গোপাল দেবনাথ: কলকাতা, ৩ এপ্রিল ২০২০
বেশ কয়েক বছর ধরে বিধান শিশু উদ্যানে নিয়মিত বসছে জৈব শাকশব্জির হাট। সপ্তাহে দুদিন। রবিবার সকাল সাতটায় এবং বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায়। ইতিমধ্যেই এই জৈব হাটের সুখ্যাতি এই শহরের চারদিকে ছড়িয়ে পরেছে মূলত দুটি কারনে। এক ন্যায্য দাম এবং দ্বিতীয়ত এখানে বিক্রিত প্রতিটি খাদ্যসামগ্রীর শুদ্ধতা। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে এই খাদ্যসামগ্রীর চাহিদা দিন দিন যেমন বাড়ছে এবং মানুষ সচেতন হচ্ছেন।
সম্পূর্ণ রাসায়নিক সার, রাসায়নিক কীটনাশক এবং ক্ষতিকারক রং বিবর্জিত শাকশব্জিকেই আমরা বলি জৈব। যাঁরা এই হাটের শাকশব্জি বা অন্যান্য সামগ্রী একবার ব্যবহার করেছেন তাঁরা জানেন বাজারের সাধারণ শাকশব্জির সঙ্গে এগুলোর পার্থক্য।এই জৈব শাকশব্জির হাট সম্পর্কে বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার জানালেন, আমাদের এই হাটে চাল, আটা, ডাল, মুড়ি, বাদাম, মধু, ঘি, পনির থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, সরষের তেল, সব ধরনের মশলা এবং শাকশব্জি পাওয়া যায়। আমাদের এখানে পাওয়া যায় ‘তুলাইপাঞ্জি চাল’ ও। খাদ্যরসিকরা জানেন এই চালের কথা।
আরএখানে বিক্রিত সবকিছুই গোবর সার, কেচো সার, নিম তেল ইত্যাদি ব্যবহার করে উৎপাদিত হয়। আমাদের হাটে যেসব বিক্রেতারা আসেন তাঁরা প্রত্যেকেই সরকারি আধিকারিকদের তত্বাবধানে চাষ করেন এবং নিজেদের উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে ‘টোনা’ সংস্থার নাম। প্রায় চল্লিশ বছরের বেশী সময় ধরে অত্যন্ত সততা এবং সুনামের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। আমাদের এই হাটে পাওয়া যায় ‘নীরা’।
যাঁরা তৈরী করেছেন নারকোল গাছের ফুল থেকে চিনি এবং গুড়। এই দুটি প্রোডাক্টেই গ্লাইসেমিক ফ্যাক্টর বাজারের সাধারণ চিনি এবং গুড়ের তুলনায় খুবই কম। ফলে ডায়াবেটিকদের জন্য ‘নীরা’ আদর্শ বিকল্প বলা যেতেই পারে।
যেহেতু এই হাটের সমস্ত জিনিসপত্রে কোনোরকম ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহৃত হয় না তাই এগুলো খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
যা এই মূহুর্তে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
যাঁরা সচেতন, তাঁরা দূরদূরান্ত থেকে বিধান শিশু উদ্যানের জৈব হাটের জিনিসপত্র নিয়মিত কিনে নিয়ে যান। গৌতম বাবু জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন
আসুন আমরা সবাই বিষমুক্ত খাদ্যসামগ্রী ব্যবহারে অভ্যস্থ হয়ে উঠি। কারন আগামী দশ বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক প্রোটোকল অনুযায়ী বিশ্বের সমস্ত দেশকে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক বর্জিত জৈব খাদ্যসামগ্রী উৎপন্নের নিশ্চয়তা দিতে হবে। এটি একটি আন্দোলনের পর্যায় নিয়ে যেতে হবে সারা বিশ্বকে। আগামী রবিবার ৫ই এপ্রিল সকাল দশটায় আবার এই হাট বসবে বিধান শিশু উদ্যানে।
Be First to Comment