মধুমিতা শাস্ত্রী: ১৩ জুন, ২০২০। দেশের বর্তমান ব্যস্ততার যুগে প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে হাজারও সমস্যা। এর মধ্যে একটা বড় সমস্যা হল বাচ্চার জেদ ও অবাধ্যতা। আজকাল অনেক বাবা-মাকে বলতে শোনা যায় যে, বাচ্চা খুব জেদি, কথা শোনে না, যখন যা চাইবে সঙ্গে সঙ্গে দিতে হয়। না হলে দেওয়ালে মাথা ঠোকে, চিৎকার চেঁচামেচি করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখনকার দিনে অধিকাংশ বাবা- মা দু’জনেই কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকেন। ফলে সন্তানের সঙ্গে খুব কম সময় কাটাতে পারেন। আবার বেশিরভাগ পরিবার ছোটো। এতে বাড়ির অন্যান্য সদস্য যেমন কাকা, কাকিমা, ঠাকুরমা ঠাকুরদাদা, খুড়তুতো ভাই, বোন এদের সান্নিধ্য থেকে বাড়ির ছোট্ট ছেলেটা বা মেয়েটা বঞ্চিত থাকে। বাবা মা সারাদিন অফিস করে বাড়ি ফিরে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে বাচ্চাটি গুরুত্বহীনতায় ভোগে।
বাচ্চা জেদি হওয়ার কারণ আমরা বাবা মায়েরা শিশুদেরকে নিখাদ অর্থাৎ শুধু মাত্র সন্তানকে একশ শতাংশ সময় দিই না। আমরা হয়তো ফোন বা ল্যাপটপে কাজ করতে করতে বা অন্য কোনো কাজ করতে করতে শিশুর সাথে সময় কাটাই। আর এর ফলে বাচ্চাটি গুরুত্বহীনতায় ভোগে।
আর নিজেকে বাবা মা’র কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্য বা বাবা মা’র দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য শিশু নিজেই কিছু পন্থা অবলম্বন করে। কোনো বাচ্চা চিৎকার চেঁচামেচি করে, আবার কেউ মাটিতে গড়াগড়ি খায়, আবার কোনো বাচ্চা জোরে জোরে মাথা ঠোকে, নিজেকে আঘাত করে। শিশুরা এই সমস্ত পন্থাগুলিকে বাবা মায়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। এই পরিস্থিতিতে বাবা মায়েরা নিরুপায় ও দিশেহারা হয়ে পড়ে।
বাচ্চা জেদি হলে কী করা উচিত?
বাচ্চার জেদকে গুরুত্ব নয়, বাচ্চাকে গুরুত্ব দিন। যে বিষয় নিয়ে বাচ্চা জেদ করছে সেটা একদম গুরুত্ব দেবেন না। যেমন ধরুন কোনো বাচ্চা চকোলেট কেনার জন্য বায়না করছে, সেই মূহুর্তে সেটা তাকে কিনে দেবেন না আর কাঁদলে থামানোর চেষ্টা করবেন না। এতে সে কাঁদলেও গুরুত্ব না পেয়ে আস্তে আস্তে চুপ করে যাবে। ধরুন কোনো বাচ্চা বাবা মায়ের সাথে কোথাও গিয়ে অকারণে ঝামেলা করছে। তখন কোথাও নিয়ে যাওয়ার আগে বাচ্চাকে বলতে হবে যে, তুমি ওখানে ভালো ভাবে থাকলে বাড়ি ফিরে একটা চকোলেট বা অন্য কোনো গিফট পাবে।
আর সারাদিনে কিছুটা সময় বাচ্চার জন্য রাখুন। সারাদিনে অন্তত এক ঘণ্টা সময় বাচ্চার জন্য রাখুন। অন্য কাজের ফাঁকে নয় শুধুই বাচ্চার সাথে খানিকটা সময় কাটান। বাচ্চা কী বলছে তা গুরুত্ব দিয়ে শুনুন।। দেখবেন বাচ্চার জেদ আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে।
Be First to Comment