বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, শারীরিক সৌষ্ঠবই ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম নেশা। ঈর্ষণীয় শরীরের জন্য তত্কালীন ব্রিটিশ আধিকারিকদের প্রশংসার পাত্র ছিলেন। তবে দেশপ্রেমের ক্ষেত্রে কখনও কোনও আপোস করেননি। এক ব্রিটিশ আধিকারিককে চড় মেরে একবার তাঁর কারাবরণও করতে হয়েছে। তবে, জেলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁরে শরীরচর্চা করতে দেখে অবাক হয়ে যান ইংরেজরা।
তাঁর অধ্যাবসায় দেখে বিশেষ খাবার- দাবারেরও ব্যবস্থা করেন তারা। মনোহর আইচ ছেলেবেলা থেকেই কুস্তি, ভারত্তোলনের উপর তাঁর আগ্রহ ছিল অপরিসীম। সুগঠিত শরীরের লক্ষ্যে ছোটবেলাতেই ভর্তি হয়ে যান রূপলাল ব্যায়াম সমিতিতে। এরপর ঢাকায় থাকাকালীন ফিজিক অ্যান্ড ম্যাজিক নামে একটি প্রদর্শনীতে পিসি সরকারের সঙ্গে শারীরিক কৌশল প্রদর্শন করে সুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৫০ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে “মিস্টার হারকিউলিস” খেতাব জেতেন। উচ্চতায় তিনি ছিলেন মাত্র ৪ ফিট ১১ ইঞ্চি।
এজন্য তিনি “পকেট হারকিউলিস” হিসেবেও পরিচিত। এর পরের বছর মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান পেলেও, সেরার শিরোপার জন্য তাঁকে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ১৯৫২ সালে তিনি জিতে নেন “বিশ্বশ্রী”র সম্মান। এরপর ১৯৫৫ ও ‘৬০ সালে মিস্টার ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় তিনি যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকার করেন। মাংসপেশির উপর নিয়ন্ত্রণ, সারা পৃথিবী ঘুরে শারীরিক কসরত প্রদর্শন, ৩০০ কিমি স্কোয়াট— এসব নানা কীর্তিতে মহিমান্বিত মনোহর আইচ শেষ বয়স পর্যন্তও অংশ নিয়েছেন বডি বিল্ডিং-এর নানা প্রদর্শনীতে।
তাঁর ফিট বডি হয়ে উঠেছে আধুনিক প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। ২০১৬ সালের ৫ জুন ১০৪ বছর বয়সে মনোহর আইচ মৃত্যুবরণ করেন।
মনোহর আইচ ১৯১২ সালের আজকের দিনে (১৭ মার্চ) বাংলাদেশের কুমিল্লার ধামতি নামক এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment