সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: কলকাতা, ৬এপ্রিল ২০২০ করোনা সংকটের জেরে লগ ডাউন চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। জীবনের ছন্দপতন ঘটেছে।মহামারী ক্রমশ অতিমারীতে বদলে গেছে। জরুরি পরিষেবার কাজে যুক্ত মানুষ জন পড়েছেন মহা ফাঁপরে। একদিকে পরিবহন ব্যবস্থা তেমন নেই। অথচ জরুরি পরিষেবায় যুক্ত মানুষদের এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কাজকর্ম করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এমন সংকটে পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ৩৮ হাজার কেবল টিভি অপারেটর সংস্থা। কেননা রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার কেবল টি ভি পরিষেবা চালু রাখার নির্দেশ জারি করেছেন।
কিন্তু গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় না হলে কর্মীদের মাইনা ও এম এস ও দের দেয় টাকা কি ভাবে কেবল ব্যবসায়ীরা দেবেন? গ্রাহকদের টাকা নিজেদের দায়িত্বে দিলে সেই টাকা যে গ্রাহকদের কাছ থেকে পরে আদায় হবে তার গ্যারান্টি কোথায়? রাজ্যের অন্যতম এম এস ও সংস্থা সিটি কেবল এর কর্তা সুরেশ শেঠিয়া জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের গ্রাহকরা যাতে পছন্দের চ্যানেল দেখতে পান তার জন্য অপরেটরদের ক্রেডিট দিচ্ছি। কিন্তু অন্য এম এস ও সংস্থাগুলি সে পথে যায়নি। কেবল অপারেটরদের একটি সংস্থার পক্ষে জানানো হয়েছে অনেক গ্রাহক তাদের আর্থিক ক্ষমতা থাকা সত্বেও এপ্রিল মাসের রিচার্জ করছেন না। ফলে দূরদর্শনের ২৬টি চ্যানেল ছাড়া অন্য চ্যানেল তারা দেখাবেন না। অপারেটরদের দাবি, সরকারি নির্দেশিকায় কোথাও বলা নেই সব চ্যানেল বাধ্যতামূলক ভাবে দেখাতে হবে। অর্থাৎ সরকারি নির্দেশিকার কৌশলী ত্রুটিকে সম্বল করে দু একদিনের মধ্যে পাড়ার কেবল অফিসে টাকা জমা না দিলে পছন্দের চ্যানেল দেখা থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে। পাশাপাশি এক নতুন সমস্যার কথা জানালেন মানিকতলা অঞ্চলের কেবল অপারেটর সুনন্দ পাল। তাঁর বক্তব্য, কেবল পরিষেবা মূলত যন্ত্র নির্ভর। এতদিন ধরে লগ ডাউন থাকার ফলে কখন কোন এলাকায় যান্ত্রিক ত্রুটি হবে না তার নিশ্চয়তা নেই। সেক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেবলকর্মীদের রাস্তায় রাস্তায় জরুরি ভিত্তিতে ঘুরতে হয়।
এই কর্মীদের বেশির ভাগ দূর থেকে চাকরি করতে আসেন। তারা আসতে পারছেন না।গুটিকয়েক কর্মীদের নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেবল ব্যবসায়ীদের পরিষেবা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী কর্মীদের একটি জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবীমার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু সেই তালিকায় কেবল সংস্থার কর্মীরা নেই। অথচ জরুরি পরিষেবার তালিকায় আমাদের রাখা হয়েছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, জরুরি পরিষেবার কর্মী হিসেবে আমাদেরও জরুরি স্বাস্থ্য বীমার যেন ব্যবস্থা নেন মুখ্যমন্ত্রী।
Be First to Comment