সুজিত চট্টোপাধ্যায়: কলকাতা – ছেলেবেলায় রূপকথার গল্পে কূঁচবরণ কন্যা ও তার মেঘবরণ চুলের কথা জেনেছি । জেনেছি বন্দিনী রাজকন্যাকে দুষ্টু ডাইনি লুকিয়ে রেখেছিল বিশাল উঁচু গাছের মগডালে কুটির বানিয়ে। রাজপুত্তুর তাকে উদ্ধারই করতে পারতো না যদি না রাজকন্যে তার একঢাল কালো চুল মেলে ধরত।সেই চুল বেয়েই রাজপুত্তুর পৌঁছে যায় রাজকন্যের কাছে। চুল নিয়ে পড়েছি কবির চুলচেরা সৌন্দর্য্যের বিবরণ।জীবনানন্দ লিখেছেন, চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,,,,,,,যুগ যুগ ধরে প্রেমিক বিশ্ব জুড়ে প্রেমিকার চুলের প্রশংসা করে এসেছে। কবি পাবলো নেরুদা তাঁর প্রেমিকার চুলের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখেছেন- তোমার চুলের বর্ণনায় কাটাতে পারি তামাম জীবন, আঁকতে পারি এক একটির নিবিড় সুন্দরতা,,,,,,
সময় পাল্টেছে।আজ আর শুধু নারী নয়, পুরুষেরও দুর্বলতা বেড়েছে কেশ পরিচর্চার।
চুল পরিচর্চার ইতিহাস আছে আমাদের দেশে প্রাচীনকাল থেকেই।জাপানে , চিনে ক্যামেলিয়া অয়েলের চল ছিল।এই তেলেই মেলে ভিটামিন এ , বি, সি, ই এবং কিছু মিনারেল ।জাপানে যে তেলের নাম সুবাকি।চিনে টি সিড অয়েল।পশ্চিম আফ্রিকার ইতিহাসে আছে – নারকেল, পাম, কোকো ও কাঁচকলার খোসার মিশ্রণের তেল ।যা আফ্রিকান নারী পুরুষ ব্যবহার করতেন ।খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ বছর আগে নারকেল দুধ ফুটিয়ে তেল তৈরি হতো। মিশরে ব্যবহৃত হত হেনা।শোনা যায়, মরক্কোয় অলিভ অয়েলে টিকটিকি ফুটিয়ে মাথায় মাখা হয়।
বিবর্তনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বয়স যত বেড়েছে ,মানব সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে।সৌন্দর্য্যচর্চার অন্যতম বিষয় কেশচর্চার গুরুত্ব বেড়েছে।কিন্তু পাশাপাশি বেড়েছে পরিবেশ দূষণ।যার ফলে স্নানের জল দূষিত।সঙ্গে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। রয়েছে বাজার চলতি কেশ পরিচর্চার সামগ্রী।যাতে রয়েছে ক্ষতিকর কেমিকেল।
যার ফলে বাড়ছে চুলের সমস্যা। উঠছে দ্রুত চুল । চুল ফাটছে অসংখ্য। খুলিতে বাড়ছে খুশকি । একজিমা। এছাড়াও কৃত্রিম উপায়ে চুল শুকানো,কৃত্রিম রং ব্যবহারএসব কারণেও চুল এবং মাথার খুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।তাছাড়া থাইরয়েডজনিত সমস্যার কারণেও চুল নষ্ট হয়।চুল সংক্রান্ত হাজার সমস্যার সমাধানে কলকাতার বাজারে এসে গেলো ক্রিয়ো ডেটক্স ট্রিটমেন্ট।
সোমবার কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত কেশ পরিচর্চাকারী সংস্থা কেরাসোল এর কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে এলেন তরুণ উদ্যোগী মনীষা ও সংকল্প চোপড়া দম্পতি।সঙ্গী বিশিষ্ট মুম্বাই এর হেয়ার স্টাইলিস্ট সেভিও জন পেরিরা।
সাংবাদিকদের এই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি কেশ পরিচর্চার বিভিন্ন প্রোডাক্টের কথা বলতে গিয়ে মনীষা জানালেন, তাঁর সন্তানের মাথার খুলিতে অস্বস্তিকর চুলকানি হতে থাকায় ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা যায় সে একজিমাতে আক্রান্ত। সন্তানের সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে মনীষা কেশ পরিচর্চার কাজে উদ্যোগী হন ।
কেমিকেল মুক্ত সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে মুস্কিল আসনে চোপড়া দম্পতির উদ্যোগ কেশ সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক সমাধান ঘটাবে এমনই দাবি এই সংস্থার। মনীষা শিক্ষাগত যোগ্যতায় কেমিস্ট। তাঁর যোগাযোগ হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হেয়ার স্টাইলিস্ট সেভিও জন পেরিয়ারের সঙ্গে।যৌথ প্রচেষ্টায় শুরু হয় আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী কেশ পরিচর্চার কেমিকেলহীন
সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক নিয়মে তৈরি কিছু প্রোডাক্টস। যা শিশু থেকে বৃদ্ধ,এমনকি সন্তানসম্ভবা মায়েরাও নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। কেশ পরিচর্চার প্রতিটি প্রোডাক্টস এ থাকছে বিভিন্ন ভিটামিন ,মিনারেল ,প্রোটিন, কোলাজেন।যা চুল পড়া, টাক পড়া, চুলকুনিযুক্ত খুলির অস্বস্তি, খুশকি ও কেমিক্যাল ও কৃত্রিম হিট দেওয়ার জন্য দুর্বল চুলের সঠিক পুষ্টি জোগাবে ।স্বাভাবিক চুল, তৈলাক্ত চুল ও শুষ্ক চুলের নির্ভরযোগ্য পরিচর্চার সুযোগ মিলবে কলকাতার স্যেলোনা কেশ পরিচর্চা কেন্দ্রে
Be First to Comment