চিত্রন চৌধুরী: কলকাতা, ২১মে, ২০২০। বিগত প্রায় এক বছর ধরেই লক্ষ্য করছিলাম, বঙ্গোপসাগরের তাপমাত্রার অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি সংক্রান্ত সব লেখালেখি গুলো। বঙ্গোপসাগর শুধু নয়, সমগ্র পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে ওঠার সাথে সাথে সহস্র কোটি বছর পুরোনো আদিম যুগের ক্ষুদ্র প্রোটিন কণা গুলি আস্তে আস্তে আবার জেগে উঠছে।
তাই করোনা দিয়ে শুরু হয়ে পরবর্তী ক্রমিক মহামারী গুলির চরিত্র কেমন হতে পারে তার সামান্য এক আভাস আমি আগের একটি লেখায় বলার চেষ্টা করেছিলাম। এতো গেলো একটি দিক। আর সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্টি হওয়া প্রাকৃতিক প্রলয় আমরা কেবলমাত্র গতকালই প্রত্যক্ষ করলাম।
প্রকৃতি ঠিক নিজের মতন করে ভারসাম্য রক্ষা করবে, করতেই হবে। শুধুমাত্র মানবজাতির রক্ষা প্রকৃতির কর্তব্য নয়। নিজ গ্রহের সুরক্ষা স্বার্থে প্রকৃতি নিজের মতন করেই আবার সুস্থিতি তৈরী করে নেবে, হয়তো সময় লাগবে, কিন্তু এ পরিণতি অবশ্যম্ভাবী।
তাই দূষণ যতদূর সম্ভব কমিয়ে তিলে তিলে আবার ঠান্ডা করতেই হবে আমাদের বাসস্থানকে। এটি একদিন বা এক বছরের কাজ নয়। বনসৃজন এবং পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে আমাদেরই সচেতন হতে হবে। এই কাজে চটজলদি “ভোট ব্যাংক” বাড়ে না।
বরং দ্রুততার সাথে অবৈজ্ঞানিক ভাবে যথেচ্ছ নগরোন্নয়ন এবং সৌন্দর্য্যয়ন করলেই ফল পাওয়া যায় হাতে নাতে তাই নিজেদের সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। না হলে কিন্তু একই রকম এবং ক্রমশ আরও অনেক ভয়ঙ্কর বিপর্যয় মনে হয় অবশ্যম্ভাবী।
ধীরে ধীরে জলস্তরের উচ্চতা বেড়ে স্থলভাগ দখলের লক্ষ্যে , এর থেকেও আরও বড় কোনও প্রলয়ের মাধ্যমে সমুদ্র সম্পূর্ণ ভাবে গ্রাস করে নেবে সুন্দরবনকে, এমন কি কলকাতাকেও ! “একদিন ঝড় থেমে যাবে, পৃথিবী আবার শান্ত হবে ” , অথবা ঝড় হয় উৎকল অথবা বাংলাদেশ অভিমুখে গিয়ে ধ্বংসলীলা চালাবে – এই আশায় হাত গুটিয়ে বসে থাকলে মনে হয় আর চলবে না। অরণ্যের পরিমান বাড়াতেই হবে। পরিকল্পনা মাফিক নগরান্নয়ন করলে কিন্তু কিছুটা পরিমান হলেও লাগাম টানা যাবে এই ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়ণে।
শিকার উৎসব আর অরণ্য ধ্বংস করে আখেরে কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া ব্যাতিত অন্য কোনো মুনাফা হবেনা। এক মাস বাদেই আমরা মনে হয় এই প্রলয় নাচন ভুলে যাবো , আবার অন্য এক ধ্বংসলীলা দেখার অপেক্ষায় দিন গুনবো। এটা এক পরিবেশপ্রেমী অধমের অতি সাধারণ ব্যাক্তিগত উপলব্ধি। জ্যোতিষশাস্ত্র কি বলে ?
Be First to Comment