—-জন্মদিনে স্মরণঃ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর—–
বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ব্রাহ্ম ধর্মের প্রচারক ও দার্শনিক। সামাজিক নানা সংস্কারের পক্ষে তাঁর জোরালো অবস্থান ছিল। তিনি ছিলেন বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহের বিরুদ্ধে। বিধবা বিবাহ চালুর পক্ষে তিনি সামাজিক সম্মতি আদায়ে কাজ করেছেন। তাঁর বাবা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ও মা দিগম্বরী দেবী। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র। পিতার প্রতিষ্ঠিত অ্যাংলো হিন্দু স্কুলে দেবেন্দ্রনাথের পড়াশোনা শুরু হয়। ১৮৩৮ সালে পিতামহীর মৃত্যুকালে তাঁর মানসিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। তিনি উপনিষদ, মহাভারত, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের নানা দর্শন পড়তে শুরু করেন। এর প্রভাবে পার্থিব জীবনের প্রতি অনীহা জন্মে ঈশ্বর লাভের আকাঙ্ক্ষায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। তত্ত্বালোচনার উদ্দেশ্যেই দেবেন্দ্রনাথ তত্ত্ববোধনী সভা প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় তিনি উপনিষদের বাংলা অনুবাদ তৈরি ও প্রকাশ করেন। ১৮৮২ সাল থেকে অক্ষয়কুমার দত্তের সম্পাদনায় এখান থেকেই ‘তত্ত্ববোধনী পত্রিকা’ প্রকাশ হতে শুরু করে। দেবেন্দ্রনাথ ব্রাহ্ম উপাসনা পদ্ধতি বের করেন এবং তা ব্রাহ্মসমাজে চালু করেন। জীবনের শেষদিকে তিনি পুরোপুরি ধর্মচর্চায় মনোনিবেশ করেন। ১৮৬৭ সালে তিনি বীরভূমের ভুবনডাঙ্গা নামে একটি বিশাল ভূখণ্ড ক্রয় করে আশ্রম স্থাপন করেন। এই আশ্রমই আজকের বিখ্যাত শান্তিনিকেতন। ব্রাহ্মধর্ম চর্চা ও উপাসনার জন্য শান্তিনিকেতন স্থানটি তিনি নির্বাচিত করেছিলেন।দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কয়েকটি বিখ্যাত বইয়ের মধ্যে রয়েছে বাংলা ভাষায় সংস্কৃত ব্যাকরণ, জ্ঞান ও ধর্মের উন্নতি, স্বরচিত জীবনচরিত (১৮৯৮), পত্রাবলী। দেবেন্দ্রনাথ ছিলেন যেমন মহৎপ্রাণ, তেমনই উদার হৃদয় ব্যক্তি। এ কারণে ব্রাহ্মসমাজ তাঁকে ‘মহর্ষি’ উপাধিতে সম্মানিত করে।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮১৭ সালের আজকের দিনে (১৫ মে) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment