জন্মদিনে স্মরণঃ অ শো ক কু মা র
বাবলু ভট্টাচার্য : লেজেন্ডারি বাঙালি পরিবারের মধ্যে এই গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ভারতীয় ছায়াছবির ইতিহাস, ভাগলপুরের প্রবাসী বাঙালি এই পরিবারকে ছাড়া যেন লেখাই যাবে না। সেই পরিবারেরই বড় ছেলে কুমুদলাল। সকলের ‘দাদামণি’।
ইন্ডাস্ট্রিতে এসেও তিনি রয়ে গেলেন সকলের দাদামণি। এমনকি দর্শকমহলেও তিনি সকলের দাদামণি। পরে, সিনেমা জগতে এসে কুমুদলাল নাম পাল্টে তিনি হয়ে যান অশোক কুমার। তাঁর অভিনয় মানেই পর্দায় এক পিতৃসমর উপস্থিতি।
অশোক কুমারের দুই ভাই-ই বিখ্যাত অভিনেতা; অনুপ কুমার গঙ্গোপাধ্যায় ও কিশোর কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। অনুপ কুমার ও কিশোর কুমার নামেই তাঁরা বিখ্যাত। তাঁরা তিন ভাই ‘চলতি কা নাম গাড়ি’ ছবিতে একসঙ্গে অভিনয়ও করেছিলেন, যে ছবি গানে-অভিনয়ে আজও আইকনিক। মধুবালা ছিলেন সে ছবির নায়িকা।
অশোক কুমার ও দেবিকা রানিকে বলা হত প্রথম ভারতীয় সুপারস্টার নায়ক-নায়িকা। তাঁদের জুটির সাড়া জাগানো ছবি ছিল ‘অচ্যুত কন্যা’, ১৯৩৬ সালে মুক্তি পেয়ে সাড়া ফেলে দেয়।
এ সিনেমার পর তাঁরা এক সঙ্গে ‘জন্মভূমি’, ‘ইজ্জত’ ও ‘সাবিত্রী’সহ আরও কিছু সিনেমায় অভিনয় করেন।
১৯৪২ সালে তাঁর অভিনীত ‘ঝোলা’ সিনেমাটি বেশ সাড়া জাগায়। এতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন লীলা চিটনিস।
১৯৪৩ সালে গায়েন মুখার্জি পরিচালিত ‘কিসমত’ ছবিতে প্রথম খলচরিত্রে অভিনয় করে সুনাম অর্জন করেন অশোক কুমার। ‘কিসমত’ পরবর্তী সময়ে অশোক কুমার অভিনীত সফল সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘চল চল রে নওজোয়ান’, ‘শিকারী’, ‘সাজন’, ‘মহল’, ‘সংগ্রাম’ ও ‘সমাধি’ অন্যতম।
অশোক কুমার হিন্দি ও বাংলা- দুই ভাষার সিনেমাতেই অভিনয় করেন। বাংলা ভাষার যেসব চলিচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেন, তার মধ্যে ‘হসপিটাল’ ও ‘আনন্দ আশ্রম’ অন্যতম। ‘হসপিটাল’ ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন সুচিত্রা সেন। আর ‘আনন্দ আশ্রম’ ছবিতে তিনি উত্তম কুমারের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেন।
শুধু অভিনয় নয়, অশোক কুমার চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন। তাছাড়া চিত্রশিল্পী হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন।
চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিনি অনেক পুরস্কারে ভূষিত হন। এসবের মধ্যে ১৯৮৮ সালে পাওয়া ‘দাদাসাহেব ফালকে’ ও ১৯৯৯ সালের ‘পদ্মভূষণ’ অন্যতম।
২০০১ সালের ১০ ডিসেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অশোক কুমারের মৃত্যু হয়।
অশোক কুমার ১৯১১ সালের আজকের দিনে (১৩ অক্টোবর) ভাগলপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment