অমর মিত্র : বিশিষ্ট সাহিত্যিক, কলকাতা, ২৬ মার্চ, ২০২৪। ১৯৩৩ সালে জন্ম এই দিনে। প্রয়াণ ২০০১ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর। আজ ২৫শে মার্চ, শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ৯০ তম জন্মদিন পূর্ণ হলো। ৯১ পূর্ণ করলেন। ৬৮ বছর কয়েক মাস পরে আমাদের কাছে তাঁর বয়স আর বাড়ছে না। আমরা দেখিনি তাঁকে আর। চলেই গেলেন বড় পিসেমশায়ের ডাকে মোরেলগঞ্জের পথে। কিংবা হাজরা বজরাদের সন্ধানে ক্যানিং লাইনে চম্পাহাটির খালপাড়ে। জীবনে জীবন কীভাবে যোগ হয় তা শ্যামলবাবুর গল্প উপন্যাস পড়লে প্রত্যয় হয়। তিনি ছিলেন সজীব এক মানুষ, জীবন নিয়ে খেলা করা মানুষ। কুবেরের বিষয় আশয়, ঈশ্বরীতলার রূপোকথা, শাহজাদা দারাশুকো থেকে দশ লক্ষ বছর আগে সবই শ্যামলবাবুর সেই লেখা যা একবারই লেখা হয়। দ্বিতীয়বার হয় না। দেশে যখন ঘনিয়ে উঠছে ধর্মীয় বিদ্বেষ, তিনি লিখলেন ইতিহাসের মহত্তম এক চরিত্র দারাশুকোর কথা। সামাজিক দায় একে বলে। ইতিহাসের গালগপ্পো লিখতে বসেননি তিনি। সৃষ্টিশীলতার চূড়ান্ত এই উপন্যাস। দেশভাগ নিয়ে তিনি লিখলেন “আলো নেই”। এও লেখকের দায়। দেশ যখন পুড়ছে, তখন চোখ বুঁজে থেকে যুবকের সহিত যুবতীর দেখা হইলো লেখা, লেখকের কাজ নয়। পরী, চন্দনেশ্বর মাচানতলায়, দখল, হাজরা নস্করের যাত্রাসঙ্গী, এক সুূদখোর বেকারের কাহিনি বা সাক্ষী ডুমুরগাছ এমন গল্প যা আমাকে সারাটাজীবন আবিষ্ট করে রেখেছে। রাখাল কড়াই গল্পটির জন্য আমি কতবার শ্যামলবাবুকে প্রণাম করেছি। আমি এত বয়সেও তাঁকে ফিরে পড়ি। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছিলাম তাঁর কাছ থেকে, গাঁওবুড়ো গল্পের জন্য। ১৯৭৭ সালের কথা। সে কথা বহুবার বলেছি, আর আজ নয়। আজ শ্যামলকে নিয়ে যত কথা। শ্যামলদা, সকলে মিথ্যে বলে, সাহিত্যের পাঠক বলে না। তারা খুঁজে বের করে আপনাকে পড়ে। কারা তারা? অচেনা পাঠক। মনের নিভৃতে রেখে আপনাকে পড়েই চলে। মনে হয় ‘দশলক্ষ বছর পরে’ আখ্যানটিতে কোনো এক গ্রহান্তরের মানুষ এসে রেখে গেছে তার জীবনের চিহ্ন। আপনার সব লেখাই তেমন মনে হয় আমার। এসেছিলেন। চলে গেছেন। এখন দূর ব্রহ্মাণ্ডের এক ছায়াপথে হেঁটে চলেছেন। অ্যান্ড্রোমিডা নক্ষত্র আপনার আশ্রয়। সেই কথাও পড়ে নিতে পারি আপনার গল্প, উপন্যাসে। আপনার কাছে আমার শিক্ষা। আপনার সঙ্গে মিশে শিখেছি, জীবনকে কীভাবে বহমান করে তুলতে হয়, অসতের সঙ্গ পরিহার করতে হয় একা হয়ে গেলেও, নিজ ধর্মে স্থিত থাকতে হয়। লেখাই সব প্রত্যাখান, সব দুরভিসন্ধির জবাব। সব অপমানের জবাব। প্রণাম আপনাকে।
শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন সজীব এক মানুষ, জীবন নিয়ে খেলা করা মানুষ। কুবেরের বিষয় আশয়, ঈশ্বরীতলার রূপোকথা, শাহজাদা দারাশুকো থেকে দশ লক্ষ বছর আগে সবই শ্যামলবাবুর লেখা…।
![](https://newsstardom.in/wp-content/uploads/2024/03/FB_IMG_1711478311347.jpg)
More from BooksMore posts in Books »
- মায়ের কলমে নতুন করে প্রাণ পাচ্ছে র্যাগিংয়ের শিকার সৌরদীপ….।
- কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনাসভা মধুসূদনকে নিয়ে…..।
- Manisha Gir Receives Golden Book Award for her book ‘ Hema – Hamida’….
- জার্মানিতে নেতাজি কন্যা অনিতা বসু পাফ কে সংবর্ধনা দিল ‘লিগ্যাল এইড ফোরাম’….।
- Padma Vibhushan Asha Bhosle Honored at the Grand Launch of ‘SVARSVAMINI ASHA….
- A TRIBUTE TO MY FRIEND,UTPAL CHATTERJ EE,’A MAN FOR ALL SEASONS…..
More from InternationalMore posts in International »
- সুপার সিক্সের আশা জিইয়ে রাখল সাদা কালো শিবির….।
- বরানগরে তরুস্তুতি….।
- এখনো ২৪ এ জুলাই ২০কোটি বাঙালির কাছে বিশেষ দিন….।
- আশা অডিও প্রথমবার নিয়ে আসছে অডিও স্টোরি যেটা আশা অডিওর ইউটিউব চ্যানেলে শোনা যাবে…।
- আড্ডার মধ্যে হঠাৎ শমিত ভঞ্জ (বুবুর) গলা ছেড়ে গান গেয়ে ওঠা “অশ্রু নদীর সুদূর পারে ….।”
- মোহনবাগান মাঠে প্রাক্তন ফুটবলার একাদশ ও প্রেস ক্লাব একাদশের মধ্যে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ….।
More from Writer/ LiteratureMore posts in Writer/ Literature »
- The Golden tree of Indrajal….
- কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনাসভা মধুসূদনকে নিয়ে…..।
- Manisha Gir Receives Golden Book Award for her book ‘ Hema – Hamida’….
- জার্মানিতে নেতাজি কন্যা অনিতা বসু পাফ কে সংবর্ধনা দিল ‘লিগ্যাল এইড ফোরাম’….।
- বাংলা অনুবাদে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত পুস্তক নিয়ে আলোচনা হল সাহিত্য অকাদেমির প্রেক্ষাগৃহে…..।
- গিরিশ চন্দ্র ঘোষের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মতিলাল রায় রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের আর্শীবাদ লাভ করেন….।
Be First to Comment