সুব্রত ঘোষ: কলকাতা, ৫ এপ্রিল ২০২০ আমাদের বহুল ব্যবহৃত এবং পরিচিত মোমবাতির জন্মস্থান হিসাবে রোমকে ধরা হয়। ল্যাটিন শব্দ ক্যান্ডেবে থেকে ক্যান্ডেল শব্দটির উৎপত্তি। তিন হাজার বি সি থেকে এর যাত্রা শুরু। বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে, ১৮ শতকের দিকে, কোলজা অয়েল, ব্যাপসিড অয়েল এবং প্যারাফিন মিশিয়ে তৈরী করা হয় অত্যাধুনিক মোমবাতি। ১৫০০ এ ডি – র মোমবাতির প্রচলন ছিল শুধু প্রার্থনার কাজে।
আর আজকের এই মোমবাতি এক শিল্পে পরিণত হয়েছে। প্রকৃতিতেও মোমের ব্যবহার জানা যায়। মৌমাছি অদ্ভুত প্রক্রিয়ায় মোম তৈরী করে মৌচাক নির্মাণ করে। ধীরে ধীরে মোমবাতি, এক আলোর উৎস থেকে বিভিন্ন ব্যবহারে ছড়িয়ে পড়ে। স্বর্ণশিল্পে স্বর্ণকারেরা, মোমের শিখা জ্বালিয়ে ব্লোয়ারে মুখনিঃসৃত বাতাসে ফুঁ দিয়ে, সেই শিখাকে ব্যবহার্য কোরে তোলে, স্বর্ণালঙ্কারের উপর নকশার শৈল্পিক মায়াজাল বিস্তারের ক্ষেত্রে। সমস্ত ধর্মে মোমবাতির আলো এক অপার্থিব শান্তির দূত হয়ে বিরাজ করছে। গৃহস্থালির অগ্নি এবং আলোর উৎস থেকে, আধুনিক গৃহিণীর ড্রইংরুমের শোভাবর্ধনের উপকরণ হয়ে, মোমবাতি প্রবেশ করে রাজনীতির আঙ্গিনায়।
মোমবাতি, প্রতিবাদের নীরব মিছিলের হাতিয়ার হিসেবে, রাজনৈতিক পালাবদলের সাক্ষী হয়ে থাকে, আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে। কিন্তু মোমবাতির ব্যবহারজনিত উদ্ভাবনী গবেষণা, আজও বহমান। আজ যখন কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিশ্বমহামারীর রূপ নিয়েছে, বিশ্ববিজ্ঞান যখন তার প্রতিরোধে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় মগ্ন, ঠিক তখনই, ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীর, কোরোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত, ৫ই, এপ্রিল ২০২০, রাত্রি নটায়, নয় মিনিট মোমবাতি প্রজ্বলনের ঘোষণায়, বিজ্ঞানের আঙ্গিনায়, মোমবাতির অনুপ্রবেশের এক নতুন ইতিহাস রচিত হল। নিঃসন্দেহে ইহা বিশ্ববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে, এক অভাবনীয় বিতর্কের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে।
Be First to Comment