ইনকাম ট্যাক্স গেজেটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের ক্ষোভ ও হতাশার কথা শুনে গেলেনকেন্দ্রীয়মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর ––——————————————–
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়:কলকাতা,১৭ই জানুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার কলকাতার ইনকাম ট্যাক্স গেজেটেড অ্যাসোসিয়েশনের আমন্ত্রণে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর শুনলেন ক্ষোভ হতাশার কথা । উপলক্ষ্য ৮৫ বছরের ঐতিহ্য পূর্ণ সংগঠনের ৪৫ তম সর্ব ভারতীয় দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। এবারের সম্মেলনের যৌথ উদ্যোক্তা ছিল পশ্চিমবঙ্গ এবং গোয়া।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খোঁজখবর নিয়েই এসেছেন সংগঠনটি বামেদের। মঞ্চ জনৈক রাজর্ষি দাশগুপ্ত, কমরেডের নামে রাখা হয়েছে, সেটাও মন্ত্রীর নজর
এড়ানোর কথা নয়।
মঞ্চে ছিলেন সংগঠনের কর্মকর্তাদের মধ্যে দেবনাথ মুখার্জী , অরবিন্দ ত্রিবেদী, বিশ্বনাথ ঝা,রূপক সরকার, অমিতাভ দে, সায়ন্তন ব্যানার্জি, আশিষ কুমার এবং সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত গুহ।
বক্তারা যা বলেন তার মূল বিষয়টি ছিল ৮৫বছরের সংগঠন সরকারি স্বীকৃত। নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করলেও দেশসেবার ক্ষেত্রে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল। গেজেটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সংখ্যা এগারো হাজার।পাশাপাশি ইনকাম ট্যাক্স এর সব স্তরের কর্মী সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ কে প্রতিনিধিত্ব করে। দেশের আর্থিক অবস্থা আগামীদিনে উন্নত হলেও এই মুহূর্তে অবস্থা নিম্নগামী। এর কারণ বিভাগীয় দপ্তরের দিশাহীন নীতি। আমাদের অনুরোধ নীতি নির্ধারণ কমিটিতে আমাদের সংগঠনের অভিজ্ঞ জনেদের কয়েকজনকে রাখলে ইতিবাচক পরিকল্পনা গ্রহণে সুবিধা হবে। আমরা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে কর আদায় কতটা প্রয়োজন জানি। কিন্তু পরিকল্পনাহীন তার জন্য আমরা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারিনি। আয়কর দফতরে সত্তর হাজার কর্মীর মধ্যে এই মুহূর্তে কাজ করছেন ৪৫ হাজার। বাকি পদ শূন্য পড়ে আছে। নিয়োগ বন্ধ। তার ওপর চাকরি ক্ষেত্রে পদোন্নতি ও হয় শামুক গতিতে। অবসর নিয়েও সমস্যা। দ্রুতগতিতে কাজ করার কথা বলা হয়, অথচ প্রশিক্ষিত কর্মী নেই।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর অস্বস্তিতে পড়লেও তাকে দেখে বোঝার উপায ছিল না ।তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেশের প্রতিরক্ষা সৈনিকদের আশেপাশেই আয়কর কর্মীদের দেশের আর্থিক বিকাশের সৈনিক সম্বোধন করে হাততালি কুড়োলেন। কর্মীদের ক্ষোভ ও হতাশাকে সান্ত্বনার প্রলেপ দিয়ে বললেন, দিল্লিতে ফিরে তিনি সংগঠনের পরামর্শমতো চলার জন্য সংগঠনের মনোনীত প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করবেন ।
এই প্রতিবেদকের প্রশ্ন ছিল মন্ত্রীর কাছে যে সরকার চাইছে, আরও বেশি মানুষ কর দিক কিন্তু মানুষ যদি দেশে সুখী না হয়, তো কর দেবে কি করে ? জাতি সংঘের সমীক্ষা বলছে পৃথিবীর ১৫৬ টি দেশের মধ্যে ভারত ১৪০ তম অসুখী দেশ ।এমনকি বাংলাদেশ ও পাকিস্থানের চেয়েও নিচে । সেকথার পরিষ্কার উত্তর না দিয়ে মোদি সরকারের গুণগান করলেন ।
প্রসঙ্গত মনে পড়ছে বার্ণারড শ এর কথা। তিনি বলেছিলেন, আমার কোনো নাটক জনপ্রিয় হলে আমি মারা পড়বো। বিশাল অঙ্কের কর আমাকে দিতে হবে। কর সম্পর্কে এদেশের মানুষের ভীতি যেন একই কথাই বলে।
অথচ নোট বন্দীর পর সন্দেহজনক একাউন্টের মালিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দেখা গেছে তারা মোট ৪১ হাজার কোটি টাকা কর বকেয়া রেখেছেন। সেই কর আদায়ে সরকারের কি ভূমিকা তার পরিষ্কার জবাব নেই।














Be First to Comment