গোপাল দেবনাথ : ৫ই জানুয়ারি ২০২০ – দিনভর বৃষ্টিকে সঙ্গে নিয়েও বিপুল উদ্দীপনায়,মহা সমারোহে নানা কর্মসূচির মধ্যে ১৩৮ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপিত হলো মেদিনীপুর টাউন (হেরিটেজ) স্কুলে। ‘তিমিরবিদার উদার অভ্যুদয়’-এই শিরোনামে সারাদিনের এই মহতী অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড.বিবেকানন্দ চক্রবর্তীর সৃজনশীল ভাবনা প্রস্তুত এক নান্দনিক চমক। শঙ্খরবে-পুষ্পচন্দনে-প্রদীপের মাঙ্গলিক শিখায় প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষক- শিক্ষিকা বরণ করে নেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা বাবু কার্তিক চন্দ্র মিত্রের সাজে সজ্জিত শিক্ষক নিখিল কুমার পাত্র- কে। হরষিত ছাত্রদের করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। জাতীয় পতাকা ও বিদ্যালয় পতাকা উত্তোলনের পর প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ ছাত্রদের প্রতিকৃতি ও শহীদ বেদীতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য প্রদান করেন বিদ্যালয় প্রধান ড.চক্রবর্তী ও অন্যান্য শিক্ষক- শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মিবৃন্দ। এরপর ছিল নানা আনন্দমুখর কর্মসূচী। ১৩৮ টি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, ১৩৮টি রঙীন বেলুন ওড়ানো, কেক কাটা ও সাদা পায়রা ওড়ানোর পর বেজে ওঠে স্কুলের থিম্ সঙ-‘আমাদের টাউন স্কুল’ যার ভাবনায় ছিলেন শিক্ষিকা অনন্যা পান্ডে। গীতিকার প্রধান শিক্ষক ও সুরকার সঙ্গীত শিল্পী সুমন্ত সাহা। প্রথম পর্বের পরে ব্যান্ড সহযোগে গান-আবৃত্তি-বিদ্যালয়ের ইতিহাস পাঠ সহ ছাত্র-শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মিদের একটি শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করে, যার পুরোভাগে ছিলেন প্রধান শিক্ষক নিজে এবং সজ্জিত কার্তিক চন্দ্র মিত্র। তৃতীয় পর্বের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহরের বিশিষ্ট অতিথিবর্গ। স্বাগত ভাষণে বিদ্যালয়ের অতীত গৌরব-গাথাকে তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি-পুরস্কারপ্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষক ড.বিবেকানন্দ চক্রবর্তী। অতিথি বরণ, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, চারা গাছে জলসিঞ্চন-এর পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সবার মন জয় করে নেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তথ্য ও সাংস্কৃতিক আধিকারিক শ্রীমতী অনন্যা মজুমদার। এর পর বক্তব্য রাখেন বিদ্যাসাগর শিক্ষক-শিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. মনোরঞ্জন ভৌমিক; রোটারি আই হসপিটালের চেয়ারম্যান শ্রী মদন মোহন মাইতি, মেদিনীপুর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ফোরামের সম্পাদক শ্রী নিত্যানন্দ পান্ডা এবং স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র, প্রাক্তন শিক্ষক শ্রী সুভাষ কুন্ডু মহাশয়। ‘কার্তিক চন্দ্র মিত্র স্মারক বক্তৃতা’ রাখেন বিশিষ্ট আইনজীবী শ্রী তীর্থঙ্কর ভকত। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাবু কার্তিক চন্দ্র মিত্রের জীবন ও কর্মের নানান দিক তুলে ধরেন। স্কুলের বার্ষিক পত্রিকা ‘জ্বলদবর্তি’ ও দেওয়াল পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এই দু’টি সম্পাদনায় করেছেন যথাক্রমে সম্পাদিকা শ্রীমতী মন্দিরা খান্ডা ও শ্রীমতী অনামিকা তেওয়ারী। গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিক্ষিকা মন্দিরা খান্ডা, মিঠুরানী মূর্ম্মূ, মিঠু পাহাড়ী, অরুণিমা নন্দী, অনামিকা তেওয়ারী, অনুমিতা রাউত। অসাধারণ সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী শ্রী রথীন দাস। এই পর্বে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক শ্রী সুশোভন সামন্তের অর্থানুকূল্যে ৫০ জন দুঃস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র প্রদান করা হয়। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে হাসপাতালে রোগীদের ফল বিতরণ করেন শিক্ষক শ্রী জহরলাল পৈড়া ও প্রাক্তন ছাত্র জালাল মল্লিক। শেষ পর্বে জেলা তথ্যসংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে বিদ্যালয়ে প্রদর্শিত হয় পাইক নাচ ও ঝুমুর গান। সন্ধ্যায় আলোকমালায় সজ্জিত বিদ্যালয়ের শোভা ছিলো অপরূপ। অনিন্দ্যসুন্দর সঞ্চালনায় ভিন্ন পর্বের অনুষ্ঠানগুলি সকলের শ্রুতিগোচর করেন শিক্ষিকা অনন্যা পান্ডে, মন্দিরা খান্ডা ও অনামিকা তেওয়ারী।
টাউন স্কুলের (হেরিটেজ) ১৩৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস মহা সমারোহে উদযাপিত হল
More from GeneralMore posts in General »
Be First to Comment