Press "Enter" to skip to content

ফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়েই কি সংক্রমিত মানুষ ডাক্তারদের এড়িয়ে সামাজিক বিপত্তি বাড়াচ্ছেন?

Spread the love

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: কলকাতা, ৩০মার্চ ২০২০ করোনা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে এখন সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। দেশে এই মুহূর্তে একদল মানুষ সংক্রমিত হয়েও ডাক্তারদের নির্দেশ অমান্য করে নিজেদের সামাজিক ভাবে বিচ্ছিন্ন না রেখে সামাজিক বিপত্তি বাড়াচ্ছেন। তালিকায় যেমন আছেন ধনী ও শিক্ষিত মানুষ, তেমন আছেন দরিদ্র, মধ্যবিত্ত এবং অশিক্ষিত মানুষও। ফলে ভাইরাস যুদ্ধে তারা নেতিবাচক ভূমিকা নিচ্ছেন। দেশের মানুষের ক্ষোভেরও শিকার হচ্ছেন তারা। মনোবিদরা বলছেন, আসলে এই ধরনের কাজ যারা করছেন, তার অন্যতম কারণ মূলত তিন ধরণের ফোবিয়া।যেমন ক্ল্যাস্টোফোবিয়া, ইয়াট্রোফোবিয়া ও নেক্রো ফোবিয়া । প্রথম ফোবিয়ার অর্থ বিচ্ছিন্ন থাকার ভয়। দ্বিতীয়টির অর্থ ডাক্তার ভীতি। তৃতীয়টির অর্থ মৃত্যু ভয়। আর একটি ভয় সাধারণ মানুষের মনেও কাজ করছে।

সেটা হলো থানাটো ফোবিয়া। সেটাও মৃত্যুভয়। তবে সাধারণ মানুষদের মধ্যে এদেশে এমন ফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষ বেশি নয়। না হলে প্রশাসনের পক্ষে বার বার বলা সত্বেও রাস্তায় বাজারে ভিড় করছেন। এই অজ্ঞানতা বিপদের আশঙ্কা বাড়িয়েই তুলছে। রইলো বাকিদের কথা। অর্থাৎ যাঁরা প্রশাসনের চোখে সংক্রমিত হয়েছেন বা হতে পারেন এমন মানুষজন সামাজিক বিচ্ছিন্ন থাকা বিষয়টিকে ভয় পাচ্ছেন।অর্থাৎ নিজের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। এই ভীতি মানুষের যুক্তিবোধকে নষ্ট করে দেয়। এটা শুধু যে অজ্ঞানতা তা নয়। এরা ক্ল্যাস্ট্রোফোবিয়ায় আক্রান্ত। সুতরাং ডাক্তারদের ওপর চাপ বেড়েছে। একদিকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই অন্যদিকে এই মানসিক রোগী দের কাউন্সিলিং। দুটোই সামলাতে হচ্ছে। আজকের পরিস্থিতি বলে নয়, অনেকেই দেখা যায় অসুখবিসুখ হলে ডাক্তার দেখাতে চান না। একে বলে ইয়াট্রোফোবিয়া। যা বেশ মারাত্বক । এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষ ডাক্তারদের এড়িয়ে চলেন। ফলে রোগ ধরা পড়ে না বা এত দেরিতে ধরা পড়ে যখন আর কিছু করার থাকে না। বিষয়টি যদি সংক্রমণ রোগ হয় তখন একজনের ভীতির বলি হতে হয় বহু নিরপরাধ মানুষকে।এবারের করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত ঘটনায় বেশি করে নজরে আসছে। নেক্রো ফোবিয়ায় হয় মানুষের মৃত্যু ভয়।মিডিয়া মারফত বিশ্ব জুড়ে যে মৃত্যুর খবর আসছে তা মানুষকে মানসিক সংক্রমণ ঘটাছে। মানুষ নেতিবাচক ভাবনায় আচ্ছন্ন হচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকে অবসাদের শিকার হয়ে পড়ছেন। অনেক মিডিয়ায় বলা হচ্ছে মারণ ভাইরাস। আদতে যা নয়। বরং আক্রান্ত যারা হচ্ছেন তাদের অধিকাংশ সুস্থ হচ্ছেন।কয়েকজনের মাত্র মৃত্যু হচ্ছে। যদি তাই না হত এতদিনে সব ডাক্তার সব নার্স মরে যেতেন।প্রশাসন এই ভাইরাসকে অতি মারী বলেছেন ঠিকই , কিন্তু সার্স বা মার্সের মত মারণ ভাইরাস নয়। আমরা প্রথম থেকেই যে গুরুত্ব দিয়ে এই লড়াই লড়তে শুরু করেছি হাজার প্রতিকূলতার সঙ্গে সেখানে মানুষ যদি একটু সচেতন হয়ে প্রশাসন এবং ডাক্তারদের নির্দেশ ও পরামর্শ মেনে চলেন তাহলে আমাদের দেশ এই লড়াইতে এক নজির সৃষ্টি করতে পারে। যা অন্য দেশগুলির কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকতে পারে। ফোবিয়া কেন হয়? চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, অনেকগুলি কারণ আছে। ১)শৈশবের কোনও নেতিবাচক স্মৃতির বিভীষিকা। দুই)পারিবারিক সূত্রে ভীতির সৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ মা বা বাবার কোনও ভীতি সন্তানের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে জিনগত ভাবে। ফোবিয়ার আর এক কারণ দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ। আমরা প্রায় সবাই কিছু না কিছু ফোবিয়ায় আক্রান্ত। অবহেলা না করে চিকিৎসা করলেই ফোবিয়ামুক্ত হওয়া যায়। তবে এই মানুষদের কখনও অযৌক্তিক ভাবে জোরজবরদস্তি করা উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। বহু বিশিষ্ট মানুষদের ছিল বা আছে অদ্ভুত অদ্ভুত ফোবিয়া। এই প্রসঙ্গে পরে প্রতিবেদন লেখার ইচ্ছে রইলো। সবশেষে বলবো ডাক্তারদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।

প্রশাসনিক নির্দেশ মেনে চলুন। ফোবিয়া আক্রান্ত মানুষদের ওপর হিংস্র হবেন না। এলাকায় এমন কোনও সন্দেহজনক মানুষ দেখেন যিনি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হলেও হতে পারেন, প্রতিবেশী হিসেবে সংবেদনশীল হয়ে প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে ব্যবস্থা নিন। এ লড়াই জেতার লড়াই। এ লড়াই জিততে হবে। একটাই স্লোগান হোক সবার কণ্ঠে।লড়াই ,লড়াই ,লড়াই চাই,লড়াই করে বাঁচতে চাই ।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.