সুব্রত ঘোষ: কলকাতা,২৬ মার্চ ২০২০ আজকে করোনা ভাইরাসের আক্রমণে সারা পৃথিবী বিপর্যস্ত। মানবসভ্যতা এখনও হাতড়ে বেড়াচ্ছে প্রতিকারের উপায়। এই মূহুর্তে বিশ্বজুড়ে সর্বাধিক প্রচারিত বিষয়বস্তু হল একে অপরের থেকে সামজিক দূরত্ব বজায় রাখার পদক্ষেপ ‘ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন’। শিক্ষিত ও সমাজ সচেতন মানুষেরা যতটা সম্ভব সরকারি নির্দেশিকা মানার চেষ্টা করবেন, কিন্তু শহর কলকাতার বৃহৎ জনবসতির একাংশ বস্তি অঞ্চলে বসবাস করেন। যদিও বহু বস্তিবাড়ি বহুতল বাড়িতে রূপান্তরিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও যে ব্যাপক সংখ্যক বস্তিবাসী মানুষ যেসব অঞ্চলে বসবাস করেন, তাদের মধ্যে সামাজিক সচেতনতার গুণগত মান উন্নত হলেও তারা নিরুপায়। বেলেঘাটার জনৈক বস্তিবাসী হতাশ কণ্ঠে জানালেন সেই পরিস্থিতির কথা।
প্রত্যেকটি বাড়ির মাঝখানে একটি উঠোনকে কেন্দ্র করে তার চার পাশে ঘিরে দশ বারোটি করে টালির চালের ঘর। প্রত্যেকটি ঘরে পরিবারপিছু শিশু থেকে বয়স্ক সদস্য মিলিয়ে পাঁচ থেকে ছয় জন সদস্যের বাস। এদের ঘরের সাথে সম্পর্ক শুধু খাওয়া আর গাদাগাদি করে শোওয়া। পুরো দিন বসবাস রাস্তায়। সকালে মুখ ধোয়া, স্নান এবং অন্যান্য নিত্যনৈমিত্তিক কাজ রাস্তার কর্পোরেশনের কলে। প্রাতঃকৃত্যাদিও প্রায় পুরুষদের কর্পোরেশনের সাধারণ শৌচালয়ে। কোয়ারেন্টাইন, ঘরে থাকুন এইসব বস্তিবাসীদের কাছে অর্থহীন। আজকের দিনের পরিস্থিতি বুঝতে পারলেও ওঁরা অসহায়। এমতাবস্থায় এই সকল বস্তিবাসীদের ভিতর যদি কোনোক্রমে একজনও আক্রান্ত হন তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। আজ এই সব মানুষদের প্রতি সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং এনাদের সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার অসহায়তা দুইই প্রশ্নের সম্মুখীন ।
Be First to Comment