গোপাল দেবনাথ / ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ : কলকাতা,৩০ এপ্রিল, ২০২১। গত বছর করোনা অতিমারীর কারণে মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া লকডাউন এর আতঙ্ক মানুষের মন থেকে আজও যায়নি। বহু মানুষ করোনা ও খাবার খেতে না পাওয়ার কারণে অকালে মারা গেছেন। কর্মহীন বহু মানুষ আতঙ্কে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছে। বহু মানুষের জমানো সব সম্পদ শেষ হয়ে গেছে। সকলের মনে একটা আতঙ্ক কাজ করছিল যে, ভোট পর্ব মিটলেই আবার না লকডাউনের কবলে পড়তে হয়! এই সব দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের আতঙ্ক বাস্তবে পরিণত হলো। নিউটাউনের রাস্তায় যাওয়ার সময় একটি নির্মিয়মান বাড়ির সামনে হতাশ মুখে দেখতে পাওয়া গেল মালদার যুবকদের একজনের নাম মানিক মজুমদার অপর জনের নাম বিশ্বজিৎ মজুমদার। এরা দুই ভাই রড বাঁধাই এর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। টিভির খবর দেখে হতাশ। আগামীকাল থেকে কাজ না হলে নিজেই বা খাব কি আর বাড়িতেই বা কি পাঠাবো? এদের মতো বহু মানুষ একই চিন্তার শিকার। তাদের বক্তব্য কেন্দ্র বা রাজ্যের করোনা অতিমারী নিয়ে আরো আগে থেকে ভাবা দরকার ছিল। যেই ভোটপর্ব মিটলো আংশিক লকডাউন শুরু হয়ে গেল। আর আমাদের অবস্থা কি হবে কোনো সরকার একবারের জন্য ভেবে দেখেছেন কি? এরপর আংশিক লকডাউন প্রসঙ্গে আসা যাক। ভীষণ ভীষণ জরুরি ঘোষণা। দোকান বাজার বন্ধ হচ্ছে বাংলায় সেটা আমরা জানলাম কিন্তু একটা জিনিস পরিষ্কার হওয়া দরকার সাধারণ মানুষের স্বার্থে। এই বন্ধের আওতায় ওষুধের দোকান, অক্সিজেন, জরুরি সামগ্রী যেমন আরও, একুয়াগার্ড, জলের দোকান, ইলেকট্রিক, মুদির দোকান, দুধের সাপ্লাই কোনভাবেই থাকছে না। এগুলো খোলা থাকবে। অযথা প্যানিক করবেন না, জিনিস মজুদ করবেন না, ভয় বা ঘাবড়ে যাবেন না।
ফের বন্ধ নির্দিষ্ট কিছু পরিষেবা। পূর্ণাঙ্গ লকডাউন না হলেও বেশ কিছু ব্যবসার সময়ে কোপ।
বাংলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য শপিং মল, সিনেমা হল, জিম,রেস্টুরেন্টে, বার, বিউটি পার্লার বন্ধ। নির্দিষ্ট সময় (সকাল ৭টা থেকে ১০টা ও বিকেল ৩টে থেকে ৫টা) খুলবে বাজার এলাকা/ হাটের দোকান।
যদিও হোম ডেলিভারির খাবার, জিনিসপত্র আনানো যাবে। হোম ডেলিভারির লোক রেস্টুরেন্টে থেকে খাবার এসে দিয়ে যেতে পারবে৷ মুদির দোকান থেকে লোক এসে সামগ্রী বিক্রি করতে পারবে বাড়িতে।
কোন পঠনপাঠন, কোচিং, অনুষ্ঠান, বিয়ে, পৈতে, জন্মদিন উদযাপন লোক জড়ো করে পালন করা যাবে না।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন কোন জমায়েত, কোন বিজয় মিছিল বা উৎসব করা যাবে না।
এই অসময়ে একে অপরের পাশে থাকুন। অনেক অসংগঠিত ক্ষেত্রের সাথে যুক্ত মানুষ সমস্যায় পড়বে। পাশে থাকুন, খোঁজ নিজ, ফের ক্যান্টিন চালু করি আসুন, ফের বিনেপয়সাতে সবজি, আনাজ দিয়ে আসি চলুন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের – তারা যারা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই বন্ধের ফলে।
Be First to Comment