মানুষ কতো নিষ্ঠুর… আর কতো নীচে নামবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব।
মৌমিতা মাইতি: ৩ জুন, ২০২০। সারা ভারতবর্ষ সহ বিশ্বের নানা প্রান্তে হাতি দেখতে পাওয়া যায়। কোথাও হাতি কে দেবতা রূপে পুজো করা হয়।আমাদের দেশে ভগবান বিশ্বকর্মা র বাহন হাতি।আমাদের অতি প্রিয় সিদ্ধিদাতা গনেশ ঠাকুরের মাথা ও কিন্তু হাতির। এই হাতির সাথে মানুষের আত্মিক সম্পর্ক আছে। ঘন জঙ্গলে ঘুরতে গেলেও হাতি আমাদের অন্যতম ভরসা। কখনো দেখা গেছে হাতি মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে।
কখনো আবার বুনো হাতির তান্ডবে মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। বহু রাজ্যেই হাতি খাবারের সন্ধানে জঙ্গল ছেড়ে মানুষের লোকালয়ে চলে আসে। সেই রকমই ঘটনা কেরলের একটি গ্রামের। সাইলেন্ট ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক থেকে হাতিটি খাদ্যের সন্ধানে এসেছিল গ্রামে। অভুক্ত অন্তঃসত্ত্বা হাতিটিকে আনারস খেতে দেয় সেখানকার সাধারণ মানুষ। হাতির তো আর মনুষ্য জাতির মতো দুর্বুদ্ধি নেই।
অতি সরল ভাবে ক্ষুধার্থ পেটে খাবারের আশায় হাতিটি মানুষ কে সরল মনে বিশ্বাস করে সেই আনারস খাবার পরেই পেটের মধ্যে শুরু হয় বিকট আওয়াজ। বিশ্বাস করা মানুষগুলো ওই আনারসের মধ্যে বাজি ভরে সেটাই খেতে দিয়েছিল। পেটের অসহ্য যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়ে হাতিটি মাঝনদীতে ঠান্ডা জলের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে স্থির দাঁড়িয়ে ছিল নিশ্চিত মৃত্যুর প্রতীক্ষায়। হয়তো তৎক্ষণাৎ বুঝতে পারছিল তার গর্ভের শিশুটি আর বাঁচতে পারবে না।
জলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মৃত্যুর অপেক্ষা করছিল উঠে আসা রক্তমুখ নিয়ে। এরপরও কি আমরা দাবি করতে পারি আমরা শিক্ষিত, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। নিজের বাসস্থান বাঁচাতে কোন কাদায় নামছি! ছিঃ ছিঃ ধিক্কার জানাতে হয় এই রকম হিংস্র ঘটনার। যে কেরালা রাজ্য শিক্ষার দিক থেকে সর্বদা প্রথম সারিতে থাকে, সেই রাজ্যে এমন ঘটনা সত্যি কি লজ্জার বিষয় নয়। আর কতো নিষ্ঠুর হবো আমরা। কেন পারিনা এ পৃথিবীকে সবার বাসযোগ্য করে তুলতে। এমন নিষ্ঠুরতার শাস্তি তো প্রকৃতি দিচ্ছে আমাদের..এবার বদলানোর পালা।
তা না হলে নিজেদের ধ্বংসের জন্যে প্রস্তুত হও মানব জাতি। কেরালার মতো রাজ্যে এই ধরণের ঘটনা মন থেকে মেনে নেওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। আশাকরা যায় সরকার এই বিষয়টিকে করা হাতে মোকাবিলা করবেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন। আমরা জানি কেরালা এই গ্রুপের বাইরে। আমরা প্রতিনিয়ত কত নীচে নামছি এই নৃশংসতার প্রমাণ দিতে।
একদিকে যেমন বহু মানুষ বন্যপ্রাণী কে রক্ষার জন্য প্রাণপাত করছেন, ঠিক তেমনই বনের প্রাণীদের উপর এই নিষ্ঠুর অত্যাচারের প্রতিবাদে আমাদের গলা উঁচু করার সময় এসে গেছে।
Be First to Comment