মায়াপুরে ইসকন মন্দিরে গোমূত্র পান না করলে অফিসে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা
**************************
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: কলকাতা, রাজ্যে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কঠোর পদক্ষেপ কে মানুষ স্বাগত জানাচ্ছেন। কিন্তু রাজ্যের বিরোধী দলের
সমর্থকেরা গোমূত্র পান করানোর এক বিপদজনক কর্মসূচি নিয়েছে। ইতিমধ্যে এই গোমূত্রের প্রচারে প্রভাবিত হয়ে ঝাড়গ্রামের ক্ষুদ্র কাপড়ের ব্যবসায়ী শিবু গড়াই গোমূত্র পান করে অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিবু গড়াই জানান, দিন পনেরো আগে বন্ধুদের সঙ্গে তিনি মায়াপুর বেড়াতে যান। সেখান থেকে তিনি দেড়শো টাকা দিয়ে চারশো মিলি লিটারের এক বোতল গোমূত্র কেনেন। তারপর বিজেপি নেতাদের গোমূত্র পান করতে দেখে নিজে পান করেন। খাওয়ার পর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। বিরাট ভুল করেছি।
সবাইকে বলব, এমন বোকামি করবেন না।হাসপাতালে শিবুবাবুকে কড়া নজরে রাখা হয়েছে।
তবু হেলদোল নেই নদীয়ার মায়াপুরের ইসকন মন্দির কমিটির। বরং তাঁদের স্থির বিশ্বাস ,গোমূত্র পানে যে কোন ভাইরাস নির্মূল হয়ে যাবে। সেখানে ঢালাও বিক্রি হচ্ছে গোমূত্র দিয়ে তৈরি ওষুধ গো অর্ক। ইসকনের যে ল্যান্ড অফিসে এই ওষুধ তৈরি হয়, সেখানে ঢুকতে গেলে গোমূত্র খেয়েই ঢুকতে হবে। তাই সেবাইতরা গো অর্কের এক ছিপি পান করেই অফিসে ঢুকছেন। ইসকনের আধিকারিক অলয় গোবিন্দ দাস জানিয়েছেন, গোমাতা স্বয়ং বিষ্ণু। তাঁকে কোনও ভাইরাস ক্ষতি করতে পারে না। তাই তাঁর মূত্র যদি কোনও মানবদেহে থাকে তারও কোনও ক্ষতি হবে না। তাই ইসকনের তৈরি গো অর্ক করোনার চমকপ্রদ প্রতিষেধক।
করোনা আতঙ্ককে কাজে লাগিয়ে একদল হিন্দু রক্ষণশীল মানুষ নানারকম গুজব ছড়াচ্ছেন।গোমূত্র পানে র ভয়াবহ ঘটনা যেমন ঘটছে, তেমন সুন্দরবনের গোসবা ব্লকের গ্রামগুলিতে মানুষ ঘনঘন শাঁখ বাজাচ্ছেন। তাঁদের বিশ্বাস ,শাঁখের ধ্বনি ভাইরাস নির্মূল করবে। দেশের আনাচে কানাচে যখন কুসংস্কারের বলি হয়ে কিছু মানুষ বিপদকে আরও বাড়িয়ে তুলছেন তখন বিজ্ঞানকে সঙ্গী করে বিশ্বের বিজ্ঞানীরা প্রতিষেধক আবিষ্কারের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা যত না ক্ষতি করবে তার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর কুসংস্কার ছড়ানোর মানুষজন। প্রশাসনের উচিত এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
Be First to Comment