গৌতম তালুকদার : সম্পাদক : (বি এস ইউ) এক মাস চার দিন ধরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত হেরে গেল রূপক। গতকাল মঙ্গলবার বেলা একটা বেজে পঞ্চাশ মিনিট নাগাদ বাঙ্গুর হাসপাতাল থেকে ডাক্তারবাবু ফোন করে জানালেন – “রূপক বাবু পাঁচ মিনিট আগে চলে গেলেন। আমরা সবরকম চেষ্টা করেও ওনাকে ধরে রাখতে পারলাম না।” ডাক্তারবাবুর গলায় হতাশা, যন্ত্রণা। আসলে একমাস ধরে চিকিৎসা করতে করতে রূপকের সঙ্গে ডাক্তারবাবুরও একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরী হয়ে গিয়েছিল। দুঃসংবাদ দেবার সময়ে বললেন- ” খুব বাধ্য রোগী ছিলেন। সবসময়েই সবরকমের সহযোগিতা করতেন। মজার মানুষ ছিলেন। অসুস্থতার মধ্যেও হাসি ঠাট্টা করতেন।”
হাসপাতাল থেকে দুঃসংবাদটি পেয়ে স্থির হয়ে বসে আছি। এরমধ্যেই কাকলীর ফোন। ” ও কেমন আছে গৌতম দা? ভালো হয়ে যাবে তো? ” ট্রিটমেন্ট তো চলছে। দেখা যাক কি হয়- এই মিথ্যেটুকু বলতেই হোলো। কার সঙ্গে আলোচনা করবো, কিভাবে এই দুঃসংবাদ জানাবো কাকলি আর রাতুলকে ভেবে পাচ্ছি না। বেলা দেড়টা অবধি কাকলি যতবার ফোন করেছে ততবারই আমাকে মিথ্যে কথা বলতে হয়েছে – ডাক্তারবাবুরা চেষ্টা করছেন।
গতকাল সকালবেলায় রূপক বাড়ির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছে। বেশ খোসমেজাজেই ছিল। বুধবার থেকে ঝড় আসছে শুনে ট্যাঙ্কে জল ভরে রাখা থেকে দেশলাই মোমবাতি ইত্যাদি হাতের কাছে রাখা, মায়ের প্রতি খেয়াল রাখাসহ কত কথা বলেছে কাকলীকে*। *ডাক্তারবাবু বলে গেছেন -আর একবার RT-PCR টেস্ট করে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ হলে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে। একথা শোনার পর আমরাও বেশ খুশী ছিলাম। কিন্তু এর ঘন্টাখানেক পরেই হঠাৎ বুকে ব্যাথা শুরু হয় রূপকের। ইসিজি করা হয়। এসব চলতে চলতেই ঘটে যায় চূড়ান্ত বিপর্যয়।
দুঃসংবাদটি শোনার পর কত কথাই না মনের মধ্যে ভীড় করে আসছিল। ১৯৭৬ সালে বিধান শিশু উদ্যান তৈরী করলেন অতুল্য ঘোষ। আমাদের সকলের দাদু। দাদু’র স্নেহ ভালবাসায়, আদরে শাসনে আমাদের শৈশব থেকে কৈশোরে পদার্পন। আমাদের মধ্যে বয়সের দু চার বছরের পার্থক্য থাকলেও বন্ধুত্বে কোনো বাঁধা ছিল না। দাদু চলে যাবার পরও বিধান শিশু উদ্যানকে কেন্দ্র করে আমাদের সম্পর্কে কোনো ছেদ পরেনি। করোনা পরিস্থিতিতে নিয়মিত দেখা না হলেও যোগাযোগ তো ছিলই। বিধান শিশু উদ্যানের কাজে আমরা যে যেভাবে পেরেছি ঝাপিয়ে পড়েছি। আমরা বন্ধুরা এরপর তো আর রূপককে কোনো কাজে পাবো না। এ যে কি বেদনাদায়ক….. সেটা লিখে বোঝানো সম্ভবপর নয়।
বিধান শিশু উদ্যানে অতুল্য দাদুর স্নেহধন্য সদা হাসিখুশি সদস্য রূপক অকালে চলে গেল….।
More from GeneralMore posts in General »
- ৩২ তম বর্ষে পদার্পণ করল শ্রী শ্রী শান্তি হরিচাঁদ মন্দিরের বাৎসরিক উৎসব…।
- Navigating End-Stage Kidney Failure: Choosing Between Dialysis and Transplant for a Better Life….
- ‘রঙ দাও হে রঙিলা’ সঙ্গীত ভিডিওর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন…।
- চেন্নাইয়ের বিশ্বখ্যাত লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট হাসপাতাল, রেলা হাসপাতাল, কলকাতায় তাদের প্রথম লিভার রান সফলভাবে আয়োজন করেছে, যার লক্ষ্য লিভারের অসুখ, অঙ্গদানের গুরুত্ব এবং লিভার প্রতিস্থাপনের পর জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা….।
- প্রেস রিলিজ লিভারের অসুখ সারাতে ১০০০ জনেরও বেশি লিভার রোগী, পরিবার এবং জনসাধারণ দৌড়লেন এই লিভার রানে ১৫০ জনেরও বেশি লিভার রোগী এবং তাঁদের পরিবার অংশগ্রহণ করেন। এই লিভার রান আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রেলা হাসপাতালের সিইও ডাঃ ইলানকুমারন কালিয়ামূর্তি, যিনি এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে তাঁর সহায়তা দান করেন। এই যুগান্তকারী অনুষ্ঠানের লক্ষ্য হল লিভার রোগী, তাঁদের পরিবার এবং জনসাধারণকে একসাথে এনে চিকিৎসা তহবিল সংগ্রহ এবং লিভারের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এই লিভার রানে ২.৫ কিমি, ৫ কিমি এবং ১০ কিমি, এই তিনটি বিভাগে অংশ ছিল, যেগুলিতে সবধরনের ফিটনেস স্তরের অংশগ্রহণকারীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২.৫ কিলোমিটার বিভাগটি মূলত হাসপাতালের লিভার রোগীদের জন্য, যা তাঁদের প্রচুর সহ্যশক্তি, শুরুতেই দ্রুত শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে। ৫ কিমি এবং ১০ কিমি বিভাগগুলি সাধারণ জনগণের জন্য, যা সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এই মহৎ উদ্দেশ্যে সমর্থন জানাতে একসাথে হতে উৎসাহ দেয়। এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলতে গিয়ে, রেলা হাসপাতালের সিইও ডাঃ ইলানকুমারন কালিয়ামূর্তি বলেন, “কলকাতায় আমাদের প্রথম লিভার রান শুরু করতে পেরে আমরা অত্যন্ত গর্ববোধ করছি। এই অনুষ্ঠানটি আমাদের লিভার রোগী, তাঁদের পরিবার এবং সমাজকে লিভার রোগ, লিভার প্রতিস্থাপনের পর জীবনের মান, অঙ্গদানের তাৎপর্য এবং প্রতিস্থাপনের পর জীবনের মান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি যৌথ লক্ষ্যে একত্রিত করার সুযোগ করে দেয়।” রেলা হাসপাতালের হেপাটোলজি বিভাগের ডিরেক্টর ডাঃ দীনেশ জোথিমানি বলেন, “লিভারের রোগ বিশ্ব জুড়ে ক্রমশ বেড়ে চলা স্বাস্থ্যহানিতে চিন্তার বিষয়, সারা বিশ্বে ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ কোনও না কোনও ধরণের লিভারের রোগে ভুগছেন। কেবলমাত্র ভারতেই, আনুমানিক ৩০% জনসংখ্যা ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত। এটি মূলত জনসাধারণের মধ্যে খুব কম শারীরিক শ্রমের জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত। উদ্বেগের বিষয়, লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সার এখন দেশে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি। শুরুতেই দ্রুত রোগনির্ণয় এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে জীবনের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে পারে এবং ‘দ্য লিভার রান’-এর মতো ইভেন্টগুলি সচেতনতা বৃদ্ধিতে এবং লিভারের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।” এই লিভার রানের উদ্দেশ্য হল লিভারের রোগ, অঙ্গদানের গুরুত্ব এবং লিভার প্রতিস্থাপনের পর জীবনের মান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। কলকাতা, ৯ মার্চ ২০২৫: চেন্নাইয়ের বিশ্বখ্যাত লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট হাসপাতাল, রেলা হাসপাতাল, কলকাতায় তাদের প্রথম লিভার রান সফলভাবে আয়োজন করেছে, যার লক্ষ্য লিভারের অসুখ, অঙ্গদানের গুরুত্ব এবং লিভার প্রতিস্থাপনের পর জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা….।
- অশোক আখড়া এক ব্যায়াম মন্দিরের আয়োজনে ন্যাশনাল আয়রন লিফটিং আর্ম ফাইটিং ও গ্রিক গড শের ই হিন্দুস্থান ২০২৫…।
Be First to Comment