সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: কলকাতা, এই মুহূর্তে ভারতে কর্নাটকে দুই ও মুম্বাইতে একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। গত বছরের শেষে এই ভাইরাস চিনের উহান প্রদেশে দেখা দেয়। কিন্তু এই ভাইরাস হঠাৎ দেখা মিলেছে তা নয়। ১৯৬০ সালে এই ভাইরাস আবিষ্কার হয়।ল্যাটিন শব্দ করোনা।
অর্থাৎ মুকুট। অণুবীক্ষণ যন্ত্রে এই ভাইরাসের আকৃতি যেহেতু মুকুটের আকারে ,তাই নামকরণ হয় করোনা। এই ভাইরাস নিদুভাইরাস শ্রেণীর করোনাভাইরদা পরিবারভুক্ত করোনাভাইরিনা উপগোত্রের একটি সংক্রামক ভাইরাস প্রজাতি। এই ভাইরাস জিনোম নিজস্ব আর এন এ নিয়ে গঠিত। প্রথমে মুরগির মধ্যেই ব্রঙ্কাইটিস ভাইরাস হিসেবে পাওয়া যায়। তাই অভিজ্ঞ মহলের অনেকে যখন চিনে সাপ থেকে ভাইরাস মিলেছে বলেন তা অনেকেই মেনে নেন না। ইতিহাস বলছে,১৯১৮থেকে ১৯২০এই সময়ে বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি মানুষ মারা যান। সেই মহামারীকে বলা হয়েছিল স্পেনীয় ফ্লু। কিন্তু এই ইনফ্লুয়েনজা রোগের বিবরণ প্রথম লিপিবদ্ধ করেন গ্রীক বিজ্ঞানী হিপোক্রেটিস ২৪০০বছর আগে। সেই সময় বহু সংখ্যক মুরগি আক্রান্ত হওয়ায় প্রচুর মুরগি মেরে ফেলা হয়। এই ভাইরাস তিন ধরনের। টাইপ এ বি ও সি। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এ টাইপ। যা পাখি,শূকর, ঘোড়া ও সীল মাছকে প্রথম আক্রমণ করে। ২০০৩ সালে আরও কিছু নতুন প্রজাতির ভাইরাসের সন্ধান মেলে। সাম্প্রতিক চিনে উহান প্রদেশে এস এ আর এস সি ও ডি প্রজাতির ভাইরাসের সঙ্গে করোনার ৭০ শতাংশ মিল পাওয়া গেছে। তাই এই ভাইরাসকে করোনা ভাইরাস বলা হচ্ছে।
মানবদেহ এই ভাইরাসকে চিহ্নিত করতে পারেনি বলে দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধক্ষমতা কাজ করছে না। তবে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও বুঝতে হবে অতীতের সার্স কিন্তু ছিল ভয়াবহ। মৃত্যুর হার ছিল বেশি। কিন্তু এই ভাইরাসে দ্রুত আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর সম্ভাবনা কোনো শতাংশে আসে না। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে কিছু নিয়ম মানলে এই ভাইরাসকে প্রতিহত করা সম্ভব হবে। তাছাড়া আমাদের দেশ গ্রীষ্মপ্রধান। সুতরাং তাপমাত্রা বাড়লেই এই ভাইরাস তার ক্ষমতা হারাবে বলে আশা করা যায়।
Be First to Comment