মৃদুলা ঘোষ: কলকাতা, ৯ জুন, ২০২০।
আমাদের আহার সামগ্ৰীর মধ্যে এমন কিছু উপাদেয় বস্তু আছে, যা চট্ করে হাতের সামনে পেলে খুব খুশি হয়ে যাই। তেমন ই এক উপাদান আমাদের সকলের পরিচিত ঘি। দোকানে সবসময় কিনতে পাওয়া যায়, আবার বাড়িতে ও ইচ্ছে করলে তৈরি করে নেওয়া যায়। গরম ভাতের সাথে একটু সুস্বাদু ঘি ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু জানেন কি এই ঘি নানা স্বাস্থ্য গুনে সমৃদ্ধ। এই ঘি নবজাতক থেকে বৃদ্ধ সকলের উপকারে সদা হাস্যময়। অনেক হার্টের রোগী আছেন যারা ঘি এর নাম শুনলে আঁতকে ওঠেন। ঘি কিন্তু এতটা আঘাত করার শক্তি রাখে না।
মাখনের বদলে ঘি সকলেই কমবেশি খেতে পারেন। আ্যন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ঘি নিয়মিত একটু খেলে শরীরে তারুন্য বজায় থাকে। এছাড়াও ঘি যেকোনো ক্ষত সারাতে খুব ই কার্যকরী ভূমিকা নেয়। মহিলাদের সিজারিয়ান ডেলিভারির পর নতুন মায়েরা ডায়েটে প্রতি দিন ঘি রাখতে পারেন। সেই সাথে সদ্যোজাত শিশুর মুখে দু থেকে পাঁচ ফোটা ঘি দেওয়ার কথা বলছেন বর্তমান চিকিৎসক সমাজ। কেটে গেলে কাটা ঘায়ে ঘি এর প্রলেপ দিলে চটজলটি উপকার পাওয়া যায়। শীতকালে বা অন্য যেকোন সময় ফাঁটা ঠোঁটে ঘি লাগিয়ে রাখলে দ্রুত সেরে যায়। কারন ত্বক ভালো রাখতে ঘিয়ের জুড়ি নেই। ঘি ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে, এতে আছে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে। যে সকল মহিলারা রুক্ষ ত্বকের সমস্যায় জেরবার তাঁরা নিয়মিত অল্প পরিমাণে ঘি খেতে পারেন। দেখবেন রুক্ষ ত্বকের সমস্যা অনেকটাই কমছে। নিয়মিত একটু ঘি কি কি উপকার করে জেনে রাখুন- মেনোপজের পর অনেক মহিলা হাড়ের ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। অস্থিসন্ধি র ব্যাথা কমাতে ঘি ভালো কাজ দেয়। ঘিয়ে উপস্থিত ওমেগা থ্রি , ফ্যাটি আসিড মহিলাদের অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে ও সাহায্য করে। ঘিয়ে র আ্যন্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার সেল প্রতি রোধক। শরীরে এনার্জি বাড়াতে দারুণ সহায়ক। সকালবেলা ক্লান্তি কাটিয়ে চনমনে হয়ে উঠতে খালি পেটে সামান্য ঘি খেতে পারেন। জ্বর থেকে সেরে ওঠার পর এনার্জি ফিরে পেতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ঘি। স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে ও ঘি বিশেষ ভূমিকা নেয়। আ্যলজাইমারস ও ডিমেনশিয়া র মতো সমস্যা আক্রান্ত ব্যক্তি কে নিয়মিত ঘি খাওয়ানো অবশ্যই প্রয়োজন।
কোনো কারণে অরুচি আসলে কদিন ঘি ভাত বা ডালভাত এ দিয়ে খেলে ভালো লাগবে। তবে যারা দীর্ঘদিন ধরে সুগার, উচ্চরক্তচাপ, কিডনি র অসুখে আক্রান্ত, বা তার জন্য নিয়মিত ওষুধে অভ্যস্ত তারা অবশ্যই তাদের খাওয়া দাওয়া ব্যপারে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন ঘি খাওয়ার বিষয়ে। ঘি আপনি কতটা খাবেন, বা আদৌ খাওয়া উচিত হবে কিনা একজন চিকিৎসক ই বলতে পারবেন। তবে ঘি যে নানা গুনে ভরপুর হয়ে নিরামিষ, আমিষ ভোজনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিরাজ করে তা বলাই বাহুল্য।
Be First to Comment