অশোক দে – “তবলা আমায় বাজায়,তাইতো আমি বাজি/তবলাকে মোর দুঃখ দিয়ে বাজাতে নই রাজি” এই অনুভূতি প্রবাদপ্রতিম তবলাশিল্পী রাধাকান্ত নন্দীর। জন্মেছিলেন ২৩ মে বরিশাল জেলার বানরি পাড়া গ্রামে। ঠাকুরদা কালীচরণ নন্দীর উৎসাহে গ্রাম পরিক্রমায় নগরকীর্তনের দলে শিশু রাধাকান্তকেও দেখা যেত শ্রীখোল হাতে। শ্রীখোল বাজাতে বাজাতে একদিন এভাবেই ঝোঁক এল তবলায়। বাবার শাসন,পড়াশোনার চাপ তবলার বাজানোর ইচ্ছে তাকে প্রলুব্ধ করে পাকিস্তান আর্মি ব্যান্ডের সঙ্গে পালিয়ে যাবার। তবলা বাজানোর মাসহারা এবং উস্তাদ আনখেলালের শিষ্যত্ব তাকে ধীরে ধীরে পরিণত করে তোলে। মার্গসংগীতে সঙ্গত করছেন বাবা আলাউদ্দিন খাঁ, আমির খাঁ, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাপদ চক্রবর্তী, মণিলাল নাগ প্রমুখ উস্তাদ ও পণ্ডিতের সংগে। নেপথ্য সংগীতে ছিলেন উস্তাদ আলি আকবর খাঁ-র সংগে। সব ধরনের তালবাদ্য-র বিষয়ে ছিল তাঁর প্রখর জ্ঞান। একদিন এমন দিন ছিল নো রাধাকান্ত নো রেকর্ডিং। এল পি রেকর্ড সংগীত জগতে প্রশংসিত তাঁর হাতে বাজানো দশটি যন্ত্র। আর আধুনিক বাংলা গানে এখনও কানে বাজে ‘ “মায়াবতী মেঘে এল তন্দ্রা”। গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ছাড়াও স্বর্ণ যুগের এমন কোনও শিল্পী ছিলেন না যার সঙ্গে বাজাননি। আর নজরুল গীতিতে মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক সংগীতব্যক্তিত্বের কথা মনে আসে। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর হাত থেকে বিশেষ সম্মান গ্রহণ করেন। গতকাল, ৩০ নভেম্বর ছিল তাঁর প্রয়াণ দিবস। এই উপলক্ষে হাতিবাগান আস্থা চিল্ড্রেন কমিউনিটি হলে “রাধাকান্ত নন্দী স্মৃতি সংস্থা” আয়োজন করে একটি স্মরণ সন্ধ্যার। যেহেতু তিরোধান দিবস উদ্যোক্তরা নির্বাচনে আধুনিক গানকে রাখেননি। পরিবর্তে ছিল রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকান্ত। পঞ্চকবি বললেও এখানে অনুপস্থিত ছিলেন অতুলপ্রসাদ। সমবেত নিবেদনে ছিলেন সংস্থার সদস্যরা। এছাড়া গেয়েছেন পারমিতা মুখোপাধ্যায়, সায়নী ব্যানার্জি, দীপ্তশ্রী গাঙ্গুলী, নবীনচন্দ্র কাঁড়ার, মহুয়া মুখোপাধ্যায়, অঞ্জনা ভট্টাচার্য, শতাব্দী আচার্য, অর্চনা ঘোষ, জয়শ্রী ভট্টাচার্য, রেশমি হাজরা, হীরা চক্রবর্তী, রাজশ্রী রায়চৌধুরী, প্রদীপ দাস, সঙ্গীতা ঠাকুর, শ্রেয়া কাঞ্জিলাল, প্রেমাশিস অধিকারী। আর রাধাকান্ত বলেই তবলাশিল্পীদের কথা উল্লেখ করতেই হবে। এরা হলেন মৃণাল সেনগুপ্ত, রামানুজ চ্যাটার্জি, নির্মল মুখার্জি, স্যমন্ত্রক মিশ্র, তপনজ্যোতি দে, পিন্টু দাস, প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং রাধাকান্ত-র সুযোগ্য পুত্র মাণিক নন্দী। তাদের পাশাপাশি আরো যারা নানাভাবে আসরকে বেঁধে রেখেছিলেন তারা হলেন গৌতম রায় (কী বোর্ড), জয়ন্ত গুহরায় (অ্যাকোর্ডিয়ান) ও ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য(যন্ত্রানুষঙ্গ)। এদিন কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও স্মৃতিচারণে ছিলেন “অগ্নিবীণা”র সম্পাদক ও বাচিকশিল্পী রবিন মুখোপাধ্যায়, গিটারশিল্পী প্রতাপ রায়(বেবীদা), স্বপন সেন, সঞ্জীব ভট্টাচার্য, ডঃ পবিত্র সাহা প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন চৈতালী মল্লিক।
স্মরণ ও সংগীতানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রবাদ প্রতিম তবলা বাদক পন্ডিত রাধাকান্ত নন্দীর ৩৫তম তিরোধান দিবস উদযাপন
More from GeneralMore posts in General »
- বরানগরে তরুস্তুতি….।
- এটিএম কার্ড ফিরিয়ে দিল মঙ্গলকোটের ‘নিখোঁজ’ যুবক কে!….
- Your Summer Dishwashing Routine Made Simple…..
- প্রয়াত বিচারকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোওয়ার আসর….।
- TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ ‘বিপন্ন উত্তরবঙ্গ’….।
- কলকাতার গান এন্ড শেল ফ্যাক্টরি পরিদর্শনে প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় শেঠ….।
Be First to Comment