ভা ই য়ে র ক পা লে প ড় লো ফোঁ টা
বাবলু ভট্টাচার্য : ধর্মগ্রন্থ পুরাণে উল্লেখ আছে- কার্তিকেয় শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমুনাদেবী তার ভাই যমের মঙ্গল কামনায় গভীর ধ্যানমগ্ন হয়ে পুজো করেন। তারই পুণ্য প্রভাবে যমদেব অমরত্ব লাভ করেন।
বোন যমুনা দেবীর পুজোর ফলে ভাই যমের এই অমরত্ব লাভের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে বর্তমান কালের হিন্দু পরিবারের মেয়েরাও এই ভাই ফোঁটার সংস্কার বা ধর্মাচার পালন করেন।
অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তার বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়।
ভাই ফোঁটার দিনে বোনেরা উপবাস রেখে ভাইয়ের কপালে বাঁ হাতের অনামিকা আঙ্গুল দিয়ে চন্দন, ঘি, কাজল, মধু, শিশির দিয়ে ফোঁটা দিয়ে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে থাকে।
ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাদের ভাইদের কপালে চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দিয়ে ছড়া কেটে বলে :
“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা/যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা
কাঁটা যেন সরে না/ভাই যেন মরে না/চন্দ্র সূর্য যতদিন/ভাই যেন বাঁচে ততদিন।”
পশ্চিম ভারতের হিন্দুদের মাঝে এই উৎসব ‘ভাইদুজ’ নামেও পরিচিত। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ‘ভাইবিজ’।
নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত ‘ভাইটিকা’ নামে। সেখানে দুর্গা পূজার বিজয়া দশমীর পর এটিই সবচেয়ে বড় উৎসব।
মহারাষ্ট্রে মেয়েদের ভাইবিজ/ভাই ফোঁটা পালন অবশ্য কর্তব্য। এমনকি যেসব মেয়েদের ভাই নেই, তাদেরও চন্দ্র দেবতাকে ভাই মনে করে ভাইবিজ/ভাই ফোঁটা পালন করতে হয়।
Be First to Comment