বিশেষ প্রতিনিধি : মায়াপুর, ৩০ মার্চ ২০২৩। ইসকনের প্রধান কেন্দ্র শ্রীধাম মায়াপুরে সপ্তম বার্ষিক India Tribal Convention ( জনজাতির সন্মেলন) আগামী ৬,৭ ও ৮ ই এপ্রিল ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে। ভারতবর্ষের ৯ টি রাজ্য থেকে প্রায় ৩,০০০ জনজাতির প্রতিনিধি (আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া মানুষ) এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তাদের থাকা, খাওয়া ও নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে জানালেন আয়োজকরা। তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, শিক্ষা, চিরাচরিত ভাবধারার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে এই ৩ দিন ব্যাপী। তাদের সহজ সরল জীবন যাপন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মঞ্চে ফুটিয়ে তোলা হবে। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সকলের প্রতি যে করুনা প্রদর্শন করেছেন তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তারাও যেন বর্তমান সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে একাত্ম ভাবে চলতে পারে, তারা কেউই পর নন, সকলেই তারা সমাজের একান্ত আপনজন সেটি যাতে তারা অনুভব করতে পারে, সেটিই ফুটিয়ে তোলা এই সন্মেলনের আসল উদ্দেশ্য। বিভিন্ন রাজ্যে জনজাতির উন্নতি কল্পে যে সমস্ত অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ স্বয়ং ফিল্ডে কাজ করছেন তারা তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ মনোজ্ঞ ভাষন দেবেন, বিভিন্ন বিষয়ের উপর সেমিনার হবে।
ভারতবর্ষের ৯ টি রাজ্যের যেমন- (গুজরাট, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, মনিপুর, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও পশ্চিমবঙ্গের) পিছিয়ে পড়া জনজাতি আদিবাসীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষ্ণভাবনায় গড়ে তুলতে ইসকন সারাবছর ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে। এই সকল রাজ্যগুলির জনজাতি আদিবাসী শিশুদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে মোট ১৯০ টি পাঠশালা ও ১৮ টি স্কুল চলছে, যেখানে প্রায় ৫,৫০০ জন ছাত্রছাত্রীদের জন্য ২৮০ জন শিক্ষক- শিক্ষিকা শিক্ষা দান করে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের জনজাতি অধ্যুষিত পিছিয়ে পড়া জেলাগুলি যেমন- পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জলপাইগুড়ি প্রভৃতি জেলায় আদিবাসী শিশুদের শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে প্রায় প্রতিটি জেলায় পাঠশালা নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে প্রায় ৪০-৪৫ জন শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষাদান করেন এবং তাদের এই পাঠশালায় থাকা ও খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে।
ইসকনের উদ্যোগে এই আদিবাসী এলাকায় সারাবছর ধরে চলে মেডিক্যাল ক্যাম্প, স্বাস্থ্য সচেতনতা শিবির, সামাজিক সুরক্ষা ও পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা। এছাড়া প্রতিবছর শীতের সময় জনজাতি আদিবাসী এলাকার মানুষদের ইসকনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়ে থাকে। পিছিয়ে পড়া এই মানুষদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে স্বাস্থ্য -পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে, এবং ঔষধের সরঞ্জাম বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সমগ্র ভারতবর্ষ ব্যাপী এই পিছিয়ে পড়া জনজাতি আদিবাসীদের স্বাস্থ্য-সম্মত শিক্ষা, তাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের যথোপযুক্ত সংরক্ষণ এবং তাদের মধ্যে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভক্তিভাব ও সাম্যবাদ গড়ে তোলার আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে ইসকন এগিয়ে চলেছে, ইসকন কতৃপক্ষের অনুরোধ আপনারাও এই মহান উদ্যোগে সামিল হোন।
Be First to Comment