শুভদ্যুতি দত্ত: কলকাতা, ২০মে ২০২০। কলকাতার খুব কাছ দিয়েই যাবে এই সুপার সাইক্লোন। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ অতি প্রবল সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আমফান মতান্তরে উম-পুন, সুপার সাইক্লোন হয়ে এ রাজ্যের দিকেই এগিয়ে আসছে। ইতিমধ্যেই কমলা সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর।
আলিপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগণা সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এর প্রভাব বেশি মাত্রায়। ১৫৫-১৬৫ কিমি বেগে বইবে প্রবল ঝড় । সেই সঙ্গে হাওড়া, হুগলি ও কলকাতার ওপর দিয়ে ও ১১০-১২০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাবে এবং তা সর্বাধিক ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে রাজ্য সচিবালয় নবান্নে । আজ থেকে রাতভর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন তিনি। মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা, সচিবালয়ে গৌতম সান্যাল সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকেরা উপস্থিত রয়েছেন। আগামী ৪ ঘন্টা রাজ্যবাসীকে তিনি বাড়ির ভিতরে থাকতে পরামর্শ দেন।
উপকূলবর্তী জেলাগুলির দিকেই কড়া নজর রয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রস্তুত রয়েছে। সুপার সাইক্লোন দীঘা থেকে ১০০ কিমির বেশি দূরে অবস্থান করছে।
সাগর থেকে ৯০ কিমি, কলকাতা থেকে ১৮৫ কিমি এবং ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে উম-পুন। বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ও সেটি ২৬০ কিমি দূরে রয়েছে। আজ রাত সাড়ে ৯’টা নাগাদ নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা দিয়ে চলে যাবে।
হাওড়া ব্রিজ, সাইক্লোনের ফলে দেখা যাচ্ছে না। অদৃশ্য হয়ে গেল মনে হয়। কলকাতায় পুলিশ আজ সকালের দিকে দোকানপাট বন্ধ রাখার জন্য আগেই জানিয়ে ছিল। ফলে, রাস্তা ঘাট প্রায় জনমানব শূন্য। কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোলরুম আজ খোলা রয়েছে। ৩৭৯ পাম্পিং স্টেশনও চালু। আজ ও কাল ভারি বৃষ্টি হবে -জানায় আলিপুর আবহাওয়া দফতর। পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘাতে বাড়ছে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস। সমুদ্র প্রবল উত্তাল হবে বলে ঘোষণা করা হয়।
মেরিন ড্রাইভ টপকে জল ঢুকেছে। বাঁধ ভেঙে গ্রামে পৌঁছেছে জল। মাইকে সতর্কতা প্রচার চলছে, মন্দারমণি কোস্টাল থানার ৪ টি গ্রামে জল ঢুকেছে। গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত। রেসকিউ সেন্টারে তাদের রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর সাথে স্যানিটাইজেশন করা হয়েছে।
১১৬-বি নন্দকুমারের কাছে জাতীয় সড়কে ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে তৎপরতা চলছে। সময় নষ্ট না করে রাস্তা সাফাই করতে নেমেছেন বাহিনী। পরস্পরকে সাহায্য করছেন তাঁরা – জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। কাজেই কোনও দেরি নয়। উঃ২৪ পরগণা জেলার বসিরহাটে খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এক বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনায়। দঃ ২৪ পরগণা জেলায় গতরাত থেকে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাস জোর বইছে।
কোটাল থাকায় জল বাড়ছে নদীতে। পুবের জোরালো হাওয়া থাকার ফলে নতুন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সুন্দরবনের বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নদীর বাঁধে ফাটলের খবর পাওয়া গেছে। সুপার সাইক্লোনের তীব্রতা বেশি হলে ক্ষতি বাড়বে। এদিকে, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলাতেও উম-পুন এর দাপটে চলছে প্রকৃতির ভয়াল তান্ডব।
Be First to Comment