষ্ণা রায়। বঙ্কিমের প্রবন্ধ বা উপন্যাসে তাঁর অন্বেষণ নারী। পাঠক হিসেবে তাঁর মনে হয়েছে তিনি নারীর প্রতি কখনও বিবেচক কোথাও বা অবিবেচক।
প্রসঙ্গক্রমে এসেছে বিধবা বিবাহ, বহু বিবাহ, সন্তানহীনতা, নারীশিক্ষা ইত্যাদির প্রশ্ন। দৃষ্টান্তস্বরূপ তুলে ধরেছেন ‘রজনী’, ‘চন্দ্রশেখর’, ‘রাজসিংহ’, কপালকুণ্ডলা, দুর্গেশনন্দিনী ইত্যাদি উপন্যাসের নারী চরিত্রগুলো। উপস্থিত ছিলেন লোকসংস্কৃতি গবেষক রতন কুমার নন্দী সহ অনেক গুণী ব্যক্তিত্ব। গত ২৭জুন এই অনুষ্ঠান মঞ্চেই বঙ্কিমচন্দ্রের গান ও তাঁর রচনা আশ্রয়ে শ্রুতি নাটক পরিবেশিত হয়।
Be First to Comment