Press "Enter" to skip to content

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়— আজও বাঙালি মানসে ডি এল রায় নামেই বেশি পরিচিত।

Spread the love

—————স্মরণঃ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়————–

বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, বাংলা সংস্কৃতির আঙিনায় সঙ্গীতের এক নতুন ধারা নিয়ে আসার পাশাপাশি বাংলা নাট্য জগতেও তিনি ঘটিয়ে দিয়েছিলেন নিঃশব্দ এক বিপ্লব। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়— আজও বাঙালি মানসে ডি এল রায় নামেই বেশি পরিচিত। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ির দেওয়ান ছিলেন কার্তিকেয়চন্দ্র রায়। তাঁর স্ত্রী প্রসন্নময়ীদেবী শান্তিপুরের অদ্বৈতাচার্য পরিবারের মেয়ে৷ ১৯ জুলাই ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে এই দম্পতির সপ্তম পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। নাম রাখা হয় দ্বিজেন্দ্রলাল। পরবর্তী জীবনে এই দ্বিজেন্দ্রলালই বাংলা-সহ সারা ভারতবর্ষে নিজ কীর্তিতেই খ্যাতিমান হয়ে উঠেছিলেন। পেশায় সরকারি আমলা ছিলেন, কিন্তু বাঙালি সংস্কৃতিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের মতোই তাঁর সৃষ্ট গান ‘দ্বিজেন্দ্রগীতি’ এখনও উৎসাহের সঙ্গেই চর্চিত হয় বঙ্গ সমাজে। পেশাগত কারণে সরাসরি জাতীয়তা আন্দোলনে অংশ নিতে না পারলেও নাটক ও দেশাত্মবোধক গান লিখে তিনি পরোক্ষ ও স্পষ্ট ভাবে এই আন্দোলনকে পুষ্ট করেছেন। কৃষ্ণনগরের পাঠশালাতেই দ্বিজেন্দ্রলালের পড়াশোনার সূত্রপাত। ১৮৮০ সালে কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে এফএ পাশ করেন তিনি। পরে হুগলি কলেজ থেকে দ্বিজেন্দ্রলাল বিএ এবং ১৮৮৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পাশ করেন। ছোটবেলা থেকে যে চর্চার মধ্যে বড় হয়েছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল, বিলেত গিয়ে সে ঘরানাটা একটু বদলে গেল। লন্ডনে থাকার সময় দ্বিজেন্দ্রলাল ইংরেজিতে অনেক কবিতা লিখেছিলেন। ১৮৮৬ সালে সেগুলি একত্রে গ্রন্থ রূপে প্রকাশ পায়— ‘দ্য লিরিক্স অফ ইন্ড’, এটাই তাঁর একমাত্র ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ। যাই হোক, বিলেতের কৃষিবিদ্যার ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও তিনি এ বার নিলেন জমি জরিপ ও কর মূল্যায়ণের প্রশিক্ষণ। তার পর যোগ দিলেন সরকারি দফতরে, কর্মস্থল হল মধ্যপ্রদেশ। পরে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজে যোগ দিলেন দিনাজপুরে। ১৯০৬ সালে গয়াতে বদলি হয় তাঁর। আর এখানেই রচিত হয়, ‘বঙ্গ আমার জননী আমার…’, নির্মাণ হয় দু’টি বিখ্যাত নাটক— ‘মেবার পতন’ ও ‘নুরজাহান’। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১৯১৩ সালে কর্ম জীবন থেকে অবসর নিয়েছিলেন।

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ১৯১৩ সালের আজকের দিনে (১৭ মে) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.