Press "Enter" to skip to content

সত্যজিৎ রায় ‘পথের পাঁচালী’ সৃষ্টি করে বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ণ পরিচয় আবিষ্কার করেছিলেন……

Spread the love

————–শ্রদ্ধাঞ্জলি : সত্যজিৎ রায়————-

বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, ঝড়-বৃষ্টির মাস হিসেবে বিখ্যাত হলেও এই বৈশাখেই জন্মেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর— যাঁকে নিয়ে আমাদের গগনস্পর্শী অহঙ্কার। আবার এই বৈশাখেই আমরা পেয়েছিলাম আরও একজনকে, স্বাধীনতা উত্তর এই মহাদেশের মানুষ যাঁকে নিয়ে বারবার আত্মগর্বী হতে পেরেছে এবং আমাদের সীমাবদ্ধ জীবন আর নানা সমস্যা সংকটে আশ্লিষ্ট থেকেও যিনি নিজেকে উন্নীত করতে পেরেছিলেন বিশ্বমানে— তিনি সত্যজিৎ রায়। বৈশাখ যাঁকে বাঙালি জীবন, সমাজ আর সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠ ফসল হিসেবে উপহার দিয়েছিল, সেই বৈশাখেই তিনি চলে গিয়েছিলেন। বৈশাখের এক সায়াহ্ন আমাদেরকে এক মুহূর্তে রিক্ত করে দিয়েছিল। বৈশাখ মাস তাই কখনো কখনো বড় বেদনার।

যে আলোকবর্তিকা ছিল আমদের আশা এবং আশ্বাস, আমাদের গর্ব আর গৌরব, আমাদের যাবতীয় সৃষ্টিশীল কর্মের নিরন্তর প্রেরণা— সেই আলো চিরতরে নিভে গেল একদিন।বিদ্যাসাগর যেমন ‘বর্ণ পরিচয়’ লিখে এই অন্ধকার-অশিক্ষার দেশে সাক্ষরতার প্রথম সোপান তৈরি করেছিলেন, সত্যজিৎ রায়ও তেমনি ‘পথের পাঁচালী’ সৃষ্টি করে বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ণ পরিচয় আবিষ্কার করেছিলেন। চলচ্চিত্র তাৎক্ষনিক বিনোদনকে ছাপিয়ে উঠে এলো জীবনের কাছে। চলচ্চিত্রে মূর্ত হলো জীবন আর জীবনের জটিলতা, ব্যাখ্যা, তার রহস্যময়তা, তার নিবিড় নির্যাস এবং মূচ্ছর্না।

নার্সিং হোমের বাইরের প্রকৃতিতে যখন বৈশাখি হাওয়ার মাতামাতি, মেঘলা আকাশ থেকে যখন ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দিনের নিস্তেজ আলো ঠিক তখনই, তাঁর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। মৃত্যু নামক যে অদৃশ্য নিয়তিকে এতদিন কাঁচের দরজার বাইরে আটকে রাখা গিয়েছিল এইবার সে ঢুকে পড়ল ঘরে, গ্রাস করল বাঙালির শেষ সম্বল সত্যজিৎ রায়কে— নিঃস্ব করে দিয়ে গেল আমাদের অহঙ্কারকে। আমরা রিক্ত হলাম।

সত্যজিৎ রায় ১৯৯২ সালের আজকের দিনে (২৩ এপ্রিল) কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.