Press "Enter" to skip to content

শ্রী বিষ্ণু শাপ গ্রস্থ হয়েই পৃথিবীতে রাম হয়ে জন্ম নেন……

Spread the love

——-রাম নবমীর ভিড়ে নাস্তানাবুদ প্রশাসন-–—–

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়:কলকাতা, ২এপ্রিল ২০২০ আজ রাম নবমী। রাজ্যের বহু প্রান্ত থেকে খবর এসেছে, করোনা নির্দেশ অমান্য করে ভিড় হচ্ছে রাম মন্দিরে। বালুরঘাটে নাকি এক মেলাও বসেছে সেখানে। ভিড়ও হচ্ছে। প্রশাসন কি করে মেলার অনুমতি দিলো এই প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।
রাম নবমী। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের নবমীতে পালিত হয় রামের জন্মদিবস। বাসন্তী পুজোর নবরাত্রিও শেষ হয় এই দিনে।
রামভক্তরা এই দিনে সকালে স্নান করে সূর্যদেবকে জল বা দুধ দিয়ে নৈবেদ্য দেন। তুলসি পাতা,পদ্ম ফুল, চন্দন, গঙ্গাজল, ফুল, ধান ইত্যাদি দিয়ে আরাধ্য দেব রামকে পুজো দেন। দেওয়া হয় ফল আর মিষ্টি। কেউ রামকে হলুদ রঙের পোশাক অর্পণ করেন। কপালে দেন তিলক। রাম ভক্তরা এদিন রাম চরিত পড়েন। অনেকে উপবাস করেন। অযোধ্যায় এদিন নিষ্ঠার সঙ্গে উদযাপন করেন রাম জন্মোৎসব। রাম অবতার হয়ে আসেন অধর্মের বিনাশের জন্য। রাবণ অধর্মের প্রতীক। রামচন্দ্রকে বলা হয় শ্রীবিষ্ণুর অংশ। কিন্তু ধরাধামে শ্রীবিষ্ণু যে শাপগ্রস্থ হয়ে রামচন্দ্ররূপে জন্ম নেন সেটা জানেন কি? আপনাকে পাতা ওল্টাতে হবে পঞ্চানন তর্কালঙ্কারের যোগা বশিষ্ঠ রামায়ণ।

এখানে বলা হয়েছে ব্রহ্মার মানসপুত্রদের অন্যতম সনৎকুমার সবসময় পরমাত্মার চিন্তায় বিভোর থাকেন। একবার শ্রীবিষ্ণু ভ্রমণে সনৎকুমারের বাসস্থান ব্রহ্মলোকে আসেন। ব্রহ্ম চিন্তায় মশগুল সনৎকুমার অতিথি শ্রী বিষ্ণুঁকে বন্দনা করেন না। রেগে গিয়ে শ্রী বিষ্ণু সনৎকুমারকে শাপ দিয়ে বলেন, তুমি কার্য্জ্ঞানহীন। তোমার চেষ্টাও নিষ্কাম গর্বের সূচক । অতএব তুমি কামাসক্ত ও শরজন্মা কার্তিকেয় নামে খ্যাত হও। সনৎকুমারও পাল্টা শাপ দেন। আপনার সর্বজ্ঞানী ভাবের গর্ব। কিছুদিন অজ্ঞানী হয়ে থাকুন। ধরাধামে মানুষ হয়ে জন্মান। শ্রীবিষ্ণু আরও তিনজনের অভিশাপে ধরায় আসতে বাধ্য হন। সেই বিষ্ণু নারী হত্যাও করেন। ভৃগুপত্নী বিষ্ণুর হাতে নিহত হলে ভৃগু মুনি অভিশাপ দিয়ে বলেন, তুমি পৃথিবীতে মানুষ হয়ে জন্মাবে। এবং স্ত্রী সুখ থেকে বঞ্চিত হবে। শ্রী বিষ্ণুর হাতে সতীত্ব বিসর্জন দিতে হয় বৃন্দাকে অনিচ্ছায়। তাই তিনিও বিষ্ণুকে শাপ দেন। আবার একটি পুরাণে উল্লেখ আছে পয়োস্নি নদীতীরে অবস্থিত দেবদত্ত পত্নী নৃসিংহ রুপী বিষ্ণুকে দেখে মারা যান। তিনিও বিষ্ণুকে মানুষরূপে জন্মানোর অভিশাপ দেন।

আর এক পুরাণ বলছে, একবার চিরকুমার নারদ এক সুন্দরী রাজকন্যার প্রেমে পড়েন। তাঁর সাধ জাগে নারায়ণের রূপ নিয়ে স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত হতে। তাই তিনি শ্রীবিষ্ণুর কাছে তাঁর রূপ ধার চান। শ্রী বিষ্ণু তাঁর রূপ ধার দিতে রাজি হন। মহর্ষি নারদ মনের আনন্দে হাজির হন স্বয়ংবর সভায়। রাজকুমারী বরমাল্য নিয়ে নারদের কাছে গিয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকেন। রাজকন্যা বলেন, মানুষের শরীরে বাঁদরের মুখ কেন? নারদ বুঝলেন, পরিহাসচ্ছলে সেই বিষ্ণু এই কাজ করেছেন। রাগে দুঃখে বিষ্ণুর নিবাসস্থল বৈকুণ্ঠস্থানে গিয়ে নারদ তাকে অভিশাপ দেন, বিষ্ণু যেন অবতার হয়ে জন্মাবেন এবং স্ত্রী বিরহে ভুগবেন। রামায়ণ পড়লে দেখবো সত্যি রামচন্দ্র স্ত্রী বিরহে ছিলেন। বিবাহিত জীবন সুখের ছিল না।
যারা বিশ্বাস করেন রামচন্দ্র সত্যি জন্মেছিলেন পৃথিবীতে, তাদের বলি, ঐতিহাসিকদের একাংশ হিসেব কষে বলছেন, রামের জন্ম ৭৩৫৯ খ্রিস্টপূর্ব আগে। তারিখ ৪ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার। শেষপর্যন্ত একটি প্রশ্ন ওঠে , স্ত্রী হিসেবে সীতা কি রামের কাছে যোগ্য সম্মান পেয়েছেন? ধর্মকে রক্ষা করতে রামচন্দ্র রাবণকে বধ করেছেন। কিন্তু রাবণ কি সত্যি ভিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজব আগামীকালের পর্বে।
(শেষ পর্ব আগামীকাল)

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.