Press "Enter" to skip to content

১৪ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে যাত্রা শুরু হয় শারাপোভার, চার বছর আগে শুরু করেন ক্যান্ডি ব্যবসা— ‘সুগারপোভা’

Spread the love

————-শুভ জন্মদিন মারিয়া শারাপোভা——–

বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, চেরনোবিল বিস্ফোরণে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয়ার আওতাভুক্ত অঞ্চল ছিল গোমেল। এ কারণে ভিটেমাটি ছেড়ে বেলারুশের শহরটি থেকে পালাতে বাধ্য হন ইউরি শারাপোভ-ইয়েলিনা শারাপোভ দম্পতি। অনাগত সন্তানের জন্য একটা শ্বাসযোগ্য পৃথিবী তো চাই! রাশিয়ান ন্যাগান শহরে নতুন করে জীবন শুরু করেন তারা। সেখানেই ইয়েলিনার কোল আলো করে জন্ম নেন মারিয়া ইয়ুরেভনা শারাপোভা। ডাক নাম ‘মাশা’। মাত্র চার বছর বয়সেই মেয়ের হাতে টেনিসের র‍্যাকেট তুলে দেন বাবা। টানাটানির সংসারে খেলাধুলার বিলাসিতা বহনের সামর্থ্য ছিল না ইউরি শারাপোভের। র‍্যাকেটটা এসেছিল উপহার মারফত; দিয়েছিলেন শারাপোভার বাবার বন্ধু আলেকজান্ডার কাফেলনিকভ, যিনি আবার সাবেক নাম্বার ওয়ান ইয়েভগনি কাফেলনিকফের বাবা। বাবার বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া সেই র‍্যাকেট দিয়ে স্থানীয় কোর্টে টেনিসে হাতেখড়ি শারাপোভার।

পাকা জহুরির মতো রত্ন চিনে শারাপোভাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিক বোলেত্তেইরি টেনিস একাডেমি’তে পাঠিয়ে দেন টেনিস বিশ্বের ‘গ্রেট ওয়াইড হোপ’। একাডেমিটি থেকে উঠে এসেছেন আন্দ্রে আগাসী-মনিকা সেলেসের মতো তারকা। কিন্তু ১৯৯৪ সালে দেশ পাল্টে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হতে প্রচুর ধারদেনা করতে হয় শারাপোভার বাবাকে। মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম পা রাখার সময় ইউরির পকেটে ছিল মাত্র ৭০০ ডলার। কিন্তু সন্তানের টেনিস দীক্ষায় যেন কোনো অসুবিধে না হয়, এজন্য তিনি বেছে নেন থালা-বাসন ধোয়া থেকে স্বল্প বেতনের ‘অড-জব’। ধন্য মা-বাবার ধন্যি মেয়ে সেই শারাপোভাই ১১ বছর ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী নারী ক্রীড়াবিদ! তার মোট সম্পত্তির আর্থিক মূল্য প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার।
শুধু তার উঠে আসার গল্প দিয়েই রুপালি পর্দা কাঁপিয়ে দিতে পারে হলিউড। এ তো সত্যিকারের ‘হলিউড ড্রিমস’! বোলেত্তেইরি টেনিস একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার সময় এক বর্ণ ইংরেজিও জানতেন না শারাপোভা। কিন্তু টেনিস প্রতিভা দিয়ে পেরিয়ে আসেন সব সমস্যাসঙ্কুল পথ— মাত্র নয় বছর বয়সেই বোলেত্তেইরি টেনিস একাডেমিতে শারাপোভার লেখাপড়া আর থাকা-খাওয়ার ব্যয়ভার তুলে নেয় বিশ্বখ্যাত আইএমজি গ্রুপ। এজন্য তখন ৩৫ হাজার ডলার বরাদ্দ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

২০০১ সালে ১৪ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে যাত্রা শুরু হয় শারাপোভার। দুই বছর পরই উঠে আসেন টেনিস র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষ ৫০ জনের মধ্যে। এর পর উইম্বলডন (২০০৪) জিতে তারকা ইমেজ পেয়ে যান মাত্র ১৭ বছর বয়সে! পরের বছর প্রথম রাশিয়ান নারী হিসেবে দখল করেন র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান। এর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শারাপোভাকে। বিজনেস সাময়িকী ‘ফোর্বস’-এর জরিপে গত বছর পারিশ্রমিক আর এনডোর্সমেন্ট মিলিয়ে মোট ২৯.৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেন শারাপোভা। গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘পোরশে’ আর লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ‘কোলে হান’-এর সঙ্গে লাখ লাখ ডলারের চুক্তি রয়েছে রুশ তারকার। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার পর ফ্লোরিডা আর ক্যালিফোর্নিয়ায় দুটি বিলাসবহুল বাড়ি কেনেন শারাপোভা।

চার বছর আগে শুরু করেন ক্যান্ডি ব্যবসা— ‘সুগারপোভা’ নামের সেই ক্যান্ডি বাজারে আসার প্রথম ছয় মাসেই বিক্রি হয় ৩০ হাজার ব্যাগ!

মারিয়া ইয়ুরেভনা শারাপোভা ১৯৮৭ সালের আজকের দিনে (১৯ এপ্রিল) রাশিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.