জন্মদিনের শ্রদ্ধাঃ দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, বাংলা ভাষায় রচিত রূপকথা ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ গ্রন্থের সংকলক ছিলেন দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার। তিনি তৎকালীন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার গ্রামাঞ্চল থেকে শিশুতোষ লোককথা সংগ্রহ করে ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ নামে প্রকাশ করেন। গ্রন্থাকারে প্রকাশের আগে দক্ষিণারঞ্জনের লেখা ও সংগৃহীত রূপকথা কলকাতার কিছু পত্রিকায় ছাপা হয়। ‘ঠাকুরমার ঝুলি’র পাণ্ডুলিপির প্রকাশক না পেয়ে নিজের অর্থেই প্রকাশে উদ্যোগী হন দক্ষিণারঞ্জন। পরে দীনেশচন্দ্র সেনের উদ্যোগেই সেকালের বিখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান “ভট্টাচার্য অ্যান্ড সন্স” থেকে ১৯০৬ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় ‘ঠাকুরমার ঝুলি’। এর ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
তাঁর মাতার নাম কুসুমময়ী ও পিতার নাম রমদারঞ্জন মিত্র মজুমদার। ১৮৮৭ সালে দশ বছর বয়সে তাঁকে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেওয়া হয় ঢাকার কিশোরীমোহন হাইস্কুলে। পরে পিতার হঠাৎ সিদ্ধান্তে ১৮৯৭ সালে বহরমপুর হাইস্কুলে তাঁকে দশম শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়। এই স্কুল থেকেই ১৮৯৮ সালে প্রথম বিভাগে তিনি এনট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তাঁর অন্যান্য বই হলো, মা বা আহুতি (১৯০৮), ঠাকুরমার ঝুলি (১৯০৯), আর্যনারী (প্রথম ভাগ ১৯০৮, দ্বিতীয় ভাগ ১৯১০), চারু ও হারু (১৯১২), দাদামশায়ের থলে (১৯১৩), খোকাখুকুর খেলা (১৯০৯), আমার বই (১৯১২), সরল চন্ডী (১৯১৭), পুবার কথা (১৯১৮), ফার্স্ট বয় (১৯২৭), উৎপল ও রবি (১৯২৮), কিশোরদের মন (১৯৩৩), কর্মের মূর্তি (১৯৩৩), বাংলার সোনার ছেলে (১৯৩৫), সবুজ লেখা (১৯৩৮), চিরদিনের রূপকথা (১৯৪৭) ইত্যাদি।
‘চারু ও হারু’ সম্ভবতঃ বাংলা ভাষায় প্রথম কিশোরদের জন্য উপন্যাস। এছাড়া ১৯০১ সালে তিনি ‘সুধা’ নামে একটি মাসিক সাময়িক পত্রিকা নিজ সম্পাদনায় প্রকাশ করেন। দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার ছবি আঁকতেন, ঠাকুরমার ঝুলি’র ছবিগুলো তাঁর আঁকা। এছাড়াও বাসগৃহে কাঠের উপর খোদাই কর্মে তাঁর বিশেষ পারদর্শিতা ছিল।
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার পরবর্তিতে কোন এক সময় কলকাতায় স্থায়ী হন এবং তাঁর নিজস্ব বাড়ি ‘সাহিত্যভবন’-এ ১৯৫৬ সালে মারা যান।
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার ১৮৭৭ সালের আজকের দিনে (১৫ এপ্রিল) ঢাকা জেলার সাভারের উলাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment