রাজর্ষি মজুমদার: কর্ণধার, দেব সাহিত্য কুটির।কলকাতা, ১৭মে, ২০২০। এই দীর্ঘ লকডাউনে গৃহে বন্দি থাকার সময় নিজের ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে যায়। যখন গ্রীষ্মের ছুটিতে আমাদের একা একা জানালার ধারে বসে এক মাসের বেশি সময় ছুটি কাটানো প্রায় অসম্ভব ছিল। স্কুলের দেওয়া হোমওয়ার্ক এবং হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য প্রতিদিন পাতার পর পাতা লিখে যেতে হতো। সেই সময় আমাদের কাছে বিনোদনের জন্য বিশেষ কিছু ছিল না। মাঝে মাঝে দাদু দিদার কাছে নানা রকমের গল্প শুনতাম।
আজকের দিনের মতো টিভির পর্দায় কার্টুন দেখা বা মোবাইলে ভিডিও গেম খেলার কোনো সুযোগ ছিল না। আজকের দিনের মতো সেই সময়ও গান গাওয়া আঁকা নাচের ক্লাসে অনেকেই শিক্ষা গ্রহন করতো। সেই ছুটির সময়কালে আমাদের বন্ধুদের সাথে কোনো ভাবেই যোগাযোগ রাখতে পারতাম না। খেলাধুলার এত আয়োজন আজকের দিনের মতো ছিল না। এত কিছু নেই সত্ত্বেও আমরা কখনোই কোন রকম অভিযোগ করিনি। আমাদের শৈশবের দীর্ঘ সময় বাড়িতে থেকেই কাটিয়ে দিয়ে ছিলাম। এই সব নিয়ে কোনোদিন কি আমরা চিন্তা করে দেখেছি! আমার ভাবনা এসো কিছু কথা বলি হাতে হাত ধরি একসাথে চলি – কথাটি হয়তো কোনো স্বনামধন্য লেখক বা লেখিকার কলম থেকে বের হয়নি, দরকারই বা কিসের।
সব সময়েই যে আমরা কোনো মনীষীদের অমৃত বাণী দ্বারা উৎসাহিত হয়ে জীবন জোয়ারে পরিচালিত হবো, এই রকম কোনো কথা ভাবার কারণ নেই। আজকের দিনের করোনা পরিস্থিতি গত প্রায় ১০০ বছরের মধ্যে আমাদের শ্রদ্ধেয় মনীষীদের মোকাবিলা করতে হয়নি। তাই হয়তো তাঁরা কোনো ফর্মুলা রেখে যেতে পারেননি। সেই কারণে আমাদেরই পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের কে দুঃস্থ ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এই দুঃসহ পরিবেশ থেকে তাদের বার করে আনতেই হবে। ইতিমধ্যে আজকের ঘোষণায় আবার দেশ জুড়ে ১৫ দিনের লক ডাউন বেড়ে গিয়ে ৩১শে মে পর্যন্ত্য হয়ে গেল।
অর্থাৎ ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা পুনরায় গৃহে বন্দি। অনেক শিশু কিশোররা এই পরিস্থিতিতে মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে পড়েছে। পরিবারের দায়িত্ব এই শিশু কিশোরদের বেশি সময় দিয়ে আনন্দে রাখার চেষ্টা করা।
Be First to Comment