মধুমিতা শাস্ত্রী, ৫ মে, ২০২০ঃ দেশজুড়ে লকডাউনের ফলে আদিবাসী জনগোষ্ঠী অথৈ জলে পড়েছে। দীর্ঘ মেয়াদী লকডাউন চলার ফলে বানিজ্যিক কাজকর্ম বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে না। ফলে তাঁরা অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছেন। তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে বস্ত্র শিল্পের নানা সামগ্রী, উপহার সামগ্রী, ধাতব অলঙ্কার, বন ধন প্রকৃতিক সম্পদ, মাটির তৈরি সামগ্রী, বাঁশ ও বেতের তৈরি সামগ্রী ইত্যাদি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ও স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের পরামর্শ মেনে মুখোশ এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারও তৈরি করছে।
আদিবাসী গোষ্ঠীভুক্ত প্রান্তিক মানুষগুলি যাতে সমস্যায় না পড়েন তার জন্য সরকার এগিয়ে আসছে। এইসব কারিগর এবং সংগ্রহকারীদের সাহায্য করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রক ইতিমধ্যেই ছোটখাট বনজ সম্পদের সহায়কমূল্য বাড়িয়েছে। মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা ট্রাইফেড, ১০ লক্ষ আদিবাসী কারিগরের পরিবারের সঙ্গে যুক্ত।
অধিকাংশ আদিবাসী গোষ্ঠীভুক্ত কারিগর এইসব জিনিস বিক্রির মাধ্যমে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করেন। দেশজুড়ে লকডাউনের ফলে তাঁদের উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে না। তাঁদের এই সঙ্কট থেকে মুক্ত করতে মন্ত্রক সেগুলি কিনে নেওয়ার জন্য ট্রাইফেডকে দায়িত্ব দিয়েছে। ট্রইফেড, দেশজুড়ে এইসব কারিগরদের কাছ থেকে প্রায় ২৩ কোটি টাকার উৎপাদিত সামগ্রী সংগ্রহ করবে। এছাড়া এই সংস্থাটি বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিল্প সংস্থা এবং বড় বড় কর্পোরেট হাউসের কাছে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এইসব সামগ্রীর প্রদর্শন করবে। ফলে উৎপাদিত সামগ্রীগুলি দ্রুত বিক্রির সুযোগ তৈরি হবে।
ট্রাইফেড উৎপাদিত সামগ্রী সংগ্রহ করার সাথে সাথে আদিবাসী পরিবারগুলি যাতে সোসাল ডিস্ট্যান্সিং বজায় রেখে বনজ সম্পদ সংগ্রহ করতে পারে, তাদের সুরক্ষার কথা ভেবে ১০ লক্ষ মাস্ক, সাবান, গ্লাভস এবং ২০ হাজার পিপিই কিট বিতরণ করছে। যাতে এগুলি পরে তাঁরা তাঁদের কাজ করতে পারেন। এইসব কারিগররা যাতে সহজ শর্তে ঋণ পান, ট্রাইফেড বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনাও করেছে।
এই দুর্দিনে ট্রাইফেড প্রান্তিক পরিবারগুলিকে ৫ কেজি আটা, ২ কেজি ডাল, ৩ কেজি চাল, ৫০০ মিলিমিটার তেল, ১০০ গ্রাম হলুদ, ১০০ গ্রাম শুকনোলঙ্কা গুঁড়ো, ১০০ গ্রাম কালো সরষে, ১০০ গ্রাম তরকারির মশলা এবং ২ টি করে সাবান দিয়েছে। ট্রাইফেড, ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে জাতীয় স্তরে ৯ এপ্রিল একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করেছিল।
যেখানে স্বাস্থ্যবিধির ধারণা দেওয়া হয়। ট্রাইফেড ও বন ধন বিকাশ কেন্দ্রের সদস্যদের পণ্যসামগ্রী গ্রহণ করার সময় সম্পূর্ণ সুরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন।
Be First to Comment