————জন্মদিনে স্মরণঃ কেনি রজার্স———-
বাবলু ভট্টাচার্য : জীবনের কথাগুলো সহজ করে জানিয়ে দেন কান্ট্রি মিউজিকের গায়করা। কেনি রজার্স তাদেরই একজন। শৈশব থেকেই গানের সঙ্গে তার সখ্যতা। শুরু করেছিলেন ব্যান্ড দলের সঙ্গে। তবে জনপ্রিয়তা বেশি পেয়েছেন এককভাবে গান গেয়ে। মাঝেমধ্যে বিভিন্নজনের সঙ্গে মিশেও গান করেছেন। যেমন আরেক তারকা লিওনেল রিচি— তাঁর লেখা বিখ্যাত গান ‘লেডি’ গেয়ে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন কেনি রজার্স। ৩টি গ্র্যামি বিজয়ী এই সংগীতশিল্পী ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে বিশ্বসংগীতের সবচেয়ে জনপ্রিয় নামগুলোর একটি। তার হাস্কি কণ্ঠে তুলকালাম ঘটিয়ে দিয়েছিল সংগীতাঙ্গনে। দ্য গ্যাম্বলার, কাওয়ারর্ড অব দ্য কান্ট্রি, লুসিলি— গানগুলোর আবেদন যেন চিরন্তন। দশকের পর দশক গানগুলো শুনেছে বিশ্বের মানুষ। আজও ইউটিউবে প্রতিটি গানের নিচে কোটি কোটি ‘ভিউ’ জানিয়ে দেয়, গানগুলো আছে, থাকবে।
কেনি রজার্স একাধারে সংগীতশিল্পী, গীতিকার, অভিনেতা, রেকর্ডের প্রযোজক ও উদ্যোক্তা।লিওনেল রিচির লেখা ‘লেডি’ গেয়ে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন কেনি। তরুণ বয়সে কেনি রজার্সের সেই অসাধারণ ভরাট গলার ‘লেডি’ গানটি শুনে মুগ্ধ হয়ে সে সুরে কণ্ঠ মেলাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। যৌবনে গানের সুরের মোহন মায়ায় ঘর ছেড়েছিলেন বলেই হয়তো পরিণত বয়সে এসে পেছনে রেখে আসা সংসারের মায়া তাঁকে গভীরভাবে ডেকেছিল। ৭৭ বছর বয়সে গান নিয়ে শেষ সফরের পর তিনি ফিরেছিলেন পরিবারের কাছে পাকাপাকিভাবে।
২০১৫ সালে বলেছিলেন, ‘এবার সত্যিই আমি আমার স্ত্রী-সন্তানদের কাছে ফিরতে চাইছি। তারা যে আমার কাছে কত গুরুত্বপূর্ণ, সেটি জানতে অনেক দেরি হয়ে গেল আমার। অথচ কখনোই তাদের সেভাবে কাছে থেকে দেখা হয়নি। এবার অবসর নিয়ে সেই অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে চাই।’ ‘ইউএসএ টুডে’ ও ‘পিপল’ ম্যাগাজিনের জরিপে সর্বকালের সেরা জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন কেনি রজার্স৷ তাঁর দুটো অ্যালবাম ‘দ্য গ্যাম্বলার’ আর ‘কেনি’ ঠাঁই করে নিয়েছে কান্ট্রি মিউজিকের সর্বকালের সেরা ২০০ অ্যালবামের তালিকায়। আর কেনির নিজের সবচেয়ে পছন্দের গান ছিল ‘দ্য গ্যাম্বলার’ অ্যালবামের ‘গ্যাম্বলার’ গানটি৷ গ্যাম্বলার এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে পরবর্তী সময়ে টেলিভিশনের জন্য নির্মিত একটি ছবিতে অভিনয়ও করেন এই সংগীততারকা, নাম, ‘কেনি রজার্স অ্যাজ দ্য গ্যাম্বলার’। অন্যান্য সংগীততারকার মতো কেনির বেশির ভাগ গানেও উঠে এসেছে ভালোবাসার কথা। যেমন ‘শি বিলিভস ইন মি’ গানটিতে তিনি এক পুরুষের আত্মতৃপ্তির কথা জানিয়েছেন। ভালোবাসার মানুষটি তাকে বিশ্বাস করে তাই সেই পুরুষটি ভীষণ খুশি। তবে প্রেমের মুদ্রার অপর পাশটিও আড়ালে যায়নি। ‘লুসিলি’ গানেই তিনি প্রেমে এক নারীর প্রতারণার গল্প শুনিয়েছেন৷
নতুন যারা প্রেমে পড়তে যাচ্ছেন, তাদের জন্য একটা উপদেশমূলক গানও গেয়েছেন কেনি। ১৯৮০ সালে রিলিজ পাওয়া তাঁর সেই গানের কথা ‘ডোন্ট ফল ইন লাভ উইথ এ ড্রিমার’।
২১ মার্চ, ২০২০ কেনি রজার্স ৮১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
কেনি রজার্স ১৯৩৮ সালের আজকের দিনে (২১ আগস্ট) আমেরিকার টেক্সাসে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment