জন্মদিনে স্মরণঃ মা ন্না দে
বাবলু ভট্টাচার্য : পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলা ও হিন্দি গানের দুনিয়াতে রাজত্ব করেছেন মান্না দে। কঠিন রাগাশ্রয়ী গান, হালকা ধ্রুপদী সুর থেকে চটুল ফিল্মি গান— সবটাতেই তাঁর প্রতিভা, দক্ষতা ও শ্রোতার মন কাড়ার ক্ষমতা ছিল প্রশ্নাতীত।
মান্না দে’র আসল নাম প্রবোধচন্দ্র দে হলেও দীর্ঘ ৬০ বছরের সংগীতমুখর জীবনে ‘মান্না দে’ নামেই খ্যাতি লাভ করেন তিনি। বাবা পূর্ণচন্দ্র দে এবং মা মহামায়া দেবী।
১৯৪২ সালে কাকা কৃষ্ণচন্দ্র দে’র সঙ্গে মুম্বাই দেখতে যান মান্না দে। সেখানে শুরুতে কৃষ্ণচন্দ্র দে’র অধীনে সহকারী হিসেবে এবং তারপর শচীনদেব বর্মণের (এস ডি বর্মণ) অধীনে কাজ করেন তিনি।
পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্য সংগীত পরিচালনার পাশাপাশি ওস্তাদ আমান আলী খাঁ ও ওস্তাদ আবদুর রহমান খাঁর কাছ থেকে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন।
১৯৪৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তামান্না’ চলচ্চিত্রে গায়ক হিসেবে মান্না দের অভিষেক ঘটে। এতে সুরাইয়ার সঙ্গে দ্বৈত সংগীতে গান এবং সুরকার ছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র দে। ওই সময় গানটি ভীষণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
১৯৫০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মশাল’ ছবিতে শচীনদেব বর্মণের গীত রচনায় ‘ওপার গগন বিশাল’ নামে একক গানে কন্ঠ দেন মান্না দে। ১৯৫২ সালে মান্না দে বাংলা ও মারাঠি ছবিতে একই নামে ও গল্পে ‘আমার ভূপালী’ শীর্ষক একটি গান গেয়েছিলেন। এসবের মধ্য দিয়েই সংগীতাঙ্গনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ও পাকাপোক্ত করেন তিনি।
৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুম্বাইয়ে কাটানোর পর মৃত্যুর আগে কয়েক বছর ধরে বেঙ্গালুরুর কালিয়ানগর শহরে বসবাস করছিলেন মান্না দে।
২০০৫ সালে আনন্দ পাবলিশার্স বাংলা ভাষায় তার আত্মজীবনী ‘জীবনের জলসাঘরে’ প্রকাশ করে। পরে এটি ইংরেজি, হিন্দি ও মারাঠি ভাষায় ভাষান্তরিত হয়ে প্রকাশিত হয়।
ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ এবং ‘পদ্মবিভূষণ’ খেতাবসহ অসংখ্য খেতাব অর্জন করেন তিনি। এছাড়া রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ডি.লিট সম্মাননা লাভ করেন। ২০০৯ সালে ‘দাদাসাহেব ফালকে’ সম্মাননায় ভূষিত হন মান্না দে।
২৪ অক্টোবর ২০১৩ সালে বেঙ্গালুরুতে মান্না দে মৃত্যুবরণ করেন।
মান্না দে ১৯১৯ সালের আজকের দিনে (১ মে) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment