————-স্মরণঃ রুমা গুহঠাকুরতা———-
বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, রুমা গুহঠাকুরতা ১৯৩৪ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সত্যেন ঘোষ (Monti Ghosh)। মা সতী দেবী ছিলেন সেই যুগের বিখ্যাত গায়িকা। তিনি আলমোড়ায় উদয় শংকর কালচার সেন্টারের মিউজিক এন্সম্বলের সদস্য ছিলেন ও পরে মুম্বাইয়ে পৃথ্বী থিয়েটারে মিউজিক ডিরেকটর (দেশের প্রথম মহিলা সংগীত পরিচালক) হন।
তাই রুমার ছেলেবেলা কেটেছে আলমোড়া ও মুম্বাইয়ে। সতী দেবীর পিসতুতো ভাই হলেন বরেণ্য চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়। বিজয়া রায় হলেন আপন ছোটবোন। ১৯৫২ সালে কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন ও তাদের পুত্র সুগায়ক অমিত কুমার। ১৯৫৮ সালে তার দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ হয় এবং ১৯৬০ সালে অরূপ গুহঠাকুরতা’কে বিবাহ করেন।
দেবব্রত বিশ্বাসের ছাত্রী রুমা সুগায়িকা ছিলেন। গান গেয়েছেন, ‘অমৃত কুম্ভের সন্ধানে’, ‘বাঘিনী’, ‘পলাতক’-সহ আরও বেশ কিছু বিখ্যাত ছবিতে। অভিনেত্রী হিসাবেও অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন রুমা। সত্যজিৎ রায় থেকে তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার থেকে রাজেন তরফদার প্রত্যেকের ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। ‘গঙ্গা’, ‘শাখাপ্রশাখা’, ‘আশিতে আসিও না’, ‘অভিযান’, ‘পলাতক’, ‘বাঘিনী’, ‘নির্জন সৈকতে’, ‘বালিকা বধূ’, ‘পার্সোন্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘হংসমিথুন’, ত্রয়ী ‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’-সহ একাধিক বাংলা ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুমা। ‘জোয়ার ভাটা’, ‘মশাল’, ‘আফসর’, ‘রাগ রং’-এর মতো হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।
‘অভিযান’ ছবিতে যেমন অত্যন্ত সিরিয়াস একটি চরিত্রে তাকে দেখা গিয়েছে, তেমন আবার ‘আশিতে আসিও না’ কিংবা ‘পলাতক’-এ একেবারে ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুমা।তিনি ১৯৫৮ সালে Calcutta Youth Choir প্রতিষ্ঠা করেন। ‘বিস্তীর্ণ দু’ পারে অসংখ্য মানুষের’ কিংবা ‘ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম’ গানগুলি শুনলেও ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারে রুমার সংগীত পরিচালনার কথাও মনে পড়ে বাঙালির।ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘আশিতে আসিও না’ ছবিতে ‘তুমি আকাশ এখন যদি হতে’ গানটির দৃশ্যায়নে রুমার অভিনয় আজীবন মনে রাখবেন দর্শকরা।
‘তিনকন্যা’র ‘মণিহারা’য় অভিনেত্রী কণিকা মজুমদারের লিপে ‘বাজে করুণ সুরে’ গানটি রুমা দেবীর গাওয়া।
রুমা গুহঠাকুরতা ২০১৯ সালের আজকের দিনে (৩ জুন) কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
Be First to Comment