বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, এই লেখাটা তাদের জন্য যারা ভেন্টিলেটরে থাকাটা খুব সহজভাবে নিচ্ছেন অথবা মাস্ক পরে থাকা যাদের কাছে খুবই কষ্টকর বলে মনে হচ্ছে। কোভিড -১৯ এর জন্য ভেন্টিলেশন একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক প্রক্রিয়া। এ পদ্ধতিতে একটি মোটা পাইপ যা আপনার গলার ভেতর দিয়ে নীচে নেমে আসে এবং এটি আপনি বেঁচে উঠা অথবা মারা যাওয়া পর্যন্ত আপনার দেহাভ্যন্তরে থাকে। এ অবস্থায় আপনি কথা বলতে, খেতে বা প্রাকৃতিক কোনও কিছুই করতে পারবেন না, মেশিনটি আপনাকে কোনমতে বাঁচিয়ে রাখে মাত্র।
এই পদ্ধতি এতটাই যন্ত্রণাদায়ক যে, যতদিন এ চিকিৎসা পদ্ধতি বিরাজমান থাকে পাইপ/টিউবের ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট তীব্র ব্যথা দূর করার জন্য চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা রোগীদের উপর নিয়মিত চেতনা ও ব্যথানাশক প্রয়োগ করে। এই চিকিৎসার ২০ দিন পর থেকে, একজন তরুন রোগীও ৪০% পেশীশক্তি হারান এবং মুখ বা ভোকাল কর্ডগুলিতে ট্রমা পান, পাশাপাশি ফুসফুস বা হার্টের জটিলতাও প্রবল হয়। এই কারণেই বৃদ্ধ বা ইতোমধ্যে দুর্বল ব্যক্তিরা এই চিকিৎসা সহ্য করতে পারেনা এবং মারা যায়।
রোগীর পেটে একটি নল ঢুকিয়ে তরল খাবারের যোগান দেয়া হয়। সেটা হতে পারে আপনার নাক বা ত্বকের মাধ্যমে। এছাড়া মলমূত্র অপসারণের জন্য প্রশ্চাৎদেশে স্টিকি ব্যাগ ঝোলানো হয় এবং ইঞ্জেকশন ও তরল ওষুধ পরিচালনার জন্য ভেইনেও এক/একাধিক ক্যানোলা করা হয়।
নার্সদের একটি দল, সিএনএ এবং এমএ প্রতি দুই ঘন্টা পর পর আপনার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করায় সেই সাথে আপনার বডি টেম্পারেচার ৪০ ডিগ্রিতে রাখার জন্য বরফে ভর্তি কার্পেটের উপর শুইয়ে রাখবে। আর এ সব কিছুই ঘটবে যখন কিনা আপনার কোনো আত্মীয়-স্বজন কিংবা প্রিয়জন আপনাকে দেখতে আসারও অনুমতি পাবেনা। আপনাকে সম্পূর্ণ একা একটি ঘরে শুধুমাত্র ঐ চরম কষ্টদায়ক ভেন্টিলেটর মেশিনের সাথে থাকতে হবে। তার চেয়ে কি মাস্ক পরে থাকা অনেক কম কষ্টকর নয়?
চরম যন্ত্রণাদায়ক এই চিকিৎসা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে সামান্য কষ্ট করে মাস্কটা পরে থাকুন।
Be First to Comment