————–আজ মহান মে দিবস—————
বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, মেহনতি মানুষের নিজেদের একটি দিন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের রক্তক্ষয়ী আত্মত্যাগের এক সংগ্রামী ইতিহাস। মালিকদের অমানবিক আচরণ, নির্যাতন-নিপীড়ন, যখন- তখন ছাঁটাই, কম মজুরির মাধ্যমে শ্রমিকদের শ্রম-শোষণের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ ওঠে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে ১৮৮৬ সালে।
শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, কাজের সময় নির্ধারণ, ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার মাধ্যমে শ্রমিক-অধিকার আদায়ের প্রথম সংগ্রামে, মিটিং-মিছিল-বিক্ষোভ করায় নেতৃত্ব দেওয়ার অপরাধে কয়েক শ্রমিক নেতাকে দেয়া হয় মৃত্যুদন্ড, কার্যকর করা হয় প্রকাশ্যে ফাঁসি দিয়ে।
বলা বাহুল্য, সেসব শ্রমিক-নেতাদের আত্মদান বৃথা যায়নি। তাদের দেখানো পথ ধরেই আসে শ্রমিক আন্দোলনের সাফল্য। তাদের ত্যাগের স্বীকৃতি আসে বিরামহীন আন্দোলনের পথ ধরে। ১লা মে স্বীকৃতি পায় শ্রমিক দিবস হিসেবে। শ্রমিক-মেহনতি মানুষের যতটুকু অধিকার আজ স্বীকৃত তা শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমিক আন্দোলন, নেতাদের আত্মত্যাগের পথ ধরে পর্যায়ক্রমিক আন্দোলনের ফসল।
তবে স্বীকার করতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয় যে, প্রায় ১৩২ বছর পরও শ্রমিকরা, মেহনতি মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকারের নীতিগত স্বীকৃতি পেলেও স্বীকৃত অধিকারের সামান্য অংশও পায় না কর্মক্ষেত্রে। শুধু বাংলাদেশ নয়- বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশে মালিকদের কায়েমী স্বার্থে যখন আঘাত লাগে শ্রমিকদের স্বীকৃত অধিকারের অনেকটাই হয় তখন ভূলুণ্ঠিত।
উন্নয়নের প্রতিটি ধাপে শ্রমিকের ঘামের শ্বেত জমে আছে। ব্যক্তি পর্যায়ে বাস্তব অনুভব ততটা গভীর না হলেও সমষ্টিগত, জাতীয় অনুভব কিন্তু তাই। যে কারণে শ্রমিকরা এখন সম্মান এবং মর্যাদা পাচ্ছে। মেহনতি মানুষ, শ্রমজীবী মানুষ তাদের অধিকারের রক্ষাকবচ অনেকটাই হাতে পেয়েছে। স্বীকৃতি পেয়েছে তারা শিল্প কারখানার মালিক নয়- কিন্তু দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের অংশীদার।
জয় হোক মেহনতি মানুষের…
Be First to Comment