————————– সাগুদানা———————
মৌমিতা মাইতি: ১০ জুন, ২০২০। সাগুদানার সাথে কমবেশি আমরা সবাই পরিচিত।
রোগীর পথ্য, বিভিন্ন পদের মূল উপাদান হিসেবে সবার বাড়িতেই আগমন ঘটে এই দানার। সব চেয়ে মজার বিষয় এই ‘সাগুদানা’ ফল, ফুল, বীজ কোনটা থেকেই আসেনা! এর উৎপত্তি মূলত এক প্রকার তাল গাছের মজ্জা থেকেই। সাগুদানাকে ইংরেজিতে Sago pearls বা “মুক্তো সাগু” বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Metroxylon sagu. এই Metro শব্দটি গ্রীক থেকে এসেছে। যার অর্থ “বৃক্ষ অভ্যন্তরের নরম অংশ”। নামের সাথে সাগুর উৎপত্তির মিল আছে।
সে হিসেবে ‘সাগু’ শব্দটি বাংলা নয়। বিদেশী শব্দ। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ যথাক্রমে, ইন্দোনেশিয়া, নিউ গিনি, পাপুয়া নিউ গিনি, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সুমাত্রা অঞ্চলে জন্মে থাকে এই গাছ।
এই গাছটি দেখতে আমাদের দেশের তাল ও সুপারি গাছের মাঝামাঝি ধরনের। লম্বায় প্রায় ২৫ মিটার তথা ৫৫ হাত পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। এই গাছে জীবনে মাত্র একবার ফুল আসে। গাছের স্বাস্থ্য-ভেদে একটি গাছ ৭ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ফুল দেয়। যখন ফুল আসার সম্ভাবনা দেখা দেয়, তখন গাছটিকে কেটে ফেলতে হয়।
সাধারণত সাগুর গাছের ভিতরের অংশ নরম মজ্জা বিশিষ্ট ও আঁশযুক্ত। গাছ কাটার পরে লগ গুলোকে চিরে জলে ভিজিয়ে রেখে দেওয়া হয় কিংবা জল দিয়ে কচলে এটার মজ্জা আশ থেকে আলাদা হয়ে যায়। যা আটার গুড়োর মত সাদা ও মিহি হয়। জলে ভিজালে ভুট্টার কাইয়ের মত আঠালো দেখায়। মূলত এটাই সাগুর মূল কাঁচা মাল। পরবর্তীতে মেশিনের সাহায্যে নির্দিষ্ট আকৃতি দিয়ে সাগু দানায় পরিণত করা হয়। একটি সাগু গাছ থেকে প্রায় ১৫০ থেকে ৩৫০ কেজি পর্যন্ত সাগু গুড়ো পাওয়া যায়।
সাগু আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ভেষজ। সাগুর নির্দিষ্ট কোন স্বাদ নেই। তাই এটাকে যার সাথে যোগ করা হয়, তারই স্বাদ গ্রহণ করে। ফলে আইসক্রিম, শরবত, পুডিং, চা সহ নানাবিধ মিষ্টান্ন দ্রব্যে এটার ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে।
ছবি- সংগৃহীত।
Be First to Comment