নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ২৬ মার্চ, ২০২৪। সবচেয়ে বড় অভাগা হলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার চার বছরের শিশু বুলবুল যে রাতে চিরতরে চলে গিয়েছিল, সে রাতে তার পকেটে একটা কানাকড়িও ছিল না তিনি ছিলেন নিঃস্ব।
অথচ কাফন,দাফন,গাড়িতে করে দেহ নেওয়া ও গোরস্থানে জমি কেনার জন্য দরকার সেই সময়কার ১৫০/- টাকা। সে সময়ের ১৫০ টাকা মানে অনেক টাকা। এত টাকা কোথায় পাবেন। বিভিন্ন লাইব্রেরীতে লোক পাঠানো হল। না, টাকার তেমন ব্যবস্থা হয়নি। শুধুমাত্র ডি. এম লাইব্রেরি দিয়েছিল মাত্র ৩৫/- টাকা। আরো বাকি ছিল ১৩৫/-টাকা। অথচ টাকা আবশ্যক।
ঘরে কন্যার দেহ রেখে কবি গেলেন এক প্রকাশকের কাছে। প্রকাশক শর্ত দিলেন- এই মুহূর্তে কবিতা লিখে দিতে হবে। তারপর টাকা পাবেন…।
কবি মনের নীরব কান্না, যাতনা লিখে দিলেন কবিতায়…..
“ঘুমিয়ে গেছে শ্রান্ত হয়ে
আমার গানের বুলবুলি।
করুণ চোখে চেয়ে আছে
সাঝের ঝরা ফুলগুলি।।
ফুল ফুটিয়ে ভোর বেলা কে গান গেয়ে,
নীরব হ’ল কোন নিষাদের বান খেয়ে,
বনের কোলে বিলাপ করে সন্ধ্যারাণী চুল খুলি।।
কাল হতে আর ফুটবে না হায়, লতার বুকে মঞ্জরী
উঠছে পাতায় পাতায় কাহার করুণ নিশাস মর্মরী।
গানের পাখি গেছে উড়ে শূণ্য নীড়,
কন্ঠে আমার নেই যে আগের কথার ভিড়,
আলেয়ার এই আলোতে আর আসবে না কেউ কুল ভুলি।।
একজন সন্তানহারা পিতার কি নিদারুণ কষ্ট। যদিও এই মানুষটাই বাংলা সাহিত্যকে অনেক কিছু দিয়েছেন….। দেশের জন্য অনেক কিছুই করেছেন, জেল খেটেছেন স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে দাঁড়িয়ে…। কিন্তু হঠাৎ করে সেই মানুষটার পিছন থেকে সবাই সরে যায়…, একেবারে ভুলে যায়….., যাদের জন্য তিনি সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে গেছেন….। তিনি আমাদের জাতীয় কবি। বিদ্রোহী কবি। এর চেয়ে বড় দুঃখের কিছু হতে পারে না।
Be First to Comment