Press "Enter" to skip to content

গভঃ বেসিক কাম মাল্টিপারপাস স্কুল বানীপুর এর ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন….।

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি :বানীপুর,  ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩,।কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ও মহাত্মাগান্ধীর শিক্ষাভাবনার সমন্বয়ে উত্তর চব্বিশ পরগনার বাণীপুরে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন ভারতের প্রথম বুনিয়াদি বিদ্যালয়, যা বর্তমানে গভঃ বেসিক কাম মাল্টিপারপাস স্কুল, বাণীপুর নামে পরিচিত। ২০২৩ সালে উদযাপিত হল এই স্কুলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। বিগত এক বছর ধরে নানা বৈচিত্র্যপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই ৭৫তম বর্ষকে পালন করা হলো। ১৮ -১৯ ও ২০ ডিসেম্বর তিনদিন ধরে অনুষ্ঠিত হল বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এক মিলন উৎসব।
গত ১৮ ই ডিসেম্বর ২০২৩ সোমবার উৎসবের শুভারম্ভ হয় পূজনীয় স্বামী অঘোরাত্মানন্দ মহারাজের হাতে প্রদীপ প্রজ্বলন এবং সরস্বতী বন্দনার মধ্য দিয়ে। মঞ্চস্থ হয় ইংরেজী নাটক swamiji at the parliament of the world’s Religions । কবিতা আলেখ্য ‘ছোটদের ফার্স্ট হতে হয়’ পরিবেশন করে ছাত্র ছাত্রীরা জানিয়ে দিতে চায় – তারা শুধু পড়াশোনা করে ইঁদুর দৌড় থেকে মুক্তি চায়। ছোটদের ‘যুদ্ধ নয় যুদ্ধ নয়’ নাটক বার্তা দিয়ে গেল যুদ্ধ বন্ধ করার একমাত্র পথ হল যুদ্ধের উপকরণ নষ্ট করে দেওয়া। সারা বছরের মর্যাদাপূর্ন দিনগুলোকে স্মরণ করে ছাত্রীদের নৃত্যানুষ্ঠান ‘পার্বণী’ সকলের মন জয় করে নিয়েছে। ঐদিনের শেষ অনুষ্ঠান ছিল সুকুমার রায়ের সাহিত্য অবলম্বনে নাটক ‘মনের অসুখ’। অসুখ শরীরের নয় মনের যার সূত্রপাত হয় অহংকার থেকে। মানুষ যদি অতিরিক্ত লোভ, ইর্ষা, দ্বেষ, হিংসা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পরে তবেই সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে।
গত ১৯ শে ডিসেম্বর ২০২৩ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় প্রাক্তনীদের পুনর্মিলন উৎসব।
এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালে নাম ছিল শিশুনিকেতন। বুনিয়াদি শিক্ষাপদ্ধতিতে আবাসিক শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাত্র ছাত্রীদের সার্বিক বিকাশের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি বাঁশ বেতের কাজ, মৌমাছি পালন, মাটির কাজ, ফুল চাষ, ব্রতচারী শেখাতেন।
সেই ঐতিহ্যর পুনরাবৃত্তি হয়েছিল সারাদিনের অনুষ্ঠানে। প্রতীকী সাফাই অভিযান, প্রার্থনা সভা, শিশুনিকেতনের গান, বাণীপুরের গান, পুরোনো সেই দিনের স্মৃতিচারণের মধ্যে দিয়ে দিনটিকে বরণ করে নেওয়া হয়েছে।
এইদিন প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা উপস্থাপন করেন গীতিআলেখ্য ‘আমাদের প্রিয় শিশুনিকেতন ‘ । তাঁদের সময়ে যেসব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বিদ্যানিকেতনটি বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছিল অনুরণন ছিল সেখানে। মঞ্চস্থ হল বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্য অবলম্বনে শ্রুতিনাটক ‘দুর্গা’। কিছু সময়ের জন্য সবাই অপু – দুর্গার সামাজিক পারিবারিক পরিমণ্ডলে একাত্ম হয়ে গেল। ছাত্র ছাত্রীদের মনের কথা নিয়ে মঞ্চস্থ হল নাটক ‘তাইরে নাইরে তাইরে নানা ‘ । ফিরে দেখা – নৃত্যানুষ্ঠান সত্যি ই পুরোনো দিনের গন্ধ ছড়িয়ে দিল।
এই তিনদিনের অনুষ্ঠানের শেষ দিন অর্থাৎ ২০ ই ডিসেম্বর ২০২৩ প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনে
সেদিনের প্রভাতী অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন প্রাক্তন শিক্ষক শিক্ষিকারা এবং সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সকলের জন্য শুভ কামনা করেন বর্তমান শিক্ষক শিক্ষিকারা। সকল প্রাক্তন এবং বর্তমান প্রধানেরা, শিক্ষক শিক্ষিকারা এবং শিক্ষাকর্মীরা সংবর্ধিত হলেন। আদিবাসী নৃত্যের তালে তালে পা মিলিয়ে শুরু হয় বর্ণাঢ্য পদযাত্রা । বাণীপুর মুখরিত হয়ে ওঠে বাণীপুর সঙ্গীত আর শিশুনিকেতনের নিজস্ব সঙ্গীতে । বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর এবং নেতাজী ভবনের ছাত্রছাত্রীরা রঙিন সাজে সজ্জিত হয়ে বাণীপুর পথ পরিক্রম করে। মঞ্চস্থ হয় ‘উৎস হতে’ নাটক। কলাকুশলী হলেন শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মীরা। তুলে ধরলেন বিদ্যালয়ের সূচনা থেকে বর্তমান পর্যন্ত নানা ওঠা পড়ার সুখদুঃখের ছবি।
অতিথি শিল্পীদের মধ্যে ছোটদের নাটক নিয়ে এসেছিল গোবরডাঙা নকশা নাট্যদল। আনন্দের হিল্লোল তুলে দিলেন মাটির গান গেয়ে স্থানীয় এক শিল্পী।রংবাহারি সাজে নানান স্বাদের নৃত্যের ছন্দে ভরিয়ে দিল বাণীপুর সুন্দরম্ ডান্স ইনস্টিটিউশন। দিনের সমাপ্তির টানে হিজলপুকুরিয়া জনজাগরনী নাট্যদলের সামাজিক সচেতনতামূলক নাটক ‘কালের থাবা ‘ ।
সমগ্ৰ অনুষ্ঠানটি সাফল্য অর্জন করেছে শিক্ষক শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মী ছাত্র ছাত্রী সর্বোপরি প্রাক্তনীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়।

More from CultureMore posts in Culture »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.