মোল্লা জসিমউদ্দিন: কলকাতা, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার তিন তালাকনামায় বৈধতা খারিজ করে অডিন্যান্স জারি করেছে। তিন তালাকের পক্ষে – বিপক্ষে গোটা দেশ একসময় গর্জে উঠেছে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায় চৌধুরীর মাধ্যমে তিন তালাকনামা নিয়ে মামলা দাখিল করেন এক ‘তালাকপ্রাপ্ত’ মহিলা। মামলায় অবশ্য বিচারপতি কোন আদেশনামা দেননি। তবে এই মামলায় পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ২০ মার্চ। মামলার পিটিশনে ওই মহিলা দাবি রেখেছেন – ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সালিসি সভায় স্বামীর তিন তালাক বৈধ হলে, তারপরে নিজ বাপের বাড়িতে জোর পূর্বক স্বামীর শারীরিক মিলন টি ধর্ষণ হিসাবে গণ্য হোক। আর যদি ওই সালিসি সভায় তিন তালাক টি অবৈধ হয়। তাহলে স্বামীর বাড়িতে ঘরসংসার করার জন্য পুলিশ প্রশাসন তৎপর হোক ‘। দক্ষিণ ২৪ পরগণার কুলতলি এলাকার এই ঘটনা এখন কলকাতা হাইকোর্টের অলিন্দে জোর চর্চার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। মুসলিম সমাজের বড় অংশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসের উপর তাকিয়ে। কেননা তিন তালাক টি কেন্দ্রীয় সরকার অবৈধ ঘোষণা করলেও মুসলিম সংগঠন গুলির পাশাপাশি ধর্মীয়গুরুদের একাংশ তিন তালাকে বিশ্বাসী এখনো রয়েছে।বআদালত সুত্রে প্রকাশ, ২০১৭ সালে ৮ জানুয়ারি মুসলিম রীতি অনুযায়ী দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের এক মহিলার সাথে কুলতলির তাহাজুল গাজীর বিবাহ হয়। বিবাহের কয়েকমাসের পরেই ৫০ হাজার টাকা পণের জন্য স্ত্রীর উপর স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয় বলে অভিযোগ। গত ৩১/০১/২০ তারিখে বিকেলে কুলতলীতে এক সালিসি সভায় প্রকাশ্যে তাহাজুল গাজী তার স্ত্রী কে তিন তালাক ঘোষণা করে থাকে। সেদিন রাতেই তালাকপ্রাপ্ত মহিলা কুলতলী থানায় তিন তালাক বৈধ না অবৈধ সেইসাথে নানান অভিযোগ নিয়ে মামলা দাখিল করতে যান। স্থানীয় থানার পুলিশের তরফে তিন তালাক স্পর্শকাতর বিষয় টি এড়িয়ে বধূ নির্যাতনের (৪৯৮ ধারায়) মামলা গ্রহণ করা হয়। এরপর গত ২৯ ফেব্রুয়ারিতে শ্বশুরবাড়িতে অভিযুক্ত স্বামী তার ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কে জোর পূর্বক শারীরিক মিলন করে থাকে। এই ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ০১/০৩/২০ তারিখে জয়নগর থানায় ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করে ওই তালাকপ্রাপ্ত মহিলা। তার যুক্তি ছিল – সালিসি সভায় তিন তালাক বৈধ হলে তার ইচ্ছার বাইরে জোর পূর্বক শারীরিক মিলন টি একপ্রকার ধর্ষণ পর্যায়ে। গত ৪ মার্চ জয়নগর ওসি থেকে পুলিশ সুপার কে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান ওই মহিলা। ১৩ মার্চ দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে আইনজীবী ইন্দ্রজিৎ রায় চৌধুরীর মাধ্যমে মামলা দাখিল করেন নির্যাতিতা। পিটিশনে নির্যাতিতা দাবি করেছেন – সালিসি সভায় তিন তালাক বৈধ হলে জোর পূর্বক শারীরিক মিলন টি ধর্ষণ হিসাবে গণ্য হোক, নতুবা তিন তালাক অবৈধ হলে তাকে তার শ্বশুরবাড়িতে ঘরসংসার করার জন্য পুলিশ প্রশাসন কে নির্দেশ দেওয়া হোক। এই মামলায় পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ২০ মার্চ। একাধারে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার তিন তালাকের বৈধতা খারিজ করে অডিন্যান্স জারি করেছে। অপরদিকে দেশের মুসলিমদের একাংশ তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তিন তালাকে বিশ্বাসী। তাই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারধীন এই মামলাটির উপর তাকিয়ে রয়েছে মুসলিম সমাজের বড় অংশ।
তিন তালাকের বৈধতা থাকলে হাইকোর্টে ‘ধর্ষণের’ মামলা চায় প্রাক্তন স্ত্রী….
More from GeneralMore posts in General »
- Neotia Bhagirathi Women & Child Care Centre brings back its iconic kids’ carnival – Baby’s Day Out, after a decade….
- TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ ‘অমৃতকুম্ভে মৃত্যুমিছিল’….।
- Sunday Suspense Marks 15 Years with Expanding Storytelling Universe…
- Rapido to Invest ₹150 Crore in Mobility and Infrastructure in partnership with West Bengal Transport Department….
- Desun Hospital Observes World Cancer Day 2025 with Music Therapy and Awareness Initiatives…
- টালিগঞ্জে স্বামী প্রণবানন্দ বিদ্যাপীঠের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষের সূচনা হলো..।
Be First to Comment