মধুমিতা শাস্ত্রী: ১৪জুন, ২০২০। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে জীবনের ইনিংস ডিক্লেয়ার করে সিনেমার ক্রিজ থেকে বিদায় নিলেন ‘এম এস ধোনি’- দ্য আনটোল্ড স্টোরির অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত।
রবিবার তাঁর বান্দ্রার ফ্ল্যাটের ভিতরে তাঁকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তাঁর বাড়ির পরিচারক। নিউজ এজেন্সি পিটিআই জানাচ্ছে, সুশান্তের ম্যানেজার দিশা সালিয়ানও একটি হাই রাইজ বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন কিছুদিন আগে।
‘এম এস ধোনি’- দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ সিনেমায় সুশান্তের বিপরীতে অভিনয় করেন দিশা পাটানি। তিনি ট্যুইটারে সিনেমার দুটি ছবি এবং একটি হৃদয়বিদারক ইমোজি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।
আদতে পাটনার বাসিন্দা ছিলেন সুশান্ত। সেখানে তাঁর বাবা -মা, বোন ও অন্যান্য আত্মীয়রা থাকেন। জানা গিয়েছে, সুশান্ত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
একথা জানতেন তাঁর বাবা, মা,বোনরা। সুশান্তের বাবা ছেলের কাছে মুম্বাইয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কিন্তু লকডাউনে সে প্রস্তুতি বানচাল হয়ে যায়। সুশান্তের দেহ পোস্ট মর্টেমের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তাঁর ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। সুশান্তের পরিচারকই পুলিশকে খবর দেন।
রবিবার সকাল দশটায় একগ্লাস ফলের রস নিয়ে সুশান্ত নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। দুপুর বারোটায়ও যখন তিনি দরজা খোলেন না তখন সন্দেহ হওয়ায় পরিচারক একজন চাবিওয়ালাকে ডেকে দরজা খোলান এবং সুশান্তকে সিলিং থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর ঘর থেকে একাধিক মানসিক অবসাদের ওষুধের প্রেসক্রিপশন ছাড়া সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। এখন পোস্ট মর্টেমের রিপোর্টের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনও পথ নেই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, বিরাট কোহলি, অনুষ্কা শর্মা, রোহিত শর্মা, সঞ্জয় দত্ত, অজয় দেবগন, ফারহান আখতার, শচিন তেণ্ডুলকর, অনিল কুম্বলে প্রমুখ ট্যুইটারে শোক প্রকাশ করেছেন।
অক্ষয়কুমার লিখেছেন, এই খবর আমাকে অত্যন্ত ব্যথিত ও বাকরহিত করে দিয়েছে… ওঁর পরিবারকে ভগবান শোক সহ্য করার ক্ষমতা দিন।
পোস্ট মর্টেমের জন্য আনা হচ্ছে সুশান্তের দেহ।
জি টিভিতে ‘পবিত্র রিস্তা’ ধারাবাহিক দিয়ে সুশান্তের কেরিয়ার শুরু হয়। বড়পর্দায় অভিষেক ‘কাই পো চে’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে। এরপর যশরাজ ফিল্মসের ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’। আমির খানের ‘পিকে’।
দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ব্যোমকেশ’ তাঁকে পরিচিতি দেয়, নিরজ পাণ্ডের ‘এম এস ধোনি’ তাঁকে দেয় প্রতিষ্ঠা। এরপর কেদারনাথ, ছিছোঁরে প্রভৃতি সিনেমা। ছিছোঁরে ছবিতে আত্মহত্যার বিরুদ্ধেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সুশান্ত নিজেই তা মানলেন না।
Be First to Comment