মধুমিতা শাস্ত্রী: ২ জুন, ২০২০ঃ ১৪ বছর পর তিহার জেল থেকে মুক্তি পেল জেসিকা লালের হত্যাকারী মনু শর্মা। সেনটেন্স রিভিউ বোর্ডের পরামর্শ মেনে ১ জুন বিকেল ৫টায় তাকে মুক্তি দেন দিল্লির গভর্নর জেনারেল। ২০০৭ সালের ২০ ডিসেম্বর মনু শর্মাকে যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়োছিল উচ্চ আদালত। ৩০ এপ্রিল ১৯৯৯ সালে খুন হন মডেল জেসিকা লাল। হরিয়ানার কংগ্রেস এমপি বিনোদ শর্মার ছেলে মনু শর্মা গুলি করে হত্যা করেছিল জেসিকা লালকে। জেসিকা লাল ছিলেন দিল্লির মডেল ও রেস্তোরাঁকর্মী। ২৯ এপ্রিল ট্যামারিন্ড নামে একটি রেস্তোরাঁয় এক ব্যাক্তিগত পার্টি চলছিল। সেখানে সেলিব্রিটি বারটেন্ডার হিসেবে কাজ করছিলেন জেসিকা। রাত সাড়ে বারোটার পর মনু শর্মা তার তিন সঙ্গীকে নিয়ে রেস্তোরাঁয় গিয়ে মদ চায় জেসিকার কাছে। তিনি জানান বার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মনু শর্মা তাতে কর্ণপাত না করে মদ দিতে জোর করেন। জেসিকা বলেন, মদ শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সময় মনু শর্মা সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করে শূন্যে গুলি ছোঁড়েন। জেসিকা লাল এতে ভয় না পেয়ে নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকেন। সেই মূহুর্তে রেস্তোরাঁকর্মীদের উপস্থিতিতেই জেসিকা লালের কপালে গুলি চালিয়ে দেন রাগে অগ্নিশর্মা মনু। ঘটনা স্থলেই মারা যান জেসিকা। নিম্ন আদালতে এই হত্যামামলার বিচার চলাকালীন রেস্তোরাঁয় উপস্থিত অতিথি ও কর্মীরা সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করেন। সাক্ষীর অভাবে ২০০৬ সালে মনু শর্মা বেকসুর খালাস পান। এরপর সমালোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। রাস্তায় প্রতিবাদের মিছিল নামে। মামলা পুনরায় চালু হলে ৫২ দিন শুনানি চলার পর ২০০৭ সালের ২০ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত মনু শর্মাকে দোষী সাব্যস্ত করে। তার যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা হয়। জেসিকার দিদি সাবরিনা লালের ভূমিকা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাঁর হার না মানা অদম্য চেষ্টায় বোনের হত্যাকারীর সাজা হয়েছিল।
প্রায় দুই দশক পর জেসিকা লাল হত্যাকারী মনু শর্মাকে মাফ করে দিলেন দিদি সাবরিনাও। এত বছর পর মনু শর্মার উপর আর কোন ক্ষোভ নেই সাবরিনা লালের। মনু শর্মা ছাড়া পাওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় সাবরিনা বলেন, ‘আমি জেনেছি যে তিনি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো ভালো কাজ করেছেন, যা আমি মনে করি সংস্কারের প্রতিফলন।’ কেন্দ্রীয় সরকারের কল্যাণ বিষয়ক কর্মকর্তাকে এক চিঠিতে সাবরিনা লেখেন, ‘তাঁর মুক্তির ব্যাপারে আমার আর কোন আপত্তি নেই, কারণ তিনি ১৫ বছর জেলে কাটিয়েছেন।’
Be First to Comment