শুভ জন্মদিন জাদুশিল্পী ডেভিড কপারফিল্ড
বাবলু ভট্টাচার্য : টিভি পর্দা থেকে চোখ সরাচ্ছেন না কেউ। জাদুকর বললেন, ‘এই ৩১০ ফুট উচ্চতার স্বাধীনতার স্মারক-স্ট্যাচু অফ লিবার্টিকে আমি অদৃশ্য করে কেবল এটাই মনে করিয়ে দিতে চাই, স্বাধীনতা কতটা মূল্যবান আমাদের কাছে এবং তা কতটা সহজেই হারিয়ে ফেলা যায়।’
কথা বলা শেষে জাদুকর এই বিশাল স্থাপনার সামনে একটা পর্দা তুলে দিলেন। তার খানিকবাদেই পর্দাটা নিচে নেমে এলো কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে, স্ট্যাচুটা আসলেই নেই সেখানে। ওপর থেকে একটা হেলিকপ্টার আলো ফেলল কিন্তু কোথাও লিবার্টিকে খুঁজে পাওয়া গেল না। খানিক বাদে ঠিক আগের অবস্থানেই দেখা গেল স্ট্যাচু অফ লিবার্টিকে।
এই জাদুকরের নাম ডেভিড কপারফিল্ড। জাদুকর হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি রয়েছে তার।
ছোটবেলা থেকেই ডেভিডের জাদু বা দৃষ্টি বিভ্রম করে দেয়া ব্যাপারগুলোতে বেশ আগ্রহ কাজ করত।
স্কুলজীবন শেষ করার আগেই ম্যানহাটনের ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্কে জাদুর প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন ডেভিড। ব্রডওয়ের মঞ্চে অদৃশ্য হওয়ার জাদু দিয়েই সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। আর ওই এক মঞ্চই তার জীবন পাল্টে দিয়েছিল।
তাঁর জাদুর প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে আমেরিকান ম্যাজিশিয়ান সোসাইটি ডেভিডকে নিজেদের সদস্য হওয়ার আহ্বান জানায় এবং ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে সেখানে নিজের নাম লেখান ডেভিড।
দ্য এবিসি অফ ম্যাজিক নামে প্রাইম টাইম টেলিভিশনে তাঁর একটি অনুষ্ঠান প্রচার হয় যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। পরের বছর দ্য ম্যাজিক অফ ডেভিড কপারফিল্ড নামে তাঁর নিজের টিভি সিরিজ বানানোর প্রস্তাব দেয়া হয় তাঁকে। অনুষ্ঠানটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল যে পরবর্তী ২০ বছরে ২১টি অনুষ্ঠানই সফলতার মুখ দেখেছিল।
এই অনুষ্ঠানের ষষ্ঠ পর্ব অ্যামি অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয় এবং টিভি রেটিংসের সর্বোচ্চ ধাপে উন্নীত হয়।
তার সিবিএসের সঙ্গে চুক্তির অষ্টম বছরে অনুষ্ঠানটি চীনা প্রজাতন্ত্রের জন্য সম্প্রচার করা হয়। ৪ হাজার ৪৮০ কিলোমিটার দ্য গ্রেট ওয়াল অফ চায়না ছিল যার মূল আকর্ষণ। এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি ডেভিড নামক এই দুর্দান্ত জাদুকরের মায়াজালে অদৃশ্য করে দিলেন এবং পুরো বিশ্ব অবাক হল তার জাদুর মোহনীয়তায়।
তিনি জাদুকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন এবং অবশ্যই বিশ্বজুড়ে এক বিশাল জাদু দেখার দর্শক তৈরি করেছেন।
এছাড়া সামাজিক কর্মকাণ্ডেও ডেভিডের উপস্থিতি বিদ্যমান। স্ট্রোক রোগীদের জন্য একটা আলাদা অনুষ্ঠানই করে থাকেন তিনি, যার সম্পূর্ণ অর্থ রোগীদের সেবায় খরচ করা হয় প্রায় ৩০টি দেশের ১ হাজার হাসপাতালে।
ডেভিড কপারফিল্ড ১৯৫৬ সালের আজকের দিনে (১৬ সেপ্টেম্বর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির মেটুসানে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment