সুজিৎ চট্টোপাধ্যায় : ঈশ্বর পুত্র যিশু। বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে, গৌর বর্ণের, টিকালো নাক, ঘাড় ছাপিয়ে যাওয়া এক ঢাল মাথার চুল। যেন গ্রীক সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তি। কিন্তু ঐতিহাসিকরা বলছেন, যিশুর ঘাড় পর্যন্ত চুল হতেই পারে না। কেননা রোম সাম্রাজ্যের আইন ছিল ৩০দিন অন্তর চুল কাটাতে হবে। পুরুষদের মাথায় চুল রাখা ছিল আইন বিরুদ্ধ। চরম দণ্ডনীয়। জুলিয়াস সিজার, অগাস্টাস, রাজা হেরোদ, রোম সম্রাট বেরিয়াসের মাথার চুল ছিলো ছোট। ইহুদীরাও এই নিয়ম মানতে বাধ্য ছিল।
যে রাতে যীশু গ্রেপ্তার হন, সেদিন তিনি কিদ্রণ খাল পেরিয়ে একটি বাগানবাড়িতে ছিলেন। সৈন্যরা এলে যিশু বলেন, তোমরা কি নাসরীয় যিশুকে খুঁজছো? আমিই সেই। সৈন্যরা প্রথমে বিশ্বাস করেনি। তাদের ধারণা ছিল যিশু হবেন, দিব্য সুন্দর ব্যক্তিত্ববান মানুষ। তখনতো দূরের কথা, আজ পর্যন্ত যিশুর জীবন্ত কোনো ছবি পাওয়া যায়নি। যিশুর প্রথম চার শিষ্য যাঁরা যিশুর বাণী লিপিবদ্ধ করেছেন কেউ যিশুকে চোখে দেখেনি। সময়টা ১০০ খ্রিস্টাব্দ। যিশুর অন্যতম শিষ্য সাধু টমাস বলেছেন, আমাদের প্রভু দেখতে সুন্দর ছিলেননা। যিশুর মৃত্যুর ২০০বছর পর শিল্পীরা মনের মাধুরী মিশিয়ে যিশুর ছবি আঁকতে শুরু করেন। বাইজান্টাইন এর শিল্পীরা মহাবিশ্বের রাজা বানাতে দেবরাজ জিউসের তরুণ বয়সের ছবি বানিয়ে তাকে যিশু নামে আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু বাইবেল পড়ে জানা যায় না যিশু কেমন দেখতে ছিলেন ? বিশেষজ্ঞরা বলেন, যিশু সম্ভবত ছিলেন, কালো, খাটো, এবং তাঁর চুল ছিল ছোট করে ছাঁটা। ব্রাজিলের গ্রাফিক ডিজাইনার এবং ফরেনসিক ফেসিয়াল রিকনস্ট্রাক্টশন বিশেষজ্ঞ সিসারো মরায়েস বি বি সি ব্রাজিলের অনুরোধে যিশুর একটি বৈজ্ঞানিক ইমেজ তৈরি করেন।
তিনি বলেন, যিশু ছিলেন শ্যামবর্ণ। ওই অঞ্চলের মানুষের যা স্বাভাবিক রঙ। চীনের যিশু উপাসকরা তাদের মত পোশাক পরান। ইউরোপে যিশু ফর্সা। ইথিওপিয়ার মানুষ যে যিশুকে উপাসনা করেন, সেই যিশুর গায়ের রং কালো ।
সংস্কৃতে একটা প্রবাদ আছে, জস্মিন দেশে যদাচার……।
Be First to Comment