———-স্মরণঃ স্যার আলফ্রেড হিচকক———-
বাবলু ভট্টাচার্য: ,ঢাকা, ‘দ্য মাস্টার অব সাসপেন্স’ কোন পরিচালককে বলা হয় জানেন? নিশ্চয়ই আঁচ করতে পারছেন কার কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ, সর্বকালের জনপ্রিয় এই পরিচলকের নাম আলফ্রেড হিচকক। বাবা উইলিয়াম হিচকক ছিলেন মুদীর দোকানের মালিক ও কৃষক, মা-র নাম এমা জেইন হিচকক। চাচার নামানুসারে তার নামে ‘হিচকক’ শব্দটি যোগ করা হয়েছিল। ক্যাথলিক খ্রিস্টান হিসেবে তাকে বড় করা হয়েছিল, পড়াশোনা করানো হয়েছিল লন্ডনের সেইলসিয়ান কলেজ এবং পরবর্তীতে জেসুইট পরিচালিত সেন্ট ইগনাটিয়াস কলেজে। মাত্র ৫ বছর বয়সে একদিন বাবা তার হাতে একটি চিরকুট ধরিয়ে পুলিশ স্টেশনে যেতে বলেছিলেন। স্টেশনে গিয়ে পুলিশকে বলতে বলা হয়েছিল, খারাপ আচরণের জন্য তাকে যেন জেলে ১০ মিনিটের জন্য আটকে রাখা হয়। এই খারাপ ব্যবহার ও মিথ্যাভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়টি তার সিনেমায় অনেক সময়ই উঠে এসেছে। ১৪ বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। সে বছরই তিনি সেন্ট ইগনাটিয়াস কলেজ ছেড়ে দিয়ে লন্ডন কাউন্টি কাউন্সিল স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড নেভিগেশনে ভর্তি হন। এখান থেকে পাশ করার পর প্রকৌশল চিত্রাংকন এবং বিজ্ঞাপনের ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করেন।
১৯৫৬ সালে হিচকক আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। ছয় দশকের ফিল্মি ক্যারিয়ারে তিনি পঞ্চাশটিরও অধিক ফিচার চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। অনেক ছবি তিনি নিজেই প্রযোজনা করেছেন। হিচককের ছবি সাসপেন্স ও ফ্যান্টাসিতে যেমন ভরা তেমনি রসবোধ এবং বিদ্রুপেও কম যায় না। আর তার ছবি টেকনিক ও সিনেমাটোগ্রাফির জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ হিচকক জীবনে বহু পুরস্কার পেয়েছেন। অস্কার নমিনেশনে অনেকবার তিনি বেস্ট ডিরেক্টরের পুরস্কার পান। ছবিগুলো হলো: ‘সাইকো’ (৬০), ‘রেবেকা’ (৪০), ‘লাইফবোট’ (৪৪), ‘স্পেলবাউন্ড’ (৪৫), ‘রিয়ার উইন্ডো’ (৫৪) এবং বেস্ট পিকচারের পুরস্কার পায় তার ‘ফরেন করেসপন্ডেন্ট’ ও ‘স্পেলবাউন্ড’। এছাড়াও ১৯৮০ সালে ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ কতৃক তিনি ‘নাইট’ উপাধি লাভ করেন।
স্যার আলফ্রেড হিচকক ১৯৮০ সালের আজকের দিনে (২৯ এপ্রিল) আমেরিকার লস এঞ্জেলস শহরে মৃত্যুবরণ করেন।
Be First to Comment