Press "Enter" to skip to content

মূল রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ছাত্র রাজনীতির গুরুত্ব নেই- দিলীপ ঘোষ

Spread the love

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: কলকাতা, ২৯শে জানুয়ারি ২০২০ এতদিন কলকাতা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের রাজনৈতিক রং মাখার ব্যাপারটি ছিল ব্যক্তিগত। কিন্তু সাংবাদিকরাও যে নিরপেক্ষ নন, বরং দলীয় আনুগত্যে আছেন সেটা পরিষ্কার হলো মঙ্গলবার প্রেসক্লাবে দিলীপ ঘোষের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে।
প্রেস ক্লাব পরিচালন কমিটি ঘোষিত না হলেও রাজ্যের শাসক দলের প্রতি দুর্বলতা যে রাখেন তা বুঝতে কারও অসুবিধে হয় না। কিন্তু রাজ্য বি জে পি সভাপতি পদে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রেস ক্লাবের সদস্য সাংবাদিক চার্লস যখন রন্তিদেব সেনগুপ্ত কে পাশে বসিয়ে দীলিপ ঘোষের স্তুতি করেন তখন স্পষ্ট হয়ে যায়, প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সদস্যদের আয়োজনে দিলীপ বাবুর সম্বর্ধনা নয়, সম্বর্ধনা হচ্ছে বি জে পি সমর্থক সাংবাদিকদের উদ্যোগে।
তবু প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণে রাজ্যের সাংসদ দিলীপ বাবু আসবেন কিন্তু ক্লাবের কার্যকরী কমিটির তরফে কেউ তাঁকে স্বাগত জানাবেন না বিষয়টি দৃষ্টিকটু হয়। তাই ধর্ম সংকটে পড়েও প্রেস ক্লাব সভাপতি ক্লাবের দরজায় ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানিয়ে কর্তব্য সারেন। পরে সম্বর্ধনা সভার আশপাশে তাঁকে দেখা যায় নি। সভার শুরুতে এই ব্যাপারে একটা আভাসও দেন বি জে পি ঝান্ডা কাঁধে তুলে নেওয়া সাংবাদিক চার্লি। সাংবাদিক পরিপূর্ণ ক্লাবের হলে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আসেন জয়প্রকাশ মজুমদার, সল্টলেকের সব্যসাচী দত্ত প্রমুখ।

সাংবাদিকদের তরফে দিলীপ ঘোষকে চিরাচরিত পুষ্প স্তবক এবং উত্তরীয় পরিয়ে সম্বর্ধনা দেওয়ার পর হতে তুলে দেওয়া হয় প্রতীকী তলোয়ার এবং কলম। তলোয়ারের চেয়ে কলম শক্তিশালী প্রবাদটি মনে রেখে এই উপহার তুলে দেওয়া হলেও আদতে দিলীপ বাবু তলোয়ারের চেয়ে কলমকে সত্যি শক্তিশালী মানেন কিনা সেই সম্পর্কে কিছু না বললেও একথা বলেন যে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মেলামেশা করতে ভালোবাসেন। কারণ সাংবাদিকরা অনেক ঘটনার সাক্ষী। তাদের কাছ থেকে অনেক শেখার আছে।
সাংবাদিকরা যখন দীলিপ বাবুকে অনেকদিন পর মুখ্যমন্ত্রীর ছবি আঁকা নিয়ে প্রশ্ন করেন, দিলীপ বাবু এক নয়া তত্ত্ব দেন। তিনি বলেন, মানুষ যখন হতাশার শিকার হন তখন গান করেন, ছবি আঁকেন, গিটার বাজান। হল জুড়ে তখন নিস্তব্ধতা। তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের ভালোবাসি, পছন্দ করি, আপনারা আমাকে পছন্দ করেন কিনা জানিনা তখনও হল জুড়ে নিস্তব্ধতা। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে আরও বলেন, সুদীপ্ত রায় তো জেলে। এখন মুখ্যমন্ত্রীর ছবি কিনবে কে? তাঁর সঙ্গে এখন মানুষ নেই, তাই শিল্পী বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সময় কাটাচ্ছেন।
এদিনের অনুষ্ঠানে দুটি বেফাঁস মন্তব্যও করে ফেলেন দিলীপ বাবু। তিনি বলেন, দিল্লিতে শাহিনবাগে মাইনাস চার ডিগ্রীতে রাস্তাতে বসে শিশু কোলে করে কিছু মহিলা বসে বিক্ষোভ করছেন, কিন্তু ঠান্ডায় কেউ মরছে না ? কোন অমৃত ফল তারা খেয়েছে?
এই প্রতিবেদক প্রশ্ন রাখেন, যাদবপুর জে এন ইউ এর ছাত্ররা পড়াশুনো না করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। কয়েকদিন আগে গুজরাটের গান্ধী নগরে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংসদের নির্বাচনে এই প্রথম বাম ছাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবকটি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে এভি বি পি র হাত থেকে । গত পাঁচ বছর ধরে সেখানে জিতেছে বি জে পি ছাত্র সংগঠন।
একটু অপ্রস্তুতে পড়লেও সামলে নিয়ে দিলীপ বাবু জবাব দেন, গুজরাটে বাম কোন নেতা সংগঠন নেই। ছাত্ররা একটু অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসে ।সাময়িক তারা হুজুগে মেতেছে। এটা নিয়ে উল্লসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই । তাছাড়া ছাত্র সংসদ জিতে মূল রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করা যায় না। মুখে অস্বীকার করলেও খোদ প্রধানমন্ত্রীর গড়ে বাম ছাত্রদের উত্থান যে বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা তা বিলক্ষণ বুঝছেন বি জে পি নেতৃত্ব। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে পঞ্চায়েত নির্বাচন হলো।সেখানেও আর এস এস এর প্রাণকেন্দ্র নাগপুরে গোহারান হেরেছে বি জে পি। স্বয়ং নীতিন গড়গড়ির খোদ তালুকেও বিজেপির হার
হয়েছে শোচনীয়ভাবে।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.