জন্মদিনে স্মরণঃ বি প্ল ব কে ত ন চ ক্র ব র্তী
বাবলু ভট্টাচার্য : টেলিভিশন বা চলচ্চিত্রের পর্দায় দেখা গেলেও মূলত মঞ্চের মানুষ ছিলেন বিপ্লবকেতন চক্রবর্তী।
‘চেতনা’ নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু। বাংলা থিয়েটারের ইতিহাসে ‘মারিচ সংবাদ’ নাটকে তাঁর অভিনয় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বাবা হৃষীকেশ চক্রবর্তীর শৌখিন যাত্রার দল ছিল, তাতে তিনি ছিলেন যথাক্রমে নাট্যকার ও নির্দেশক। বিপ্লবকেতন সেই যাত্রাদলে গায়ক- অভিনেতা হিসাবেই আত্মপ্রকাশ করেন।
অরুণ মুখোপাধ্যায়ের আহ্বানে ১৯৭২ সালে চেতনা নাট্যগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠা লগ্নে ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন বিপ্লব বাবু। এরই মধ্যে শিবপুরের অঙ্কুশ নাট্যসংস্থায় তাঁর নির্দেশনায় ‘পদধ্বনি’, ‘টাপুর টুপুর’, ‘বিষ তীর’, ‘উত্তরণ’, ‘ঘরে ফেরা’ প্রভৃতি নাটকগুলি প্রযোজিত হয়েছে।
১৯৭২ থেকে ’৯২ পর্যন্ত ‘চেতনা’ নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। এর পরের বছর চেতনা থেকে বেরিয়ে নিজেই নাট্যদল গড়েন। ‘থিয়েটারওয়ালা’ নামে সে দলেরও একাধিক জনপ্রিয় প্রযোজনা দর্শকদের স্মৃতিতে অমলিন।
চেতনায় থাকাকালীন বিপ্লববাবুকে দেখা গিয়েছে ‘মারীচ সংবাদ’, ‘জগন্নাথ’, ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’, ‘স্পার্টাকাস’-এর মতো একের পর এক নাটকে।
এর পর থিয়েটারওয়ালার প্রযোজনায় ১৯৯৩ থেকে প্রায় ২০০০ সাল পর্যন্ত ‘বাঘুমান্না’, ‘কাচের দেওয়াল’-এর মতো নাটকের মঞ্চাভিনয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন তিনি।
উৎপল দত্তের নাট্য অ্যাকাডেমির প্রথম প্রযোজনা ‘চৈতালী রাতের স্বপ্ন’-তে বিপ্লববাবুর অভিনয় এখনও অনেকের মনে গেঁথে রয়েছে।
নাট্যজগতের পাশাপাশি টেলিভিশনে বেশ কিছু ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এর মধ্যে ‘জন্মভূমি’ বা ‘চুনিপান্না’র মতো সিরিয়ালে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
‘জন্মভূমি’-তে এককড়ির খলচরিত্রে তাঁর অভিনয়ের কথাও অনেকে মনে রেখেছেন। নাটক বা টেলিভিশন ছাড়াও তরুণ মজুমদার, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় বা বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকের ছবিতেও অভিনয় করেছেন বিপ্লবকেতন চক্রবর্তী।
বিপ্লবকেতনের মতোই তাঁর বড় এবং ছোট মেয়ে বিদীপ্তা এবং সুদীপ্তা চক্রবর্তী অভিনেতা।
২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতায় পরলোকগমন করেন শিল্পী।
বিপ্লবকেতন চক্রবর্তী ১৯৪৬ সালের আজকের দিনে (২৬ মার্চ) হাওড়ার শিবপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment